নয়াদিল্লি, 5 জানুয়ারি : কী কারণে ভেঙে পড়েছিল সিডিএস বিপিন রাওয়াতের (General Bipin Rawat) চপার ? ইতিমধ্যেই তার তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা ৷ তদন্তের কাজে সংশ্লিষ্ট তিনটি পরিষেবারই সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে ৷ বুধবার সেই রিপোর্ট (IAF Report on CDS Chopper Crash) কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের (Rajnath Singh) হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ উল্লেখ্য, গত 8 ডিসেম্বরের ওই দুর্ঘটনাতেই প্রাণ যায় সিডিএস বিপিন রাওয়াত এবং তাঁর স্ত্রী-সহ মোট 14 জন সওয়ারির ৷ তারপরই দুর্ঘটনাগ্রস্ত এমআই-17 হেলিকপ্টারটি নিয়ে শুরু হয় কাটাছেঁড়া ৷ দুর্ঘটনার কারণ জানতে শুরু হয় তদন্ত ৷
আরও পড়ুন :General Bipin Rawat Dies in Helicopter Crash : কুন্নুরে কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রয়াত সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত
সংশ্লিষ্ট সূত্রের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, ‘‘সিডিএস-এর চপার দুর্ঘটনা নিয়ে 45 মিনিটেরও বেশি সময়ের একটি বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে ৷ কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে সবটাই জানানো হয়েছে ৷ তদন্ত রিপোর্টে বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন ৷ আগামী দিনে যখনই কোনও ভিআইপি-কে চপারে নিয়ে যাওয়া হবে ৷ তখন সেগুলি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷’’ সূত্রের খবর, এদিন দুর্ঘটনার রিপোর্ট পেশ করার সময় ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমার এবং সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মানবেন্দ্র সিং উপস্থিত ছিলেন ৷
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত 8 ডিসেম্বর দুর্ঘটনার ঠিক আগে জঙ্গলের ঢাকা পাহাড়ি এলাকার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল এমআই-17 হেলিকপ্টারটি ৷ একটি রেললাইন ধরে সামনের দিকে এগোচ্ছিলেন পাইলট ৷ সেই সময় হঠাৎই ঘন মেঘের আস্তরণের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাঁদের চপার ৷ সেই সময় জমি থেকে চপারটির উচ্চতা খুব বেশি ছিল না ৷ পাইলট-সহ অন্য ক্রু-সদস্যরা সকলেই এই এলাকার সঙ্গে ওয়াকিবহাল ছিলেন ৷ তাঁদের মনে হয়, মেঘের চাদর ভেদ করে কোথাও হেলিকপ্টার ‘ল্যান্ড’ না করে আরও উপরে উঠে যাওয়াই নিরাপদ হবে ৷ আর তাতেই ঘটে বিপত্তি ৷ উপরে ওঠার সময়ে পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে চপারটি ৷
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, সেদিন যাঁরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত হেলিকপ্টারটি চালানোর দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা সকলেই ‘মাস্টার গ্রিন’ স্তরের ৷ তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তাঁরা নিজেরাই এই সমস্য়া মোকাবিলা করতে পারবেন ৷ তাই গ্রাউন্ড স্টেশেনর কাছে তাঁরা কোনও সাহায্য চাননি ৷ চালকদলের তরফে গ্রাউন্ড স্টেশনে আপদকালীন কোনও বার্তাও পাঠানো হয়নি ৷
আরও পড়ুন :Bipin Rawat Video Message : বিজয় পরবের ভিডিয়ো বার্তায় জীবন্ত হয়ে উঠলেন প্রয়াত রাওয়াত
প্রসঙ্গত, তিন বাহিনীতে বিমান ও হেলিকপ্টার ওড়াতে যাঁরা সবথেকে বেশি দক্ষ, সেইসব পাইলটদেরই ‘মাস্টার গ্রিন’ স্তরভুক্ত করা হয় ৷ এঁরা কম দৃশ্যমানতাতেও যেকোনও জায়গায় বিমান ও হেলিকপ্টার ওঠা-নামা করাতে পারদর্শী ৷ এক্ষেত্রে তদন্তকারীদের প্রস্তাব, আগামী দিনে এই ধরনের উড়ানের ক্ষেত্রে মাস্টার গ্রিন-সহ অন্য়ান্য় স্তরের পাইলটদেরও মিলিয়ে মিশিয়ে রাখা হোক ৷ যাতে প্রয়োজনে তাঁরা গ্রাউন্ড স্টেশনে জরুরি বার্তা পাঠাতে পারেন এবং দরকারি সাহায্য চাইতে পারেন ৷ এছাড়াও, আগামী দিনে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আরও বেশ কিছু প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে ৷ তার সবটুকুই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে ৷