নয়াদিল্লি, 13 মে: কর্ণাটকে কংগ্রেসের ব্যাপক জয়ের পরই বিরোধী জোট নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন দলের নেতৃত্ব ৷ চলতি বছরেই আসন্ন কয়েকটি বিধানসভা নির্বাচনে এবং আগামী 24-এর লোকসভা ভোটে যে কর্ণাটকের ফল প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে একরকম নিশ্চিত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ পাশাপাশি এই মুহূর্তে বিশ্বাসযোগ্য বিজেপি বিরোধী ফ্রন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রেও কংগ্রেস তাদের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করবে বলেও মনে করছে নেতারা।
এআইসিসি সম্পাদক ভামশি চাঁদ রেড্ডি বলেন, “কর্ণাটকের জনগণ ইঙ্গিত দিয়েছে যে হাওয়া কোন দিকে বইছে। কর্ণাটকের ফলাফল কেবল মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেই প্রভাব ফেলবে তাই নয়, বিজেপির একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প হওয়ার যে দাবি কংগ্রেস করে, সেই দাবিকেই আরও শক্তিশালী করল ৷" শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেন, “কংগ্রেস 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য অন্যান্য দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে একটি সর্বভারতীয় বিজেপি-বিরোধী ফ্রন্ট তৈরির চেষ্টা করছে।" কর্ণাটকের ফল তৃণমূল এবং আপ-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলির কাছে একটি কঠোর বার্তা পাঠাবে এবং 2024 সালে বৃহত্তর রাজনৈতিক লড়াইয়ের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে তারা সারিবদ্ধ লাইনে আসতে বাধ্য হবে বলেও মনে করে কংগ্রেস নেতা ৷
প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতার দাবি, সংসদে সাম্প্রতিক বাজেট অধিবেশন চলাকালীন হিন্ডেনবার্গ এবং অন্যান্য ইস্যুতে বিজেপি এবং কেন্দ্রকে ঘিরে ধরে মোট 19টি রাজনৈতিক দল ৷ আর এক্ষেত্রে সেই সবকটি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ৷ কর্ণাটকের ফল বৃহত্তর বিরোধী ঐক্য গঠনের দিকে পার্টির প্রচেষ্টাকে আরও উৎসাহ দেবে বলেও মনে করেন তিনি। রেড্ডি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি 2014 সাল থেকে কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের জন্য চেষ্টা করছিল। কিন্তু এখন কর্ণাটকের মানুষ বিজেপি-মুক্ত দক্ষিণ ভারত করে দিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং কেরালা-সহ দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্যে 129টি লোকসভা আসন রয়েছে।" তাই কর্ণাটকে পরাজিত হওয়ায় বিজেপির সরাসরি ক্ষতি হল বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “কংগ্রেস বনাম বিজেপির এই প্রতিযোগিতা জনগণের আলোচনায় জায়গা পাবে। আমাদের সাংসদ ভাঙিয়ে নিয়ে ছত্তিশগড় এবং রাজস্থান ধরে রাখে ৷ কংগ্রেসের দেশব্যাপী উপস্থিতি জনসাধারণের মনে যেমন জায়গা করে নেবে তেমনই 2024-এর জাতীয় নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ৷" রেড্ডি আরও জানিয়েছেন, কর্ণাটকে কংগ্রেস যে জন-সমর্থক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রাজ্যের ভোটাররা বিশ্বাস করেছিল ৷ এর ভিত্তিতেই আগামী লোকসভা ভোটের এজেন্ডা নির্ধারণের ক্ষেত্রে অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরি হবে। এআইসিসি নেতা স্বীকার করে নিয়েছেন, মানুষ যখন ফের কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছে, তখন দল নতুন করে নিজের ঘর গোছাতে এবং নেতাদের সংগঠিত করতে তৎপর হবে ৷