পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিরোধী দলনেতা, অন্য রাজ্যে নয় কেন ; প্রশ্ন গুজরাতের নেতার - যশ

ঘূর্ণিঝড় যশের পর্যালোচনা বৈঠকে ডাক পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ অথচ গুজরাতে ঘূর্ণিঝড় তখতের পর প্রশাসনিক বৈঠকে ব্রাত্য়ই থেকেছেন সে রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা ৷ যা নিয়ে টুইটারে কটাক্ষ করলেন গুজরাতের কংগ্রেস নেতা ভরত সোলাঙ্কি ৷ প্রায় একই সুরে কেন্দ্রকে বিঁধলেন বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবও ৷

Gujrat Congress leader Bharat Solanki criticizes center's stand on opposition leader regarding Cyclone review meetings
তখতের পর্যালোচনা বৈঠকে কেন ব্রাত্য বিরোধী দলনেতা, প্রশ্ন গুজরাতের কংগ্রেস নেতার

By

Published : May 29, 2021, 1:31 PM IST

Updated : May 29, 2021, 5:35 PM IST

কলকাতা, 29 মে :ঘূর্ণিঝড় যশের পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু করেছে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার ৷ প্রশ্ন তোলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় মমতার দায়বদ্ধতা নিয়েও ৷ আর এবার ঠিক এই ইস্য়ুকেই হাতিয়ার করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুললেন বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব এবং গুজরাতের কংগ্রেস নেতা ভরত সোলাঙ্কি ৷

ভরতের প্রশ্ন, যশের পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করা হলেও ঘূর্ণিঝড় তখতের পর ক্ষতিগ্রস্ত গুজরাতের বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক পরেশ ধনানিকে কেন পর্যালোচনা বৈঠকে ডাকা হল না ? সে রাজ্য়ের শাসন ক্ষমতায় বিজেপি থাকাতেই কি এমন ‘অন্য’ আচরণ ? অন্যদিকে তেজস্বীর খোঁচা, যেসব রাজ্যে বিরোধী দলনেতার আসনে বিজেপির কোনও প্রতিনিধি নেই, সেখানেও কি এই ধরনের বৈঠকে বিরোধী দলনেতাদের ডাকা হবে ?

আরও পড়ুন :"প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই আচরণ দুঃখজনক", বৈঠকে মমতার অনুপস্থিতিতে টুইট রাজনাথের

গত বুধবার ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় যশ ৷ সেই ঝাপটায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাও ৷ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গেও পর্যালোচনা বৈঠকের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সেই একই বৈঠকে ডাকা হয় রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এবং কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে ৷ শুক্রবার কলাইকুণ্ডায় আয়োজিত এই বৈঠকে বাকিরা যোগ দিলেও অনুপস্থিত ছিলেন মমতা ৷ বস্তুত, তিনি তখন ব্য়স্ত ছিলেন যশের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে ৷ পরে রাজ্য়ের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা ৷ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব ৷

মমতার এই আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ বিজেপি তথা কেন্দ্রের সরকার ৷ কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, সকলেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আচরণের সমালোচনা করেছেন ৷ সমালোচকদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও ৷ গেরুয়াশিবিরের দাবি, মমতার এই আচরণ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী ৷

আরও পড়ুন :সংঘাতপূর্ণ আচরণ গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর, মমতাকে বিঁধলেন রাজ্যপাল

এই পরিস্থিতিতে কার্যত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর পাশে দাঁড়াল কংগ্রেস ও আরজেডি ৷ আসলে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি ছিল, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকাতেই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এড়িয়েছেন মমতা ৷ যা কিনা রাজ্য়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে তাঁর কাছ থেকে কাম্য নয় বলেই মনে করছে বিজেপি তথা কেন্দ্র ৷ এই অবস্থায় মোক্ষম প্রশ্ন তুলেছেন গুজরাতের কংগ্রেস নেতা ভরত সোলাঙ্কি ৷

শুক্রবার রাতে টুইটারে এ নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন ভরত ৷ তাতে তাঁর খোঁচা, যশের পর প্রধানমন্ত্রী পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন এবং সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয়েছে, এটা জেনে তাঁর খুবই ভালো লেগেছে ৷ কিন্তু ক’দিন আগেই ঘূর্ণিঝড় তখতের প্রভাবে নাজেহাল হতে হয়েছে গুজরাতকে ৷ তারপর সেই দুর্যোগের প্রভাব নিয়েও প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে ৷ অথচ সেই বৈঠকে গুজরাতের বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক পরেশ ধনানিকে ডাকা হয়নি ৷ ভরতের প্রশ্ন, যেহেতু গুজরাত বিজেপি শাসিত রাজ্য এবং সেখানে কংগ্রেস বিরোধী আসনে রয়েছে, সেই কারণেই কি এমন উলট পুরাণ ?

প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে বিহারের বিরোধী দলনেতা তথা আরজেডি বিধায়ক তেজস্বী যাদবের গলাতেও ৷ টুইটারে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করেছেন তিনিও ৷ তেজস্বীর প্রশ্ন, এই ধরনের পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয়েছে, সেটা খুবই ভালো ৷ কিন্তু যেসব রাজ্যে বিরোধীর আসনে বিজেপি নেই, সেখানেও কি একই নীতি অবলম্বন করা হবে ?

ভরত ও তেজস্বীর তোলা প্রশ্নের জবাব এখনও আসেনি বিজেপির তরফে ৷ তবে তাঁদের এই খোঁচা মোদি তথা কেন্দ্র বিরোধিতায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জমি আরও পোক্ত করবে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ৷ জাতীয় স্তরে মোদির প্রতিপক্ষ হিসাবে মমতার ভাবমূর্তিও যে ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে, এই ঘটনা তারও প্রমাণ বলে মনে করছেন তাঁরা ৷ এদিকে, এই ঘটনার পরই রাজ্য়ের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে বদলির নির্দেশ পাঠিয়েছে কেন্দ্র ৷ যাকে কেন্দ্রের প্রতিহিংসা পরায়ণতা বলেই ব্যাখ্যা করছে রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সব মিলিয়ে ভোট ও যশ পরবর্তী বাংলায় আবারও প্রবল কেন্দ্র-রাজ্য দড়ি টানাটানি ৷ যাতে নতুন মাত্রা যোগ করল ভরত ও তেজস্বীর টুইট ৷

Last Updated : May 29, 2021, 5:35 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details