পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

এখানে ভগবান রামের বড় দিদি মা শান্তাকে পুজো করা হয়, জানেন কোথায় এই মন্দির ?

Lord Ram Sister Mata Shanta Temple in Himachal: হিমাচল প্রদেশে রয়েছে ভগবান শ্রী রামের বড় দিদি মা শান্তার মন্দির । ধর্মীয় কাহিনী অনুসারে, রাজা দশরথ এবং রানি কৌশল্যা তাঁদের বড় মেয়ে শান্তাকে বোন বর্ষিণীকে দত্তক দিয়েছিলেন । মা শান্তার বিয়ে হয় ঋষি শৃঙ্গের সঙ্গে ৷ ঋষি শৃঙ্গ রাজা দশরথের পুত্রেষ্ঠী যজ্ঞ করেছিলেন । এরপরই রাজা দশরথ রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্নকে পেয়েছিলেন বলে কথিত রয়েছে ।

Mata Shanta Temple
ভগবান রামের বড় দিদি মা শান্তার মন্দির

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 10, 2024, 10:10 PM IST

কুলু, 10 জানুয়ারি:22 জানুয়ারি রাম জন্মভূমি অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে ৷ এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে দেশজুড়ে উৎসাহ চোখে পড়ার মতো । একইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাম মন্দিরে চলছে ভজন কীর্তন। যেখানে দেশের অনেক মন্দিরে ভগবান শ্রী রামকে তাঁর ভাইদের সঙ্গে পুজো করা হয়। সেখানে একটি স্থানে রামের বড় দিদি মা শান্তাকে পুজো করা হয় ৷

জানেন কোথায় এই মন্দির ?

হিমাচল প্রদেশে কুলু জেলার বানজার মহকুমায় অবস্থিত মা শান্তার এই মন্দিরটি । যেখানে সমস্ত রীতিনীতি মেনে রামের বড় দিদি শান্তা ও তাঁর স্বামী ঋষি শৃঙ্গকে পুজো করা হয় ৷ ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, ঋষি শৃঙ্গ রাজা দশরথের পুত্রেষ্ঠী যজ্ঞ করেছিলেন । এরপরেই রাজা দশরথ চার সন্তান- রাম, লক্ষ্মণ, শত্রুঘ্ন ও ভরতকে লাভা পেয়েছিলেন । তাই কুল্লু জেলার ভক্তদের মধ্যেও প্রভু শ্রী রামের অভিষেক অনুষ্ঠান নিয়ে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে ৷

কে এই শৃঙ্গ ঋষি ?

শৃঙ্গ ঋষি হলেন বানজার উপত্যকার উপাস্য দেবতা এবং দশেরা উৎসবেও প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি । চেহানি সংলগ্ন বাগী নামে একটি গ্রামে দেবতা শৃঙ্গ ঋষির মন্দির রয়েছে ৷ এখানে মা শান্তার প্রস্তর মূর্তিও স্থাপিত । দেবতা শৃঙ্গ ঋষির রথ যখন এলাকায় প্রদক্ষিণ করে তখন মা শান্তাও তাঁর সঙ্গে রূপার লাঠি আকারে আসেন এবং তাঁর ভক্তদের সুখ শান্তির আশীর্বাদ দেন । শৃঙ্গ ঋষির মন্দিরে ভগবান রামের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত উৎসব অত্যন্ত আড়ম্বর সহকারে পালিত হয় এবং শৃঙ্গ ঋষিও ভগবান শ্রী রামের গুরু হওয়ার সৌভাগ্য পেয়েছেন ।

ভগবান শ্রীরামের বড় দিদি মা শান্তা

ধর্মীয় কাহিনী অনুসারে, একবার রানি কৌশল্যার বোন বর্ষিণী এবং তাঁর স্বামী রাজা রোমপদ অযোধ্যায় আসেন । রাজা রোমপদ অঙ্গদেশের রাজা ছিলেন । রাজা রোমপদ ও রানি বর্ষিণীর কোনও সন্তান ছিল না । বর্ষিণী এই দুঃখের কথা কৌশল্যা ও রাজা দশরথকে জানিয়েছিলেন । তখন কৌশল্যা তাঁর বোনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রথম সন্তানকে তিনি বর্ষিণীকে দত্তক দেবেন । রাজা দশরথ এবং রানি কৌশল্যার প্রথম কন্যা সন্তান হয় ৷ সেই সন্তান হলেন শান্তা ৷ বোনকে দেওয়া কথা অনুযায়ী মেয়ে শান্তাকে বর্ষিণী এবং রাজা রোমপদকে দত্তক দিয়েছিলেন কৌশল্যা । এরপর রাজা রোমপদ ও বর্ষিণী শান্তাকে বড় করে তোলেন ।

হিমাচলে মা শান্তার মন্দির

শৃঙ্গ ঋষির জন্য রামকে পেয়েছিলেন দশরথ

কথিত রয়েছে, একবার এক ব্রাহ্মণ রোমপদের দরবারে এসে নিজের জন্য রাজার কাছে সাহায্য চাইলেন ৷ কিন্তু রাজা রোমপদ তাঁর মেয়ে শান্তার সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত ছিলেন এবং তিনি ব্রাহ্মণের কথা শোনেননি । সেই ব্রাহ্মণ এতে খুবই হতাশ হয়ে পড়েন এবং সেই রাজ্য ছেড়ে চলে যান । ব্রাহ্মণকে অবহেলার কারণে দেবরাজ ইন্দ্র অঙ্গদেশ রাজ্যে ক্ষুব্ধ হন এবং রোমপদের রাজ্যে বৃষ্টি হয় না । যার জেরে গোটা রাজ্যে খরা দেখা দেয় ।

ভগবান রামের বড় দিদি মা শান্তা

এমতাবস্থায় রাজা রোমপদ ঋষি শৃঙ্গের কাছে পৌঁছন ৷ এরপর ঋষি শৃঙ্গের সাহায্যে দেবরাজ ইন্দ্রকে খুশি করেন রাজা রোমপদ । তারপরে গোটা রাজ্যে বৃষ্টি হয় এবং ক্ষেত ও শস্যাগারগুলি ফসলে ভরে যায় । রাজা রোমপদ দেবতা শৃঙ্গ ঋষির প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং তিনি তাঁর কন্যা শান্তাকে ঋষি শৃঙ্গের সঙ্গে বিবাহ দেন । পরে ঋষি শৃঙ্গ রাজা দশরথের জন্য পুত্রেষ্ঠী যজ্ঞের আয়োজন করেন । তারপরেই রাজা দশরথের চার পুত্র হয় ।

শৃঙ্গ ঋষির মন্দিরে রামের অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন

শৃঙ্গ ঋষি মন্দিরের পুরোহিত জিতেন্দ্র কুমার শর্মা জানান, এখানকার দেবতা শৃঙ্গ ঋষির মন্দিরটি কয়েক দশকের পুরনো এবং এই মন্দিরটি বাগী গ্রামে অবস্থিত । দেবতা শৃঙ্গ ঋষি বানজার উপত্যকার উপাস্য দেবতা এবং মা শান্তাও এখানে প্রতিদিন পুজো করা হয় । রাম মন্দিরের অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে শৃঙ্গ ঋষির মন্দিরে বিশেষ ভজন কীর্তনের আয়োজন করা হবে এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে এই অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন করা হবে ।

স্বামী ঋষি শৃঙ্গের সঙ্গে পূজিত হন মা শান্তা

দেবী দেবতা কারদার সংঘের সাধারণ সম্পাদক টিসি মহন্ত বলেন, "এখানকার মানুষ ভগবান শ্রী রামের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ৷ দেবতা শৃঙ্গ ঋষি ভগবান শ্রী রামের গুরু উপাধি পেয়েছেন । মাতা শান্তা সর্বদা দেবতা শৃঙ্গ ঋষির সঙ্গে থাকেন এবং লাঠি আকারে মাতা শান্তা মানুষকে তাঁর আশীর্বাদ দেন ।"

হিমাচল প্রদেশের বিখ্যাত সাহিত্যিক সুরত ঠাকুর বলেছেন, "ভারতে ভগবান শৃঙ্গ ঋষির খুব কম মন্দির রয়েছে । যেখানে তাঁকে স্ত্রী শান্তা-সহ পুজো করা হয় । মা শান্তা ছিলেন ভগবান শ্রী রামের বড় বোন এবং বিয়ের পর তিনি তপস্যা করতে ঋষি শৃঙ্গের সঙ্গে হিমালয়ে এসেছিলেন ৷ তাই মহকুমা বানজারে তাঁর মন্দিরও রয়েছে । যেখানে হাজার হাজার মানুষ তাঁকে পুজো করে ।"

আরও পড়ুন:

  1. রামোজি ফিল্ম সিটিতে এল ভগবান শ্রীরামের পবিত্র পদচিহ্ন
  2. রাম মন্দিরের অলি-গলিতে চমক, উদ্বোধনের আগে সেই ভিডিয়োই প্রকাশ্যে
  3. অযোধ্যা ঘুরে দেখবেন না রামলালা, কেন ট্রাস্ট বাতিল করল শোভাযাত্রা ?

ABOUT THE AUTHOR

...view details