মুম্বই : “2021 সনিকওয়াল সাইবার থ্রেট রিপোর্ট’ অনুযায়ী 2020 সালের ডিসেম্বরে ভারত 25 মিলিয়নেরও বেশি ম্যালওয়ার হামলার সাক্ষী থেকেছে ।
প্যানডেমিকের জেরে যে ‘ওয়র্ক—ফ্রম—হোম’ বাস্তবের মুখোমুখি আমরা এসে দাঁড়িয়েছি, তার ফলে সংগঠনগুলির অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে । কারণ তারা আরও সাইবার অপরাধীদের করা আরও বৃহৎ ক্ষমতাশালী আক্রমণের শিকার হয়েছে । আর এই আক্রমণে ধেয়ে এসেছে আরও শক্তিশালী ক্লাউড ভিত্তিক সরঞ্জাম, ক্লাউড স্টোরেজ ৷ কাজের পরিবেশের বদল যেমন ঘটেছে, তেমনই পরিবর্তন এসেছে হুমকি প্রদানকারী এবং নির্দিষ্ট ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত অপরাধীদের । রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে ।
এক বিবৃতিতে সনিকওয়ালের প্রেসিডেন্ট তথা সিইও বিল কনার জানিয়েছেন, “2020 সালটি সাইবার অপরাধীদের কাছে সেই কাঙ্খিত ঝড়ের হদিশ দিয়েছে । পাশাপাশি সাইবার অপরাধের অস্ত্র সংক্রান্ত প্রতিযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপিং পয়েন্টেরও খোঁজ দিয়েছে ।”
রিপোর্ট অনুযায়ী “এই প্যানডেমিক সাইবার হামলার পরিসরকে নতুন দিগন্ত দিয়েছে দূরচালিত প্রক্রিয়া, অতি সক্রিয় রাজনৈতিক পরিবেশ, ক্রিপ্টোকারেন্সির রেকর্ড দামবৃদ্ধি এবং ক্লাউড স্টোরেজ ও টুলকে হাতিয়ার বানিয়ে হুমকি দেওয়ার চল প্রভৃতি ।” রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে করোনার হুমকি প্রদানকারীদের হাতে আরও শক্তিশালী, আগ্রাসী এবং অসংখ্য আক্রমণ করার সুযোগ তুলে দেওয়া হয়েছে । এদের দৌলতেই ভয় এবং অনিশ্চয়তার আবহ তৈরি হয়েছে । এরা বাড়ি থেকে বা দূর থেকে পরিচালিত হয়ে কর্পোরেট নেটওয়ার্কগুলিকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে ।
আরও পড়ুন :উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দার সঙ্গে সাইবার প্রতারণা, ধৃত বাংলার যুবক
কনার বলেছেন, “সাইবার হামলাকারী, তাদের আক্রমণের পদ্ধতি এবং টার্গেট বেছে নেওয়ার পদ্ধতির ক্ষেত্রে কোনও কোড অফ কনডাক্ট বা আচরণবিধি কাজ করে না।” রিপোর্টের ফলাফল অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী ক্ষেত্রে র্যানসামওয়ারে অন্তত 62 শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে এবং কেবল উত্তর আমেরিকাতেই 158 শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সাইবার হামলাকারীরা সহজে আরও বেশি উপার্জন করতে আরও বেশি উন্নত কলাকৌশল এবং আরও বেশি বিপজ্জনক প্রজাতি বেছে নিচ্ছে যেমন রিউক ( Ryuk)।
এই রিউক (Ryuk) কে প্রথম চিহ্নিত করা হয়েছিল 2018 সালের আগস্ট মাসে । কিন্তু 2020 সালের জানুয়ারির আগে পর্যন্ত এটি উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ কিংবা এশিয়ার সীমা পেরোয়নি । পরের মাসে রিউক (Ryuk) ক্রমশ তালিকার উপরে উঠে আসতে থাকে এবং পরবর্তীকালে এটি শীর্ষপদে থাকা সারবার র্যানসামওয়্যারকে পদচু্যত করে দেয় ।
আরও পড়ুন :সাইবার হ্যাকিং : অ্যাকাউন্ট থেকে 30 লাখ টাকা গায়েব, কীভাবে ?
বিশ্বে এখনও পর্যন্ত রিউক (Ryuk) এর হামলার 109.9 মিলিয়ন ঘটনা চিহ্নিত হয়েছে । রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই এটি প্রতি 8 সেকেন্ডের ব্যবধানে কিছু না কিছু ঘটিয়েছে । সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কর্মচারীদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ প্রথায় সরিয়ে নিয়ে আসার সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র থাকতে পারে অফিস ফাইল এবং পিডিএফ সমুহের ম্যালওয়্যার সাজ-সরঞ্জাম হিসাবে আরও বেশি মাত্রায় ব্যবহার হওয়ার মধ্যে । আর এর মাধ্যমগুলি ছিল ফিশিং ইউআরএল, এমবেডেড ক্ষতিকর ফাইল এবং অন্যান্য বিপজ্জনক সরঞ্জাম ।
সনিকওয়ালের নতুন তথ্য আনুযায়ী, 2020 সালে ম্যালওয়্যার অফিস ফাইলসমূহের সংখ্যায় 67 শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে ।ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম বৃহৎ ‘মাইনিং অপারেশন’ অনলাইন পরিষেবার আওতাভুক্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভাবা হত, সাইবার আক্রমণ অতটা জোরালো হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে । কিন্তু পরে ‘ক্রিপ্টোজ্যাকিং’—এর পুনরার্বিভাব ঘটে ব্যাঙ্কগুলিতে ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া এবং গুপ্ত আয় পরিশোধের আবেদন সামনে আসার পর থেকে ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, 2020 সালের মোট ক্রিপ্টোজ্যাকিং রেকর্ড গড়েছে 81.9 মিলিয়ন হিট করে । যা গত বছরের 64.1 মিলিয়নের তুলনায় 28 শতাংশ বেশি ।