ভোপাল, 7 জুলাই : কোভিডে মারা যাওয়া মানুষের সৎকারের পর জমে থাকা ছাইয়ের পরিমাণ কয়েক টনে পৌঁছেছে ৷ এবার জমা ছাই হবে গাছের পুষ্টিকর খাদ্য অর্থাৎ সার ৷ আর ওই গাছগুলোর মধ্যে বেঁচে থাকবেন কোভিডে প্রাণ হারানো প্রিয়জনরা ৷ এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রদেশে ভোপালের একটি শ্মশান কর্তৃপক্ষ ৷
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে বিশাল সংখ্যক মৃতদেহের সৎকার হয়েছে ভোপালের ভদভদা শ্মশানে ৷ মৃতদেহ পোড়ানোর ফলে 4-5 ট্রাক ভর্তি কয়েক টন ছাইয়ের পাহাড় জমে উঠেছে ৷ কিন্তু তা অন্য কোথাও পাঠানো সম্ভব হয়নি ৷ কারণ মৃতদেহগুলি কোভিড-19 সংক্রামিত ৷ তাই পড়ে রয়েছে শ্মশানে ৷ কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন শ্মশানে কয়েক টন ছাই রাখাও তো সম্ভব নয় ৷ তাই শ্মশান চত্বরে গাছের চারা লাগিয়ে, তাদের সার হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্মশান কর্তৃপক্ষ ৷
আরও পড়ুন : তেলাঙ্গানায় 60 মিনিটে 10 লক্ষ চারা রোপণ, কর্নাটকে 21 একরের জঙ্গলে সবুজায়নের বার্তা
এই প্রজেক্টের প্রধান তন্ময় জৈন বলেন, "আমরা 12000 বর্গফুট অঞ্চল জুড়ে 3500টি গাছের চারা রোপণ করব ৷ বর্তমানে এখানে 56 ধরনের গাছের প্রজাতি আছে ৷ সেগুলি 15-20 মাসে বৃক্ষে পরিণত হবে ৷ সাধারণ জঙ্গলগুলোর থেকে 30% বেশি ঘন হবে এই জঙ্গল ৷" তিনি আরও জানান, মানুষের মনে ভয় ঢুকে গিয়েছে ৷ "তাই এই চিতাভস্ম অন্য কোথাও পাঠালে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে ৷ আর আমরা খোলা জায়গায় এভাবে রেখে দিতে চাই না বা জলেও ফেলে দেব না", বললেন তিনি ৷ বিজ্ঞানে ছাই বলতে ফসফরাস বোঝায়, যা গাছের সার ৷ "কিন্তু এর সঙ্গে তো একটা আবেগও জড়িয়ে রয়েছে ৷ এই গাছগুলি কোভিড-19-এ মারা যাওয়া মানুষের স্মৃতি বহন করবে ৷"
ভদভদা শ্মশানে চারা রোপণের জায়গা ডাঃ শশীকান্ত জোশীর বাবা কোভিড-19-এ মারা গিয়েছেন ৷ তিনি এখানে বাবার স্মৃতিতে গাছের চারা লাগাতে এসে বললেন, "এখানে যে সমস্ত গাছ পোঁতা হচ্ছে, সবই আমাদের প্রিয়জনের কথা মনে করে, শ্মশান কর্তৃপক্ষ গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করবে ৷ জমে থাকা ছাই সার হলেও তার সঙ্গে আবেগের সম্পর্ক রয়েছে, সেই হিসেবে ব্যবহার হবে এখানে ৷"