আবার সেই গোড়া থেকেই শুরু । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলানোর সিদ্ধান্ত এবং অন্যান্য ইস্যুর মধ্যে বিচ্ছিন্ন তামিল ইলম গঠনের দাবিই বুঝিয়ে দেয়, নিজেদের গোড়াপত্তনের সময়কার নিয়ম–কানুনের দিকেই আরও একবার ক্ষমতাসীন এআইএডিএমকে মরিয়াভাবে ফিরে এল । যদিও উদ্বোধনী বক্তব্যে দুই জ্ঞাতিশত্রুই বুঝিয়ে দিয়েছে, কীভাবে তাদের গোড়ার দিকের আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল এবং কীভাবে তাকে পেরিয়ার এবং আন্না উজ্জীবিত করেছিলেন তামিল জাতীয়তাবাদের সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রেখে । যদিও এবার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ এবং দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সামান্য হলেও বদল আসা খুব স্পষ্ট ।
দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী এবং এআইএডিএমকের যুগ্ম সহায়ক, ইদাপ্পদি কে পালানিস্বামীকে দেখা গিয়েছিল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলতে, যে বিজেপির সঙ্গে তাদের জোট শুধুমাত্র ভোটের দিকে তাকিয়েই ৷ মতাদর্শগত কোনও সংযোগ এক্ষেত্রে হয়নি । সেই দিকে তাকিয়েই ওই বিতর্কিত আইনের সংশোধনী সংক্রান্ত বিষয়টিকে মেনে নিয়ে এআইএডিএমকে, যারা আইনের হয়েই সংসদে ভোট দিয়েছিল, জানিয়েছে, যে তারা কেন্দ্রের উপর প্রভাব খাটাবে যাতে সিএএ প্রত্যাহার করা হয় । এই যে কেন্দ্রের উপর প্রভাব বিস্তার করে সিএএ রদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া, এতেই বিজেপি নিশ্চিতভাবে চটবে । আবার অন্যদিকে ডিএমকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তালিকায় যে যে বিদেশি রাষ্ট্রের কথা আছে, সেটিকে সংশোধন করা হবে, যাতে তার মধ্যে সেই সমস্ত শ্রীলঙ্কান তামিলরাও পড়েন, যারা বর্তমানে এখানকার শরণার্থী শিবিরগুলিতে রয়েছেন ।
শ্রীলঙ্কার তামিল
এআইএডিএমকের ইস্তাহারে জোর দেওয়া হয়েছে রাজীব গান্ধি খুনের ঘটনার দোষী সাব্যস্তদের মুক্তির কারণ, বিচ্ছিন্ন তামিল ইলমের প্রতিষ্ঠা এবং শ্রীলঙ্কায় আন্তর্জাতিক অপরাধী আইন তথা ইন্টারন্যাশনাল ইমপার্শিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্ট মেকানিজমের মাধ্যমে তামিল গণহত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচারের উপর । আবার ডিএমকে তাদের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তামিল এলাকাগুলির প্রাদেশিক সরকারের হাতে পূর্ণ ক্ষমতা তুলে দেওয়ার । বর্তমানে এই দুই দলই ভারতীয় নাগরিকত্ব এবং যারা ভারতে থাকতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ।
দেশের মার্কসবাদীদের একটি অংশ অবশ্য ইতিমধে্যই শ্রীলঙ্কার তামিলদের এই ইস্যুটিকে ‘নির্বাচন–বর্হিভূত’ ইস্যু বলে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে । কিন্তু তবুও এই ইস্যুটি সবসময়ই দ্রাবিড়ীয় অংশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে । কাজেই এবারের ভোটেও যে এই নিয়ে নানা দলের নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি থাকবে, তা সহজেই অনুমেয় ।