নয়াদিল্লি, 4 এপ্রিল:প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্নীতির অভিযোগে পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকারকে দায়ী করেছিলেন ৷ এমনকী সেই সময়ের দুর্নীতির ঘটনায় কাউকে রেয়াত না করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর মুখে ৷ যার পালটা এবার পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগকে নসাৎ করলেন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিবল ৷ এ দিন প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কিছু পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন তিনি ৷ তিনি দাবি করেছেন, ইউপিএ আমলে দুর্নীতিগ্রস্তদের সাজার হার সবচেয়ে বেশি ছিল ৷ কিন্তু, বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বাঁচানো হচ্ছে ৷
উল্লেখ্য, সোমবার দেশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এর হীরক জয়ন্তী বর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সেখানেই সিবিআই এর প্রশংসার পাশাপাশি, ইউপিএ আমলে দুর্নীতির অভিযোগ বর্তমান বিরোধী শিবিরকে একহাত নেন ৷ মোদি দাবি করেন, "দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আজ আর কোনও রাজনৈতিক বাধা নেই ৷ তাই আধিকারিকরা নির্দ্ধিদায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারেন ৷ তা সেই ব্যক্তি যতই ক্ষমতাশীল হোক না কেন, বিনা সংকোচে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷"
আর সেই নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর দাবিকে নসাৎ করতে বেশ কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন কপিল সিবল ৷ তিনি পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে জানান, প্রধানমন্ত্রী সিবিআই-কে বলেছেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিনা সংকোচে ধরতে ৷ কিন্তু, পরিসংখ্যান অন্য কথা বলছে ৷ প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংয়ের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করেন সিবল ৷ 2016 সালে জীতেন্দ্র সিং সংসদে জানিয়েছিলেন, 2013 সালে 1136 জন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল ৷ সেটাই 2014 সালে কমে হয় 993, 2015 সালে 878 এবং 2016 সালে কমে মাত্র 71 এ দাঁড়ায় দোষী সাব্যস্তদের সংখ্যা ৷ তাঁর কথায় ইউপিএ আমলেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্তদের সাজা দেওয়া হয়েছে ৷
আরও পড়ুন:দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সিবিআইয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, বললেন প্রধানমন্ত্রী
এরপরই কিপল সিবল রাজ্যসভার অধিবেশনে মন্তব্য করেন, "ব্যক্তি মিথ্যে বলতে পারে ৷ কিন্তু, পরিসংখ্যান কখনও মিথ্যে বলে না ৷ তাহলে কে দুর্নীতিবাজদের বাঁচাচ্ছেন ?" উল্লেখ্য, গতবছর মে মাসে কপিল সিবল কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ৷ এরপর সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে নির্দলপ্রার্থী হিসেবে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন ৷ বরিষ্ঠ এই আইনজীবী বর্তমানে একটি ‘অ-নির্বাচনী’ প্ল্যাটফর্ম ‘ইনসাফ’ চালু করেছেন ৷ অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এই মাধ্যমটিকে ব্যবহার করেন তিনি ৷