পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

Subrata Roy Demise: মেধাবী হয়েও কেন সরকারি চাকরিতে অনীহা ছিল সুব্রত রায়ের ? - সুব্রত রায়

Sahara Group Founder Subrata Roy: মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন ৷ মেধাবী হয়েও সুব্রত রায় সরকারি চাকরিতে আগ্রহ দেখাননি ৷ কিন্তু কেন ?

Sahara Group Founder Subrata Roy
সুব্রত রায়

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 15, 2023, 12:16 PM IST

Updated : Nov 15, 2023, 12:45 PM IST

গোরক্ষপুর, 15 নভেম্বর: মঙ্গলবার রাতে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাহারা গ্রুপের কর্ণধার সুব্রত রায় ৷ তিনি বাঙালি হলেও তাঁর জন্ম বিহারের আরারিয়া জেলায় ৷ এরপর কলকাতা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন তিনি ৷ তবে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে এই শিল্পপতির ৷ গোরক্ষপুরের সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছিলেন তিনি ৷ তবে পড়াশোনায় মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কখনই সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ দেখাননি । কারণ তিনি চাকরি করতে না, চাকরিদাতা হতে চেয়েছিলেন ৷ তিনি বলতেন, "আমি চাকরি করব না, চাকরিদাতা হব ।"

কেন এ কথা বলতেন সাহারা ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ? এ বিষয়ে তাঁর বন্ধু এবং প্রাক্তন বিধায়ক অনুগ্রহ নারায়ণ ওরফে খোকা সিং বলেছেন, "সুব্রত এত প্রাণবন্ত ছিলেন যে তাঁর সঙ্গে থেকে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করবে । সুব্রত রায়ও তাই চেয়েছিলেন । চিটফান্ড দিয়ে অনেক কোম্পানি তৈরি করে তিনি পূর্বাচল-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং তাদের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন । এটি রেলওয়ের পরে দেশের বৃহত্তম কর্মসংস্থান প্রদানকারী সংস্থায় পরিণত হয়েছে । এটা সারা দেশ জানে । চিটফান্ড ব্যবসার অভিযোগে জেরবার হলেও তিনি দেশেই থেকেছেন এবং দাঁড়িয়ে পরিস্থতির মোকাবিলা করেছেন ।"

কর্মচারীদের সঙ্গে সাহারা গ্রুপের কর্ণধার

গোরক্ষপুর হল সুব্রত রায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মস্থল ৷ যেখান থেকে তিনি চিটফান্ড ব্যবসা শুরু করেছিলেন । তাও একটা চেয়ার-টেবিল নিয়ে । ইউনাইটেড টকিজের পাশেই ছিল সেই জায়গা ৷ যেখানে তিনি একটি ছোট দোকান দিয়ে এটি শুরু করেছিলেন । আজও সাহারার এই জায়গায় মাঠ রয়েছে যেখানে এখনও ব্যবসা করা হয় । খোকা সিং জানান, সাহারা গ্রুপের কর্ণধারকে শুধুমাত্র একজন ব্যবসায়ী এবং কর্মসংস্থান প্রদানকারী হিসাবে দেখা উচিত নয় । তাঁর কাজের পরিধি ছিল অনেক বিস্তৃত । 1998 সালে পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা হয় ৷ সেসময় তিনি হেলিকপ্টার করে দুর্গত মানুষের কাছে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিতে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন ।

জানা গিয়েছে, সাহারার সমাজকল্যাণ ইউনিট রয়েছে, যা এখনও মানুষকে সাহায্য করে । শুধু তাই নয়, ক্রীড়া জগতেও তাঁর অবদান ছিল মনে রাখার মতো ৷ সে ক্রিকেট, হকি হোক বা ফুটবল, সব কিছুতেই ব্র্যান্ডিং করেছেন তিনি । সাহারার সৌজন্যে গোরক্ষপুরের রাপ্তি নদীর তীরে প্রথম আধুনিক শ্মশান তৈরি করা হয়েছিল । লখনউয়ের ভাইসা কুন্ডেও এটি দেখা যায় ।

রাজ বব্বরের সঙ্গে সুব্রত রায়

খোকা সিংয়ের কথায়, প্রথম দিকে যখন যুবকদের কর্মসংস্থান ও সঞ্চয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে চেয়ার-টেবিলে বসে তিনি কাজ করতেন, তখন আমিও এর অংশীদার হওয়ার সুযোগ পেয়েছি । বড় ভাই ও সহকর্মী হিসেবে তিনি আমাকে সব সময় সমর্থন করেছেন । আজ যখন তিনি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন, তখন তাঁকে নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে যা হয়তো কথায় প্রকাশ করা যাবে না । আমাকে বিধায়ক বানানো থেকে শুরু করে তাঁর গাড়িতে বর হিসেবে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত, সুব্রত রায় আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ।তিনি লক্ষ পরিবারের মসিহা ছিলেন ৷ যিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন ৷ এটি আমাদের কাছে খুব বড় ক্ষতি । তিনি জানান, সুব্রত রায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি 'এফিডেভিট উইকলি' নামে একটি সংবাদপত্র শুরু করেছিলেন, যা আজও চলছে ।

সুব্রত রায়ের সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন রাজেন্দ্র দুবে ৷ তিনি জানিয়েছেন, সাহারা গ্রুপের কর্ণধার 1967 সালে সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন । মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও তিনি কোনও সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেননি । কলেজে পড়াকালীন তিনি বলতেন, তিনি কর্মচারী নয়, চাকরিদাতা হতে চান । আমাকে চাকরি দিতে হবে, আমাকে চাকরি করতে হবে না । এই ছিল তাঁর নীতিবাক্য । পড়াশোনার সময় জাওয়া মোটরসাইকেলের প্রতি তার শখ ছিল । তিনি একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটারও ছিলেন । সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল চালু করে তিনি সংবাদ জগতেও এনেছিলেন এক নতুন বিপ্লব ।

প্রাক্তন বিধায়ক অনুগ্রহ নারায়ণ সিংয়ের সঙ্গে সুব্রত রায়

আরও পড়ুন:

প্রয়াত সাহারার প্রতিষ্ঠাতা সুব্রত রায়, দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন ক্যানসারে

বিহার টু মুম্বই, সুব্রত রায়ের জীবনের গল্প হার মানাবে সিনেমাকেও

Last Updated : Nov 15, 2023, 12:45 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details