নয়াদিল্লি, 30 সেপ্টেম্বর : দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সামগ্রিক উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ৷ তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের পরিকাঠামো ক্রমশ উন্নত হচ্ছে ৷ বাড়ছে স্বনির্ভরতা ৷ এদিন প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জানান, তাঁর সরকারের লক্ষ্য খুবই স্পষ্ট ৷ সরকার চায়, দেশের প্রত্যেকটি জেলায় অন্তত একটি মেডিক্যাল কলেজ থাকবে ৷ অথবা এমন কোনও একটি শিক্ষাকেন্দ্র থাকবে, যেখানে মেডিক্য়ালের স্নাতকোত্তর স্তরের পঠনপাঠন করানো হবে ৷
আরও পড়ুন :Narendra Modi : আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
এদিন রাজস্থানের বাঁশওয়াড়া, সিরোহি, হনুমানগড় এবং দৌসা জেলার জন্য মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ সেই অনুষ্ঠানেই ভাষণ দেওয়ার সময় মোদি বলেন, ‘‘এই অতিমারি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে ৷ গোটা বিশ্বের চিকিৎসা ক্ষেত্রে কী কী পরিকাঠামো দরকার, তা বুঝিয়েছে ৷ সব দেশই তাদের নিজেদের মতো করে এই সঙ্কটের মোকাবিলা করছে ৷ আর এই সময়ের মধ্যেই ভারত নিজেকে শক্তিশালী করেছে এবং স্বনির্ভর হয়েছে ৷ এক্ষেত্রে রাজস্থানে চারটি মেডিক্যাল কলেজ এবং জয়পুরে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোকেমিক্যালস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি স্থাপন একটা বড় পদক্ষেপ ৷’’
মোদি জানান, 2014 সালে এনডিএ সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের চিকিৎসা পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘2014 সাল থেকে এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র রাজস্থানেই 23টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৷ এর মধ্যে সাতটি মেডিক্যাল কলেজ ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে ৷ আর আজ আরও চারটি মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হল ৷’’
দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কথা বলতে গিয়ে নিজের রাজ্য গুজরাতের প্রসঙ্গও তোলেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি জানান, 2001 সালে গুজরাতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে গিয়ে তাঁকেও অনেক প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়েছিল ৷ তখন তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ৷ মোদির বলেন, ‘‘দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ফেরাতে, নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন, আমরা সবকিছুতেই বদল আনার চেষ্টা করেছি ৷’’
নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, 2014 সালে তাঁদের সরকার গঠিত হওয়ার সময় গোটা দেশে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের জন্য মোট আসন ছিল 82 হাজার ৷ সেই সংখ্যাটা এখন 1 লক্ষ 40 হাজারেরও বেশি ৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজ ছ’টি এইমস (AIIMS) থেকে 22টি এইমস-এ পৌঁছানোর লক্ষ্যে গোটা দেশ কাজ করছে ৷ গত ছয়-সাত বছরের মধ্যে 170টিরও বেশি মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়েছে ৷ 100টিরও বেশি মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো উন্নত করা হয়েছে ৷’’
আরও পড়ুন :National Digital Health Mission: প্রত্যেক নাগরিকের স্বাস্থ্য আইডি কার্ড, আর কী থাকছে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল হেল্থ মিশনে ?
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তাঁর সরকারের আমলে দেশের চিকিৎসা পরিকাঠামোর খোলনলচেই বদলে গিয়েছে ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নানা ভাগে বিভক্ত ছিল ৷ বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে এই বিষয়ে সমন্বয়ের অভাব ছিল ৷ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং বড় হাসপাতালগুলির মধ্যে কোনও যোগযোগই ছিল না ৷ আমরা সমন্বয়ের এই অভাব দূর করেছি ৷ চিকিৎসা পরিষেবায় বদল আনতে আমরা একটা নতুন ধরনে স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলেছি ৷ স্বচ্ছ ভারত, আয়ুষ্মান ভারত এবং আয়ুষ্মান ভারত ডিজিট্যাল মিশনের মতো প্রকল্প ও পরিকল্পনাকেও এই কারণেই বাস্তবায়িত করা হয়েছে ৷’’
প্রসঙ্গত, রাজস্থানে চারটি মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি জয়পুরের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোকেমিক্যালস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ পুরো অনুষ্ঠানটিই ছিল ভার্চুয়াল ৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এবং লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা ৷