নয়াদিল্লি, 6 অগস্ট: আজ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ৷ মা সুষমাকে স্মরণ করে মেয়ে বাঁশরি স্বরাজ একটি আবেগঘন পোস্ট করেছেন সামাজিক মাধ্যমে ৷ শনিবার গভীর রাতে টুইটারে তিনি লিখেছেন, "মা সব সময় তোমার অভাব অনুভব করি ৷" 2019 সালের 6 অগস্ট রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ভারতীয় রাজনীতির এই বিশিষ্ট চরিত্রের ৷
মেয়ে বাঁশরী স্বরাজ মায়ের স্মৃতিচারণায় আরও লিখেছেন, "তোমাকে ছাড়া চারটে বছর কেটে গেল ৷ কিন্তু আমার জন্য এই সময়টা 4 সেকেন্ডও নয় ৷ শ্রীকৃষ্ণ তোমাকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছেন ৷ তবে আমি তোমার দেখানো জনসেবার পথেই চলেছি ৷ তুমিই আমার প্রেরণা, আমার পথপ্রদর্শক, আমার দেবতা ৷ সবসময় তোমার অভাব বোধ করছি..."
1952 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হরিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন সুষমা স্বরাজ ৷ বিজেপির সঙ্গে তাঁর পরিচয় পারিবারিক সূত্রে ৷ বাবা ছিলেন আরএসএসের সক্রিয় কর্মী ৷ পরে সুষমাও সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদে যোগ দেন ৷ জীবনের প্রথমদিকে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ৷ স্বামী স্বরাজ কৌশলও পেশায় আইনজীবী।
আরও পড়ুন: সুষমা স্বরাজের মৃত্যুবার্ষিকী, শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রীর
1974 সাল থেকে দেশে শুরু হওয়া কংগ্রেস বিরোধী আন্দোলন সুষমা স্বরাজকে প্রভাবিত করে ৷ তিনি জয়প্রকাশ নারায়ণের সঙ্গে সরকার-বিরোধী প্রতিবাদে সামিল হন ৷ 1975 সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয় ৷ তারপর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন ৷ ধীরে ধীরে জাতীয় স্তরের নেতা হয়ে ওঠেন ৷ হরিয়ানার ক্যান্টনমেন্ট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মাত্র 25 বছর বয়সে বিজেপি প্রার্থী হন সুষমা স্বরাজ ৷ প্রথমবারই নির্বাচনে জয়ী হন সুষমা ৷ হরিয়ানা সরকারে মন্ত্রী হন ৷ 1996 সালে অটল বিহারি বাজপেয়ীর 13 দিনের সরকারে প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব পান সুষমা স্বরাজ ৷ পরে 1998 সালে মাস দুয়েকের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলান ৷
এরপর আবারও জাতীয় রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন ৷ 2004 সালে প্রথম ইউপিএ সরকার তৈরি হওয়ার সময় সোনিয়া গান্ধির প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয় ৷ তদানীন্তন কংগ্রেস সভাপতিকে 'বিদেশিনী' বলে দাবি করেন সুষমা ৷ শুধু দাবি করাই নয়, প্রকাশ্যে চরম বিরোধিতাও শুরু করেন তিনি ৷ শেষমেশ প্রধানমন্ত্রী হননি সোনিয়া ৷ আরও পরে 2009 সালে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করেন প্রয়াত নেত্রী ৷
আরও পড়ুন: সুষমা স্বরাজকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে চোখে জল আডবানির
2014 সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর তিনি বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্ব পান সুষমা ৷ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই পদেই ছিলেন ৷ এই দায়িত্বে থাকাকালীন তাঁর যেমন প্রশংসা হয়েছে, তেমনি তিনি বিতর্কেও জড়িয়েছেন ৷ ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবের পাকিস্তানে ফাঁসির সাজা রদ করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বিভিন্ন মহলে প্রশংসতি হয়েছিল ৷ পাশাপাশি, আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত ললিত মোদির দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা ৷