নয়াদিল্লি, 12 সেপ্টেম্বর: সেনাবাহিনীর চিঠিতে মণিপুরে গিয়েছিলেন এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার চারজন সাংবাদিক ৷ সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানালেন ইজিআই পক্ষের প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবাল ৷ এই ঘটনায় বিস্মিত দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ৷ পাশাপাশি অভিযুক্ত সাংবাদিকদের সুরক্ষার মেয়াদও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৷
4 সেপ্টেম্বর মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং জানান, এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া বা ইজিআই-এর সভাপতি এবং তিন জন সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, তাঁরা রাজ্যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধাতে মদত জুগিয়েছেন ৷
এদিন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের গঠিত বেঞ্চে কপিল সিবাল বলেন, "আমরা নিজের ইচ্ছেয় মণিপুরে যাইনি ৷ সেনাবাহিনী আমাদের চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিল ৷ সেখানে সংবাদমাধ্যমে পক্ষপাতদুষ্ট এবং অনৈতিক রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে ৷ বিষয়টি পরীক্ষা করতে মণিপুরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷"
কপিল সিবাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চের কাছে একটি চিঠি পেশ করেন ৷ 12 জুলাই এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া বা ইজিআইকে চিঠিটি লিখেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী ৷ অশান্ত মণিপুরের সংবাদমাধ্য়মে অনৈতিক খবর প্রকাশিত হচ্ছে ৷ রাজ্যটির হিংসার ঘটনা নিয়ে একপক্ষের হয়ে কথা বলা হচ্ছে ৷ বর্ষীয়ান আইনজীবী জোর দিয়ে জানান, সেনাবাহিনীর কথায় সাংবাদিকরা উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে গিয়েছিলেন ৷ এরপরই প্রধান বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন করেন, "সেনাবাহিনী কেন এডিটরস গিল্ডকে মণিপুরে আসতে বলল ?"
এদিন মণিপুর সরকারের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষা মেহতা আর্জি জানান, এই মামলাটি মণিপুর হাইকোর্টে স্থানান্তরিত করা হোক ৷ এদিকে ইজিআই-এর আইনজীবী কপিল সিবাল মামলাটি দিল্লি হাইকোর্টে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "মণিপুরের আইনজীবীরা মামলাটি লড়তে চাইছেন না ৷ আর এই সময় মণিপুরে যাওয়াটাও সমস্যার ৷ তাই দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানানোর অনুমতি দিক শীর্ষ আদালত ৷" তবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি 15 সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ৷
আরও পড়ুন: মণিপুরে পাঁচদিন সম্পূর্ণ কার্ফু, মোদি সরকারকে আক্রমণ কংগ্রেসের
3 মে থেকে অশান্ত উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটি ৷ মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে 250 জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে ৷ ঘরদোর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ ৷ মেইতেই সম্প্রদায় মণিপুরের উপত্যকা অঞ্চলে বাস করে ৷ আর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুকিরা পাহাড়ে থাকে ৷ মেইতেই সম্প্রদাকে তফশিলি উপজাতিভুক্ত করার বিরোধিতা করেছিল কুকিরা ৷ সেই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চরম আকার নেয় ৷