নয়াদিল্লি, 27 অগস্ট: আজ দেশের 49তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ৷ গতকালই অবসর নিয়েছেন বিচারপতি এনভি রামানা ৷ তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নাম অনুমোদন করেন ৷ পরে তাতে সিলমোহর দেন রাষ্ট্রপতি ৷ শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর উপস্থিতিতে এই শপথবাক্য পাঠ (oath of Office) অনুষ্ঠান হয় (Justice Uday Umesh Lalit takes oath as Chief Justice of India at Rashtrapati Bhavan) ৷
বিচারপতি ইউ ইউ ললিত 3 মাসেরও কম সময়, 74 দিন প্রধান বিচারপতির পদে থাকবেন ৷ 1957 সালের 9 নভেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন ৷ তাই এ বছর 8 নভেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করবেন ৷ কারণ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির অবসরগ্রহণের (retirement age of judges) বয়সসীমা 65 ৷ সূত্রের খবর, তিনটি প্রধান বিষয়ে তিনি বিশেষ নজর দেবেন- মামলার তালিকা প্রস্তুত (listing of cases), সুপ্রিম কোর্টে বিচার্য জরুরি মামলা (mentioning of urgent matters in the Supreme Court), সুপ্রিম কোর্টে অন্ততপক্ষে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ (at least one Constitution bench) থাকবে সারা বছর ধরে ৷
সম্প্রতি সকাল 9টায় আদালত চালু নিয়ে খবরের শিরোনামে আসেন ৷ বিচারপতি ললিতের নেতৃত্বে গঠিত একটি বেঞ্চ মামলা শুনানির প্রয়োজনে সকাল সাড় ন'টার মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে পৌঁছে যান ৷ যা নির্ধারিত সময়ের থেকে এক ঘণ্টা আগে ৷ এই প্রসঙ্গে তিনি পর্যবেক্ষণে বলেন, "আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে সকাল 9টায় আমাদের কাজ শুরু করা উচিত ৷ আমি সব সময় বলেছি, যদি আমাদের বাচ্চারা সকাল 7টায় স্কুলে যেতে পারে, তাহলে আমরা 9টায় আসতে পারব না কেন ?"
আরও পড়ুন: রামানার অবসর, ফিরে দেখা বর্ণময় কর্মজীবন
22 অগস্ট তিনি আম্রপালি বাড়ি কেনার মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন 3 সেপ্টেম্বর, শনিবার সকাল 10.30 মিনিট থেকে দুপুর 1টা পর্যন্ত ৷ শনিবার সুপ্রিম কোর্টে কোনও কাজ হয় না ৷ তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিচারের মধ্যে পূর্বতন ত্রিবাঙ্কুরের রাজপরিবার (royal family of Travancore) সংক্রান্ত ৷ দেশের অন্যতম ধনী কেরালার শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে (Padmanabhaswamy Temple) প্রশাসনিক ক্ষমতার উত্তরসূরি হবে মন্দিরের সেবায়েত ৷ এই রায় মন্দির নিয়ন্ত্রণে রাজপরিবারের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছিল ৷
স্কিন-টু-স্কিন
2021-এর 15 জানুয়ারি ৷ বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা 50 বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে পকসো মামলায় (POCSO Act) বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন ৷ একটি পাঁচ বছরের মেয়ের হাত ধরা এবং তাঁর সঙ্গেই আরও কয়েকটি অশালীন আচরণ করে এই ব্যক্তি ৷ এগুলি পকসো আইনে যৌন নিগ্রহের আওতায় পড়ে না, জানিয়েছিলেন বিচারপতি ৷ আদালত জানিয়েছিল, ত্বকের ছোঁয়া না লাগলে, সেটা 'যৌন নিগ্রহ' নয় ৷ বাচ্চাদের যৌন হেনস্থা সম্পর্কিত দু'টি মামলায় 'ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সংস্পর্শ' নিয়ে বিতর্কিত রায় দিয়েছিল বোম্বে হাইকোর্ট ৷
ওই বছর এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয় ৷ একুশের 21 নভেম্বর বিচারপতি ললিতের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ জানায়,"যৌন নিগ্রহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক যৌন ইচ্ছা, ত্বকের সঙ্গে ত্বকের ছোঁয়া (skin-to-skin contact) নয় ৷" সেই রায়কে খারিজ করে পকসো আইনে যুগান্তকারী রায় দেয় শীর্ষ আদালত ৷ তাতে শুধুমাত্র 'ত্বকের সঙ্গে ত্বকের ছোঁয়া' নয়, অভিযুক্তের যৌন ইচ্ছাকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ললিত ৷
আরও পড়ুন: তাৎক্ষণিক তিন তালাক আইনের সাংবিধানিক বৈধতা যাচাই করতে চায় সুপ্রিম কোর্ট