শ্রীনগর, 23 জুলাই : বিতর্কিত জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হানা রুখতে গিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে ৷ গত দু'মাসে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জঙ্গি আক্রমণ রোধে বেশ কিছু অপারেশন (anti-militancy operations) চালানো হয়েছে ৷ এতে 1 জুন থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে 51 জন সাধারণ মানুষের ৷ পুলিশের এক উচ্চাধিকারিক অবশ্য ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যে, নিরাপত্তা বাহিনীর এই অপারেশন শুধুমাত্র ‘প্রয়োজন অনুযায়ী’ করা হচ্ছে ৷
কোভিড-19 শুরুর সময় থেকে জম্মু কাশ্মীরে জঙ্গিহানার ঘটনা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে ৷ কিন্তু জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা আবারও বেড়ে চলেছে বলে তিনি জানান ৷ পুলিশ আধিকারিক বলেন, "2021-এর প্রথম 5 মাসে এই অঞ্চলে 40টি এরকম ঘটনা ঘটেছে ৷ 1 জুন থেকে 22 জুলাই, 52 দিনে জম্মু-কাশ্মীরে 34টি জঙ্গি হামলা হয়েছে ৷ তাই বিশাল সংখ্যায় নয়, প্রয়োজন অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনী অপারেশন চালাচ্ছে ৷’’
আরও পড়ুন : সোপোরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে খতম 2 জঙ্গি
এপ্রিল আর মে মাসে দরকারে আর জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন চালানো হয়েছিল ৷ আগে থেকে ঠিক করা ছিল না ৷ জঙ্গি আর তাদের আত্মীয়দের উপর কড়া নজরদারি (surveillance) রাখা হচ্ছিল ৷ পরিস্থিতি অনুযায়ী সামরিক বাহিনী (army) আর সিআরপিএফ-এর (CRPF) সঙ্গে একযোগে অপারেশন পরিচালনা করাা হয়, সাফাই দিলেন পুলিশ আধিকারিক ৷
এ বছর 61টি জঙ্গি-মোকাবিলার ঘটনায় 127 জন মানুষ মারা গিয়েছেন ৷ এর মধ্যে 12 জন নাগরিক, 19 জন নিরাপত্তা বাহিনীর লোক আর 96 জন জঙ্গি ৷ জুলাইতে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ৷ 22 জুলাই অবধি 24 জন জঙ্গি আর 3 জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী মারা গিয়েছেন ৷ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর ক্ষেত্রে জুন খুব খারাপ সময় ৷ 6 জন নাগরিক, 5 জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী, 13 জন জঙ্গি মারা গিয়েছে ৷
এটা আশ্চর্যের যে, 61টি ঘটনার মধ্যে 32টি ঘটনা 1 মে-র পরে হয়েছে ৷ জম্মু-কাশ্মীরে কার্ফু জারি হওয়ার ঠিক পরের দিন ৷ গত বছর, মে মাসে 15 জন, জুনে 48 জন আর জুলাইতে 20 জন জঙ্গি মারা গিয়েছে ৷ ওই এক সময়ে 8 জন নাগরিক আর 17 জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী মারা গিয়েছিলেন, জুনে সেই সংখ্যা ছিল 53 ৷ 2020-র রক্তাক্ত মাস ছিল সেটা ৷
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে গত বছর 321 জনের মধ্যে 232 জন জঙ্গি, 56 জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী আর 33 জন নাগরিক মারা গিয়েছে ৷