নয়াদিল্লি, 19 নভেম্বর : কেন্দ্রের তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ৷ শুক্রবার তিনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে একথা ঘোষণা করলেন ৷
প্রধানমন্ত্রী এদিন তাঁর ভাষণে বলেন, " কৃষি বাজেট পাঁচগুণ বেড়েছে ৷ এই বাজেটে বছরে 1.25 লক্ষ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে ৷" কৃষি আইন প্রণয়নের যুক্তি হিসাবে বলেন, "এই তিনটি আইনের লক্ষ্য ছিল কৃষকদের, বিশেষ করে ছোট কৃষকদের ক্ষমতা বাড়ানো ৷ কৃষকদের স্বার্থে আইনগুলি আমরা প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছিলাম কিন্তু একশ্রেণির কৃষকদের বোঝাতে পারিনি ৷ তাই আমরা তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ আগামী সাংসদ অধিবেশনে সেগুলি বাতিল করার ব্যবস্থা করা হবে ৷" এদিন মোদি বিক্ষোভকারী কৃষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান ৷
আন্দোলনকারী কৃষকনেতারা স্পষ্ট করেছেন, তাঁরা মূলত দু'টি দাবি নিয়ে প্রতিবাদ করছেন ৷ প্রথমত, বিতর্কিত এই কৃষি আইনগুলি বাতিল করতে হবে এবং এমএসপি অর্থাৎ সর্বনিম্ন সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা দিতে হবে ৷ প্রধানমন্ত্রীর বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর কৃষকদের তরফে জানানো হয়েছে, সরকার তাঁদের একটি দাবি মেনে নিয়েছে ৷ এই মূহূর্তে সীমানা খালি করা বা প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সম্মিলিত কিষান মোর্চার বৈঠকে । তবে এটা নিজেদের বড় জয় বলে মনে করছেন তাঁরা ৷ রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, এই আইন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সংসদে যতক্ষণ না সম্পূর্ণ হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ৷ পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এমএসপি নিয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি ৷ এই বিষয়টি নিয়ে আইন প্রণয়নের দাবি এখনও অমীমাংসিত ৷ কৃষকদের বেশ কিছু দাবি নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত জানা যায়নি ৷ সেবিষয়েও বৈঠক হবে ৷ আইন তিনটি প্রত্যাহারের ঘোষণাকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন ৷ তবে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ৷
তবে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর (Narendra Singh Tomar) প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণার পর কৃষকদের শুভেচ্ছা জানান ৷ বলেন, "2014 সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ৷ শুরু থেকেই দেশের কৃষিক্ষেত্র এবং কৃষকদের লাভের কথা ভেবে বিভিন্ন প্রকল্পের শুরু করেছেন ৷ কৃষকরা তার লাভও পেয়েছেন ৷ বহুদিন ধরে অপেক্ষার পর উৎপাদন খরচের উপর 50 শতাংশ বৃদ্ধি করে এমএসপি ঘোষণা করেছে মোদি সরকার ৷ প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের প্রতিকূল অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য তিনটি আইনের প্রণয়ন করেন ৷ কৃষকরা এই আইনের লাভ ভোগ করতে পারতেন ৷ কিন্তু এটা দুঃখের যে, দেশের একশ্রেণির কিছু কৃষককে আমরা এই আইনগুলির উপকারিতা বোঝাতে পারিনি ৷"