অমরাবতী, 3 সেপ্টেম্বর: সরকারি হাসপাতালে মোবাইল ফোনের টর্চ লাইটে রোগীদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা ৷ অন্ধ্রপ্রদেশের পার্বতীপুরম মান্যম জেলার এমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে অনলাইনে ৷ এই ভিডিয়ো রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের করুণ ছবি তুলে ধরেছে বলে তোপ দেগেছে বিরোধীরা ৷
শনিবার একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আটজনকে কুরুপমের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় । সেই সময় সেখানে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনের টর্চলাইটে আহতদের চিকিৎসা করতে হয় ডাক্তারদের ৷ অন্যান্য সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতোই এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও বিকল্প বিদ্যুতের অভাব রয়েছে ৷ এই ঘটনার পর তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু বিদ্যুতের ঘাটতির জন্য জগন মোহন রেড্ডির নেতৃত্বাধীন সরকারকে একহাত নেন ৷
নাইডু লিখেছেন, "কুরুপমের দৃশ্যগুলি দেখে আতঙ্কিত ৷ যেখানে ডাক্তাররা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় ফ্ল্যাশলাইটের নীচে রোগীর চিকিত্সা করতে বাধ্য হচ্ছে । বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে অন্ধ্রপ্রদেশে পরিবার, কৃষি এবং শিল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে মানুষকে ৷"
তিনি আরও বলেন, "মানুষ ক্রমাগত বিদ্যুতের ঘাটতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছে । জগন স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন । এমন একটি রাজ্যের সাক্ষী হওয়া খুবই দুঃখজনক যেই রাজ্য এক সময় উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ ভোগ করত ৷ আর এখন তা অন্ধকারে নিমজ্জিত এবং ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে ৷"
এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় । ওই জেলার সালার শহরের এরিয়া হাসপাতালেও একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে । শনিবার বজ্রপাতের পর এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে হাসপাতালটিতে অন্ধকার নেমে আসে ৷ এর ফলে রোগীদের মারাত্মক অসুবিধার মুখে পড়তে হয় ৷ মেডিক্যাল কর্মীদের তাঁদের মোবাইল ফোনের টর্চলাইটে রোগীদের জরুরি চিকিৎসা দিতে হয়েছে ।
আরও পড়ুন:134800 টাকার চটি, এক লাখি পেন ! স্বল্প সময়ে কীভাবে এত ধনী জগন ? প্রশ্ন টিডিপির
রাজ্যের বেশ কয়েকটি অংশে গত কয়েকদিন ধরেই যখন তখন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে ৷ এ জন্য দীর্ঘ শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন কর্মকর্তারা। দু'দিন আগে একটি পর্যালোচনা সভায় কর্মকর্তারা মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডিকে জানিয়েছিলেন যে, শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে গত বছরের তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা 18 শতাংশ বেড়েছে ।
এই গ্রীষ্মে রাজ্যে বিদ্যুত সংকট দেখা দিয়েছে । চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিশাল ব্যবধানের কারণে গার্হস্থ্য থেকে শুরু করে কৃষি ও শিল্প, প্রতিটি খাতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে । বিলম্বিত বর্ষা এবং জুলাই-অগস্টে দীর্ঘ শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে ৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন যে, সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখার জন্য প্রতি ইউনিট 7.52 টাকা বেশি দামে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করতে অর্থ ব্যয় করছে । মার্চ থেকে অগস্টের মধ্যে 2,935 কোটি টাকা খরচ করে প্রতিদিন 44.25 মিলিয়ন ইউনিট কেনা হয়েছে । তিনি বলেছিলেন যে, রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ সংগ্রহ করতে মার্চ মাসে 501 কোটি টাকা, এপ্রিলে 493 কোটি টাকা, মে মাসে 430 কোটি টাকা, জুনে 346 কোটি টাকা, জুলাই মাসে 198 কোটি টাকা এবং অগস্টে 966 কোটি টাকার খরচ করেছে। (সংবাদসংস্থা আইএএনএস)