হায়দ্রাবাদ, 11 মে : সারা দুনিয়ায় গণ-ভ্যাকসিনেশন শুরু হয়েছে ৷ আর এতে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের 60 শতাংশ উৎপাদিত হয় ভারতে ৷ অথচ দূরদৃষ্টির অভাবে সেই দেশের অবস্থাই বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ ৷
প্রথম দফায় কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই 45 বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল ৷ অথচ বর্তমানে এই ভ্যাকসিনেশনের গতি এক মাস আগের থেকেও অর্ধেক হয়ে গিয়েছে ৷
এমনকি 1 মে থেকে 18 বছর ও তার বেশি বয়সিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়াও ধাক্কা খেয়েছে ৷ দেশজুড়ে এই প্রক্রিয়া রূপায়িত করতে হলে মাসে 10-11 কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করা দরকার ৷ কিন্তু এটা চিন্তার বিষয় যে, এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আরো এক মাস বা তার বেশি সময় লাগবে ৷
এটাও উদ্বেগজনক যে, দেশের এই কোভিড সুনামিতে বারোটি রাজ্যে এক লক্ষেরও বেশি অ্যাকটিভ কোভিড কেস রয়েছে ৷ এই সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে শুধুমাত্র জুনের শেষের দিকে ৷ এরকম সংকটজনক পরিস্থিতি সামলাতে দেশের বিচারবিভাগের সক্রিয় হস্তক্ষেপই একমাত্র আশার আলো ৷
বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী, দেশের 18 বছর ও তার ঊর্ধ্বে 80 কোটি মানুষের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কমপক্ষে আট মাস সময় লাগবে ৷ এই সময় কেন্দ্র মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে, সম্প্রতি কেন্দ্রের ভ্যাকসিন নীতির সমালোচনা করে জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ৷ কেন্দ্রকে একটা সার্বিক ভ্যাকসিন নীতি প্রণয়ন করার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷
প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর সি রঙ্গরাজন পরামর্শ দিয়েছেন, একদিকে কেন্দ্র বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে একই সময় রাজ্যগুলিও যেন প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগুলির উন্নতির দিকে নজর দেয় ৷ প্রয়োজনে আরো হাসাপাতালের ব্যবস্থা করে ৷
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি 50 শতাংশ পরীক্ষার মাধ্যমে কোভিড রোগী শনাক্ত করে ফেলছে, ভারত মাত্র 20 শতাংশ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পেরেছে ৷ এই ধীর গতি কোভিড ভাইরাসকে ছড়িয়ে পড়ার নতুন শক্তি জোগাচ্ছে ৷
দেশে শ'য়ে শ'য়ে মানুষ অক্সিজেন আর ভেন্টিলেটর না পেয়ে মারা গিয়েছেন ৷ তাঁদের পরিজনেরা বারে বারে সাহায্য চেয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন ৷ রাজ্যগুলি অক্সিজেন পেতে আইনি যুদ্ধে নামতে বাধ্য হয়েছে ৷ আর এটা দুর্ভাগ্যজনক, কোর্টের দ্বারস্থ না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষকে তাদের অবস্থান থেকে সরানো যায়নি ৷