হায়দরাবাদ, 21 ডিসেম্বর: এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, 2023 সাল ছিল ভারতের মহাকাশ গবেষণার বছর । 2019 সালের 7 সেপ্টেম্বর চন্দ্রযান-2-এর হৃদয়বিদারক ব্যর্থতার পর, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা পরবর্তী চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে 2023 সালের 23 অগস্ট দীর্ঘ পথ সফল ভাবে অতিক্রম করে ৷ ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ ঘোষণা করলেন, "আমরা আলতো অবতরণ (সফট ল্যান্ডিং) অর্জন করেছি, ভারত চাঁদে রয়েছে ৷" প্রতিটি ভারতীয়ের স্মৃতিতে ও ইতিহাসের পাতায় খোদাই হয়ে যায় সেই দিন ৷
মুহূর্তটি সাধারণ ছিল না ৷ কারণ ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে আলতো অবতরণকারী প্রথম দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চিনের পর সেই অভিজাত ক্লাবে যোগদানকারী চতুর্থ দেশ হয়ে চাঁদের পৃষ্ঠে আলতো অবতরণ করে । বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভার সমন্বিত চন্দ্রযান-3 মিশনটি অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে 2023 সালের 14 জুলাই, এলভিএম3-এম4-এ চড়ে ৷ 23 অগস্ট এই মিশনটি চন্দ্র পৃষ্ঠে ঐতিহাসিক স্পর্শ করে, যার পরে প্রজ্ঞান রোভারের কাজ শুরু হয় ৷
প্রপালশন মডিউলের ঘরে ফেরা: চন্দ্র পৃষ্ঠের অধ্যয়ন করার পর ও ইসরো বিজ্ঞানীদের চাঁদের পৃষ্ঠের গঠন বুঝতে সাহায্য করার পরে, চন্দ্রযান -3 প্রপালশন মডিউলটি 2023 সালের 22 নভেম্বর পৃথিবীর কক্ষপথে ফিরে আসে । 2023 সালের 9 অক্টোবর থেকে ফেরার কৌশলগুলির একটি সিরিজ শুরু হয়েছিল ৷ চন্দ্রপৃষ্ঠে চন্দ্রযান-3-এর নরম অবতরণ এবং পৃথিবীর কক্ষপথে প্রপালশন মডিউলের ফিরে আসার মধ্যে ইসরো আশা করেছিল যে, মিশনটি দ্বিতীয়বার চন্দ্রপৃষ্ঠে যাত্রা করবে, তবে তা ঘটেনি ।
মিশন 2035-এর পথে একটি মাইলফলক: চন্দ্রযান-3 মিশন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফট ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রথম দেশ হিসেবে ভারতকে বসিয়েছে তালিকার শীর্ষে ৷ পাশাপাশি, এই অভিযানকে ভারতের মিশন 2035-এর জন্য একটি গেম চেঞ্জার বলেও মনে করা হয় । 2035 সালের মধ্যে মহাকাশ স্টেশন এবং চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রথম ভারতীয় পাঠানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে । চন্দ্রযান-3 মিশনের সাফল্য ইসরোকে মহাকাশ গবেষণায় বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্যও পথ উন্মুক্ত করে দেয় ।
ইসরোর লক্ষ্য বড়: আপনি যদি ভেবে থাকেন যে, চন্দ্রযান-3 মিশনের সফল সফট-ল্যান্ডিংয়ের পরে, ইসরো আবার বসে থাকবে এবং মিশনের গৌরব উপভোগ করতে বিশ্রাম নেবে, তাহলে আপনি ভুল করছেন । চন্দ্র মিশনের তাৎক্ষণিক ফলো-আপে, ইসরো 2 সেপ্টেম্বর শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী আদিত্য-এল1 সৌর মিশন চালু করেছে । পরবর্তীতে মহাকাশযানটিকে 125 দিনের মধ্যে পৃথিবী থেকে প্রায় 1.5 মিলিয়ন কিমি ভ্রমণ করেছে এবং সূর্যের সবচেয়ে কাছে বিবেচিত ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান বিন্দু এল1-এর চারপাশে একটি হ্যালো কক্ষপথে স্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে । সৌরপৃষ্ঠের অনুসন্ধানের অন্যান্য কাজের মধ্যে, ভারতের আদিত্য এল1 মিশন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সূর্যের ছবি তুলে ইসরোতে পাঠাবে ৷