নয়াদিল্লি, 14 ডিসেম্বর:সংসদে নিরাপত্তা ভেঙে হঠাৎ হামলা চালানোর অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করল দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল ৷ ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র কঠোর ধারায় মামলা করা হয়েছে ৷ বুধবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন জিরো আওয়ারের শেষ পর্বে হঠাৎ দর্শকাসন থেকে দু'জন ঝাঁপিয়ে পড়ে ৷ পরে তাদের জুতো থেকে হলুদ রঙের ধোঁয়া বেরতে দেখা যায় ৷ হুলস্থুল কাণ্ড বাধে লোকসভায় ৷ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ৷ বহু সাংসদরা ভয়ে বেরিয়ে আসেন ৷ এই ঘটনায় ইউএপিএ ধারায়া মামলা দায়ের করল দিল্লি পুলিশ ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদে হামলা চালানোর পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়িত করার ঘটনায় 6 জন জড়িত ৷ তাদের মধ্যে 5 জনকে বুধবারই গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গিয়েছে, তারা সবাই একে অপরের পরিচিত ৷ চার বছর ধরে তাদের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে ৷ কয়েকদিন আগে তারা সংসদে হামলা চালানোর ছক কষে ৷ এমনকী বুধবার সংসদে আসার আগে রেকিও করেছে ওই ছ'জন অভিযুক্ত ৷
দিল্লি পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরা গতকালই সংসদের ওই ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখেন ৷ ফরেন্সিক দল এই ঘটনায় প্রমাণও জোগাড় করেছে ৷ লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলছিল ৷ জিরো আওয়ারের শেষে হঠাৎ দুই যুবক দর্শকাসন থেকে লাফ দিয়ে নীচে পড়ে ৷ তারা সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি ৷ নীচে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের জুতো থেকে হলুদ রঙের ধোঁয়া বেরতে থাকে ৷ দুই যুবক স্লোগান দিতে থাকে এবং একটি করে বেঞ্চ টপকে পালাবার চেষ্টা করে ৷ ইতিমধ্যে তাদের ধরে ফেলেন সাংসদরা ৷ ওই একই সময়ে সংসদের বাইরে থেকে আরও দু'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তারাও হলুদ ধোঁয়া ছড়িয়ে 'স্বৈরাচার চলবে না' বলে স্লোগান দিচ্ছিল ৷ তারা অমল শিন্ডে এবং নীলম দেবী ৷ এই ঘটনায় বুধবার মোট 5 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ আর একজনের সন্ধান চলছে ৷
অভিযুক্ত অমল জেরার মুখে পুলিশকে জানিয়েছে, কৃষক আন্দোলন, মণিপুরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত, বেকারির মতো বিষয়গুলি নিয়ে তারা হতাশার মধ্যে ছিল ৷ আর তারপরেই এই হামলার পরিকল্পনা করে ৷ এক আধিকারিক জানান, তারা সরকারকে একটা বার্তা দিতে চেয়েছিল ৷ তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এজেন্সিগুলি জানার চেষ্টা করছে, ওই ছ'জনের নেপথ্যে কোনও বড় মাথা বা কোনও সংগঠন আছে কি না ৷
ঘটনার আগের দিন মঙ্গলবার রাতে সাগর, মনোরঞ্জন অমল, নীলম এবং ললিত গুরুগ্রামে বিশালের বাড়িতে ছিল ৷ সকালে তারা সংসদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ৷ বিশাল শর্মা এর আগে একটি সংস্থায় গাড়িচালকের কাজ করত ৷ পরে সে চাকরি ছেড়ে অটোরিকশা চালাতে শুরু করে ৷ তার প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বিশাল একজন মদ্যপ ৷ সে প্রায়ই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করত ৷