নয়াদিল্লি, 2 সেপ্টেম্বর:দেশে লোকসভা, রাজ্য বিধানসভা এবং স্থানীয় নির্বাচন (পঞ্চায়েত ও পৌরসভা) একযোগে অনুষ্ঠিত হওয়া সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে আট সদস্যের কমিটি গঠন করল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কমিটিতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী, গুলামনবি আজাদ, এন কে সিং, সুভাষ কাশ্যপ, হরিশ সালভে এবং সঞ্জয় কোঠারি ৷ পাশাপাশি বিশেষ অতিথি হিসাবে কমিটির যাবতীয় বৈঠকে থাকবেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়ালও ৷ কেন্দ্রের তরফে জারি করে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নবগঠিত এই কমিটি সংবিধান, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন এবং অন্য কোনও প্রাসঙ্গিক বিধিতে সুনির্দিষ্ট সংশোধনী পরীক্ষা করার পাশাপাশি সুপারিশও করতে পারবে।
'এক দেশ, এক ভোট' নিয়ে শনিবার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ আর সেই নোটিফিকেশন অনুযায়ী, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি সংবিধানের সংশোধনীর জন্য রাজ্যগুলির অনুমোদনের প্রয়োজন হবে কি না, তাও খতিয়ে দেখবে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রের গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী, কমিটি অবিলম্বে কাজ শুরু করবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিপোর্ট দেবে। একই সঙ্গে, লোকবল, ইভিএম, ভিভি প্যাট-সহ নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেবে এই কমিটি ৷
কেন্দ্রের গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুসারে কমিটি শুধুমাত্র লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে তো বটেই এমনকী পৌরসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের সম্ভাব্যতাও খতিয়ে দেখা হবে। কমিটি অনাস্থা প্রস্তাব, দলত্যাগ বা এই জাতীয় অন্য কোনও ঘটনা থাকলে একযোগে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য সমাধানগুলি বিশ্লেষণ এবং সুপারিশও করবে। জাতীয়, রাজ্য, নাগরিক সংস্থা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বৈধ ভোটারদের জন্য একটি একক ভোটার তালিকা এবং পরিচয়পত্রও খোঁজা হবে ৷ বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিক বার 'এক দেশ, এক নির্বাচন'-এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জোরাল সওয়াল করেছেন ৷ 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির ইশতেহারের অংশও ছিল এটি।
আরও পড়ুন: ভারতে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, মোদি-বাইডেন বৈঠক 8 তারিখ
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে দলের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কংগ্রেস নবগঠিত বিরোধী দল 'ইন্ডিয়া'-এর শরিকদের সঙ্গে আলোচনা এবং পরামর্শ করবে বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর ৷ প্রসঙ্গত, 1967 সাল পর্যন্ত ভারতে একযোগে নির্বাচন পরিচালনারই চিরাচরিত প্রথা ছিল ৷ এইভাবেই দেশে পর পর চারটি নির্বাচন অনুষ্ঠিতও হয়েছিল। 1968-69 সালে কিছু রাজ্যের বিধানসভা অকালে ভেঙে যাওয়ার পর এই অনুশীলন বন্ধ হয়ে যায়। লোকসভাও প্রথমবারের মতো 1970 সালে তফসিলের এক বছর আগে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল এবং 1971 সালে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।