চরলা (ছত্তিশগড়), 3 জুলাই: যেখানে চাষের জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে টাকার অভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে বেশ কিছু কৃষকদের ৷ সেখানে নিজের জমিতে কীটনাশক স্প্রে করার জন্য হেলিকপ্টার কিনতে চলেছেন এক চাষি ৷ ঘটনাটি ছত্তিশগড়ের ৷ সেখানকার এক কৃষক হেলিকপ্টার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । তাও আবার সাত কোটি টাকা ব্যয়ে ৷ ওই কৃষকের নাম রাজারাম ত্রিপাঠি ৷ তাঁর বাড়ি তেলেঙ্গানা থেকে 300 কিলোমিটার দূরে কোন্ডাগাঁও জেলায় ৷ সেখানে 1000 একর খামার জমি রয়েছে তাঁর ৷ সেই জমির দেখভাল ও কীটনাশক স্প্রে করার জন্য হেলিকপ্টার কিনতে চলেছেন তিনি ৷
সম্প্রতি জমিতে কীটনাশক স্প্রে করার জন্য ড্রোনের ব্যবহার বেড়েছে । কিছু কৃষক নিজেরাই এগুলো কিনছেন এবং তা দিয়ে জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছেন ৷ কিন্তু রাজারাম নতুন পন্থা অবলম্বন করতে চলেছেন ৷ যেহেতু তাঁর জমির পরিমাণ অনেক বেশি তাই তিনি ড্রোন নয়, একেবারে কপ্টারে করে কীটনাশক স্প্রে করবেন ৷ হল্যান্ডের রবিনসন কোম্পানির আর-44 মডেলের চার আসনের হেলিকপ্টারটি ইতিমধ্যে বুক করেছেন তিনি । এটিকে কীটনাশক স্প্রে এবং অন্যান্য কৃষিকাজের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ খুন শীঘ্র সেটি এসে পৌঁছবে রাজারাম ত্রিপাঠির হাতে ৷
- ইউরোপের কৃষকদের থেকে অনুপ্রাণিত রাজারাম
জানা গিয়েছে, মূলত ইউরোপের দেশগুলিতে হেলিকপ্টারে করে জমিতে সার স্প্রে করার চল রয়েছে ৷ ইংল্যান্ড এবং জার্মানিতে এই ব্যবস্থা দেখা যায় ৷ রাজারাম ইংল্যান্ড এবং জার্মানিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন ৷ সেই সময় তিনি সেখানে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে সার স্প্রে করতে দেখেন ৷ সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, এইভাবে সার স্প্রে করে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে ৷ একসঙ্গে অনেকটা জমিতে সার স্প্রে করা যায় ৷ এরপরেই দেশে ফিরে হেলিকপ্টার কেনার সিদ্ধান্ত নেন রাজারাম ত্রিপাঠি । তিনি জানান, পরিবারের সদস্যরাই যাতে কপ্টার চালাতে পারে তাই তাঁর ছেলে এবং ছোট ভাইকে উজ্জয়নের এভিয়েশন একাডেমিতে পাইলট প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে ৷
আরও পড়ুন:কৃষিকাজের সুবির্ধাথে ড্রোনের ব্যবহার, আট মিনিটে এক একর জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ
- ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কৃষক
যেখান থেকে কোন্ডাগাঁও জেলা আলাদা হয়েছে, সেই বস্তারের একটি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রাজারাম ৷ তিনি ব্যাংকে চাকরি করতেন ৷ 1998 সালে সেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি এবং কৃষিকাজ শুরু করেন । বর্তমানে বস্তার এবং কোন্ডাগাঁও জেলায় বেশিরভাগ সাদা চিনাবাদাম এবং গোল মরিচ চাষ করা হচ্ছে ৷ সেখানে একটি ভেষজ সংস্থা চালান রাজারাম । 400টি আদিবাসী পরিবারের সহায়তায় তিনি 1000 একর জমিতে চাষ করছেন । এ পর্যন্ত চারবার জাতীয় পর্যায়ে সেরা কৃষকের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি । তাঁর কোম্পানির মাধ্যমে রাজারাম প্রতি বছর 25 কোটি টাকার কালো মরিচ ইউরোপ ও আমেরিকায় রফতানি করেন ।