নয়াদিল্লি, 8 মে: কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধির কর্ণাটক 'সার্বভৌমত্ব' মন্তব্য নিয়ে সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতিকে নোটিশ পাঠাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন ৷ জাতীয় কংগ্রেসের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করার পাশাপাশি ইউপিএ চেয়ারপার্সনকে এই ঘটনার জন্য মূলত দায়ী করে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতিকে স্পষ্টীকরণ করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন ৷ সেইসঙ্গে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে এই বক্তব্য সংশোধন করতে হবে বলেও দেশের নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়ে জানিয়েছে।
'কর্ণাটক 'সার্বভৌম', নির্বাচনী প্রচারে সোনিয়ার এই মন্তব্যের জন্য কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বিজেপি ৷ এরপরই সোনিয়া গান্ধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদনও করেছিল পদ্ম শিবির ৷ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করার দাবিও করে দল। আর তারপরই কমিশন নোটিশ জারি করেছে বলে খবর ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল এই বিষয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ডেপুটেশনও জমা দেয়। বিজেপির তরফে জানানো হয়, "কর্ণাটক ভারতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য ৷ ভারতীয় ইউনিয়নের অন্যতম একটি রাজ্যের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যে কোনও আহ্বান বিচ্ছিন্নতাবাদের আহ্বানের সমান ৷" সেইসঙ্গে এই মন্তব্য অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং এর ক্ষতিকর পরিণতি হতে পারে বলেও অভিয়োগ করে বিজেপি।
বিজেপি সাংসদ অনিল বালুনি, ওম পাঠক ছাড়াও প্রতিনিধি দলের অংশ ছিলেন দলের নেতা তরুণ চুগ ৷ কর্ণাটক নিয়ে কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধির বক্তব্যের পাশাপাশি কংগ্রেসের টুইটার হ্যান্ডেলের একটি অনুলিপিও কমিশনে জমা দেয় বিজেপি। কংগ্রেসের তরফে টুইটে লেখা হয়েছিল, "সোনিয়া গান্ধি সাড়ে ছয় কোটি কন্নড়বাসীদের কাছে বার্তা দিতে চাইছেন যে, কংগ্রেস কাউকে কর্ণাটকের খ্যাতি, সার্বভৌমত্ব বা অখণ্ডতার ক্ষেত্রে কোনও বাঁধা সৃষ্টি করতে দেবে না।" রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনসভা থেকে কংগ্রেসের উপর তীব্র আক্রমণ করেন ৷ সেই সঙ্গে, কংগ্রেস আদতে ভারত থেকে কর্ণাটককে 'বিচ্ছিন্ন' করার জন্য প্রকাশ্যে দাবি করছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন মোদি। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, 'টুকরে-টুকরে গ্যাং'-এর রোগ কংগ্রেসের শীর্ষস্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে।
এর পালটা অবশ্য প্রতিআক্রমণ করে, কর্ণাটকের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সুরজেওয়ালা দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির হতাশা এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে ৷ তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর এই মিথ্যাচারকে আমরা প্রত্যাখ্যান করি ৷ তিনি কর্ণাটকের 'স্বাভিমান' (অহংকার)-কে অবমাননা করছেন ৷" বিজেপি বেঙ্গালুরুতে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছেও অভিযোগ দায়ের করে ৷ সেই সঙ্গে, একটি রাজ্যের ক্ষেত্রে 'সার্বভৌম' শব্দটি ব্যবহার করার জন্য সোনিয়া গান্ধির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ জারি করার জন্যও অনুরোধ করে। সাংবিধানিক সংজ্ঞা অনুযায়ী একটি যখন একটি দেশ স্বাধীন হয়, তখন সেই দেশটিকে সার্বভৌম দেশ বলা হয়। ভারত একটি সার্বভৌম দেশ এবং কর্ণাটক রাজ্য এই দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাতির সার্বভৌমত্বের সঙ্গে কন্নড়বাসীদের অখণ্ডতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অমূলক।
আরও পড়ুন: কর্ণাটকের নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন মমতার