নয়াদিল্লি, 20 সেপ্টেম্বর:নতুন সভাপতি পেতে চলেছে কংগ্রেস । গত লোকসভা নির্বাচনের পরাজয়ের পর থেকে অস্থায়ী সভাপতির নেতৃত্বে কংগ্রেস পরিচালিত হচ্ছে । কিন্ত এখন মোটের উপর নিশ্চিত নতুন সভাপতি আসতে চলেছেন। তাঁর অভিভাবকত্বেই 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে লড়বে শতাব্দী প্রাচীন দলটি । সেই পদে কে বসতে চলেছেন তা নিয়ে রয়েছে একাধিক চমক ।
শোনা যাচ্ছে রীতিমতো ভোটের লড়াইয়ে ঠিক হবে নতুন সভাপতির নাম । রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের সঙ্গে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হতে পারেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুর । শুধু তাই নয় আরও দরকারি খবর এই যে নির্বাচনে লড়ার ব্যাপারে নাকি শশীকে সম্মতি দিয়েছেন সোনিয়া গান্ধি । গত 20 বছর ধরে কংগ্রেসের ব্যাটন সোনিয়ার হাতে রয়েছে । এখন তিনি কার্যনির্বাহী সভাপতি । এর আগে পূর্ণ সময়ের সভাপতি হিসেবে ছিলেন দীর্ঘদিন । 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের বছর দু'য়েক আগে ছেলে রাহুলের হাতে দলের ভার ছেড়ে দেন । তবে নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে পদ ছেড়েছেন রাহুল । সাংসদ হিসেবেই দলের কাজ করছেন । তবে তাঁর নেতৃত্বেই 'ভারত জোড়ো যাত্রা' করছে কংগ্রেস । কিন্ত এর আগে একাধিকবার রাহুল জানিয়েছেন দলের রাশ নতুন করে হাতে নেওয়ার অভিপ্রায় নেই তাঁর । যদিও কংগ্রেসের রাহুল ব্রিগেড তাঁকেই সভাপতি হিসেবে চায় । এরকমই জটিল পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘদিন বাদে ভোট হবে কংগ্রেসের মসনদের জন্য ।
আরও পড়ুন:করোনা অতিমারীর পর 24 ঘণ্টায় যাত্রী চলাচলে রেকর্ড মুম্বই বিমানবন্দরে
প্রধানমন্ত্রী থেকে বিজেপির মণ্ডলের নেতা সকলেই কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গান্ধি পরিবারকে বেছে নেন । তাঁরা বলেন, কংগ্রেস মানেই গান্ধি । বিভিন্ন সভা থেকে বিজেপির কোনও কোনও নেতা এও বলেছেন কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল হলে পাঁচ বছরের জন্য সভাপতি পদে এমন কাউকে বসান যাঁর পদবী গান্ধি নয় । এবার হয়ত হতে চলেছে সেরকমটাই । শশী থারুর এবং অশোক গেহলতের মধ্যে মিল খুব বেশি নেই । দু'জনেই কংগ্রেসের বড় নেতা এবং দু'জনেই আলাদা আলাদা করে গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠ - এই ধরনের সাধারণ কয়েকটি মিলের চেয়ে অমিলের সংখ্যাই বেশি । আর এই মিল এবং অমিলের মধ্যে খুঁজলেই পাওয়া যেতে পারে সবচেয়ে জরুরি প্রশ্নটির উত্তর । সভাপতি হিসেবে তাঁদের মধ্যে কে কতটা সফল হতে পারবেন, সেটারও আন্দাজ মিলতে পারে এই মিল এবং অমিলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সমীকরণের মধ্যে ।
আরও পড়ুন: গুজরাটের স্ট্যাচু অফ ইউনিটির থেকেও লম্বা রামের মূর্তি পাবে অযোধ্যা
লুটনিয়ান্স দিল্লিতে কান পাতালে শশী থারুরকে নিয়ে বেশ চমকে দেওয়ার মতো কয়েকটি গল্প শুনতে পাওয়া যায় । তার একটির ঘটনাস্থল নিউ ইর্য়কের একটি বিলাসবহুল হোটেল । কয়েকটি কাজে সে সময় সেখানে ছিলেন শশী । শোনা যায় তৎকালীন বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার এক সদস্য শশীর সঙ্গে দেখা করেন । তাঁকে ওই হেভিওয়েট মন্ত্রী নাকি বলেছিলেন, "তোমার পদবী গান্ধি নয় । অতএব কংগ্রেসে তোমার তেমন কোনও সম্ভবনা নেই ।" কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন শশী । রাষ্ট্রসংঘে দীর্ঘদিন কাজ করার পর কংগ্রেসে যোগ দেন । সাংসদ হয়ে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন । তবে মন্ত্রী থাকা এবং না থাকার গোটা পর্বটা জুড়ে বিতর্ক ছিল তাঁর নিত্য সঙ্গী । কংগ্রেস ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও বিতর্ক থারুর-সঙ্গ ত্যাগ করেনি । মন্ত্রী থাকাকালীন আইপিএলের দলের মালিকানা বা তৃতীয় স্ত্রী সুনন্দা পুস্করের মৃ্ত্যু- বারবার বিতর্ক বয়েছেন থারুর । বিরোধী আসনে বসে হিন্দু পাকিস্তান মন্তব্যের জন্য বিজেপির আক্রমণের মুখে পড়েছেন সেই কবে থেকে । জবাবও দিয়েছেন নিজের মতো করে ।