দেরাদুন, 6 নভেম্বর: কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে সোনার প্রলেপ দেওয়ার ঘটনায় 125 কোটি টাকা কেলেঙ্কারির যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনায় এ বার বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্তের দাবি করল মন্দির কমিটি ৷ এই দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করেছে তারা । এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছিল ।
একবার তদন্ত শুরু হলে কেদারনাথ মন্দির কমিটির চেয়ারম্যান অজেন্দ্র অজয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, যিনি এতদিন এই বিষয়ে নীরবতা বজায় রেখে চলেছেন । ধামির কাছে স্মারকলিপিতে মন্দির কমিটির সদস্যরা লিখেছেন যে, দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগগুলি শুধু কেদারনাথ এবং বদ্রিনাথ মন্দিরকেই কলঙ্কিত করছে না, বরং রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ করছে ।
ধামিকে লেখা চিঠিতে মন্দির কমিটি বলেছে, "এমন পরিস্থিতিতে, এই পুরো বিষয়টির একটি সিট তদন্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷" তারা জানায়, মানুষ এ বিষয়ে নীরব থাকলেও মন্দির কমিটির সদস্য, পুরোহিত ও মন্দিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছে বারবার প্রশ্ন উঠে আসছে । এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বিষয়টি তদন্ত করা উচিত বলে মত মন্দির কমিটির ৷
এ দিকে, বর্তমানে কেদারনাথ ধামে থাকা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি তাঁর সফরকালে এই বিষয়টি উত্থাপন করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে । বিষয়টি আবার ওঠার আগে মন্দির কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে বিষয়টি পরিষ্কার করতে চান ।
আরও পড়ুন:প্রসাদের খিচুড়ি বিলোলেন পুণ্যার্থীদের মধ্যে, মাতলেন গল্পেও; দেখুন রাহুলের কেদারনাথ সফরের মুহূর্ত
প্রতিক্রিয়ার জন্য মন্দির কমিটির চেয়ারম্যান অজেন্দ্র অজয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা করা যায়নি । কমিটির সদস্য আশুতোষ ডিমরি বলেন, তাঁরা সত্য প্রকাশ করতে চান । তাঁর কথায়, "আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি এবং বিষয়টির গভীরে যাওয়ার জন্য একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে সিট গঠন করার জন্য তাঁকে একটি চিঠি লিখেছি । আমরা আশা করি যে, রাজ্য সরকার খুব শীঘ্রই বিষয়টির তদন্ত পরিচালনা করবে ৷"
2022 সালের অক্টোবরে কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহের দেওয়ালে সোনার প্রলেপ দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয় । মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ী মন্দির কমিটিকে 23 কেজি সোনা দান করেছেন বলে জানা গিয়েছিল । এর পরে, কেদারনাথ মন্দিরের দেওয়াল এবং ছাদ 550টি সোনার পাত দিয়ে প্রলেপ দেওয়া হয় । পুরো কাজটি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দুই অফিসারের তত্ত্বাবধানে করা হয়েছিল ।
কাজ শেষ হওয়ার কিছু সময় পরে, চারধাম মহাপঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি সন্তোষ ত্রিবেদী অভিযোগ করেন যে, দান করা 23.78 কেজি সোনা চুরি হয়েছে এবং এটি প্রায় 1.25 বিলিয়ন টাকার কেলেঙ্কারি । ত্রিবেদী এই কেলেঙ্কারির তদন্ত দাবি করেছেন এবং কংগ্রেসের গলাতেও শোনা গিয়েছে সেই একই সুর ৷
ক্রমবর্ধমান বিতর্কের মধ্যে, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক সচিব হরিচন্দ্র সেমওয়াল বিষয়টির তদন্তের জন্য গাড়ওয়াল কমিশনারের নেতৃত্বে একটি উচ্চ-স্তরের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ।