নয়াদিল্লি, 2 ডিসেম্বর:মেশিন যেখানে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে কাজে এসেছে মেহনতি মানুষের দু'টি হাত ৷ সেই হাত দিয়েই ইঁদুরের গর্তের ধাঁচে খনন বা ব়্যাট-হোল মাইনিং করে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলের ভিতরে প্রবেশ করে উদ্ধারকারী দল ৷ 26 ঘন্টা ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে মঙ্গলবার সন্ধেয় একে একে সফলভাবে বের করে আনা হয় সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে পড়া 41 জন শ্রমিককে ৷ আজ শনিবার ৷ সফল উদ্ধারকার্যের পর পেরিয়ে গিয়েছে কয়েকটা দিন ৷ তবে এখনও 17 দিনে ধরে টানেলে আটকে থাকা শ্রমিক এবং উদ্ধারকর্মীদের লড়াই ভুলতে নারাজ দেশবাসী ৷ আর সবচেয়ে বেশি উদ্ধার অভিযানে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ব়্যাট-হোল মাইনিং কর্মীরা ৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত ৷
ব়্যাট-হোল মাইনিং দলের সদস্য মুন্না কুরেশি ৷ তিনি প্রথম ধ্বংসাবশেষের শেষ স্তরটি ধাক্কা দিয়ে সরিয়েছিলেন এবং অন্য পাশে থাকা আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম দেখতে পেয়েছিলেন ৷ মুন্না বলেন, "আমি শেষ পাথরটি সরানোর পরে আটকে পড়া শ্রমিকদের দেখতে পাই ৷ গাল বেয়ে ওদের চোখের জল গড়িয়ে পড়ছিল । টানেল থেকে বের করে আনার পর শ্রমিকরা আমাকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ জানায়।"
মুন্নার কথায়, "আমি আমার সঙ্গী ওয়াকিল খানের কাছ থেকে একটি ফোন পাই এবং তিনি আমাকে এই উদ্ধার অভিযানে তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে বলেন । আমি যখন তাঁর কাছ থেকে 41 জন আটকা পড়া শ্রমিকের খবর পাই তাদের বের করে আনার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম । তাঁদের উদ্ধার করা ছাড়া আমার মাথায় তখন আর কিছু ছিল না । আমরা শুধু আটকে পড়া শ্রমিকদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বের করে আনার জন্য উদ্বিগ্ন ছিলাম । আমরা বলেছিলাম যে, পুরো পাহাড় খনন করতে হলেও, আমরা আমাদের ভাইদের সেখান থেকে বের করে আনব ।"
তিনি জানান, ঘটনাস্থলে তাঁরা পৌঁছে দেখেন, ধ্বংসাবশেষের মধ্যে একটি মেশিন আটকে রয়েছে । তাঁরা মেশিনটি বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন, যাতে তাঁরা কাজ শুরু করতে পারেন । কিন্তু তিন দিন লেগে যায় সেই কাজ সম্পন্ন করতে । মেশিনটি বের হওয়ার পর পরিস্থিতি মূল্যায়ণ করে মুন্না আশ্বস্ত করেন যে আটকে পড়া শ্রমিকরা আগামী 24-36 ঘণ্টার মধ্যে বের হয়ে আসবেন । মুন্না বলেন, "আমি টানেলে প্রবেশের আগে একথাই বলেছিলাম ।"