গুয়াহাটি (অসম), 6 মে: দত্তক কন্যার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে অসমের গুয়াহাটির এক চিকিৎসক দম্পতির বিরুদ্ধে ৷ শুক্রবার পুলিশ ড. ওয়ালিউল ইসলাম ও ড. সঙ্গীতা দত্ত নামে ওই দুই অভিযুক্তকে আটক করেছে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিকিৎসক দম্পতির দত্তক কন্যার বয়স মাত্র পাঁচ ৷
পুলিশের তরফ থেকে আরও জানা গিয়েছে যে ড. সঙ্গীতা দত্ত গুয়াহাটির একজন নামী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ । তাঁকে প্রায়ই অসমীয়া টেলিভিশন চ্যানেলে একজন মানসিক পরামর্শদাতা হিসেবে বিশেষজ্ঞের মতামত দিতে দেখা যায় । তাঁর স্বামী ড. ওয়ালিউল ইসলাম একজন শল্যচিকিৎসক । তিনিও গুয়াহাটিতে বেশ পরিচিত ৷ সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তাঁরা সেলিব্রিটি চিকিৎসক দম্পতি হিসেবে পরিচিত গুয়াহাটিতে ।
তাই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় হইচই পড়েছে গুয়াহাটিতে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিকিৎসক দম্পতি গুয়াহাটির উলুবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ৷ তাঁরা তাঁদের দত্তক কন্যাকে শুক্রবার বাড়ির ছাদে বেঁধে রেখেছিল ৷ দীর্ঘক্ষণ মেয়েটিকে বেঁধে রাখা হয় রোদের মধ্যে ৷ মারধরও করা হয় ৷ প্রতিবেশীদের নজরে আসে বিষয়টি ৷ তাঁরাই শিশু সুরক্ষা কমিশনে খবর দেন ৷ সেখান থেকে খবর যায় স্থানীয় পল্টন বাজার থানায় ৷
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই চিকিৎসক দম্পতিকে আটক করে ৷ উদ্ধার করে বছর পাঁচেকের ওই ছোট্ট শিশুকে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ৷ মেয়েটিকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ তারা আপাতত মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে ৷ পুলিশ ওই চিকিৎসক দম্পতির বাড়ির কেয়ারটেকারকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানা গিয়েছে ৷
এদিকে থানার মধ্যেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ড. ওয়ালিউল ইসলাম ৷ তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ আপাতত তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ৷ তবে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ৷ অন্যদিকে ওয়ালিউলকে থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও রাতভর বাড়িতেই আটক করে রাখা হয়েছিল সঙ্গীতাকে ৷ তিনি সেই সুযোগে একটি ফেসবুক লাইভ করেন ৷ সেখানে তাঁর কাজের জন্য নানা যুক্তি তুলে ধরেন বলে অভিযোগ ৷
গুয়াহাটির একজন সক্রিয় শিশু অধিকার কর্মী মিগুয়েল দাস কুয়াহ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সামনে আনেন ৷ তাঁর সন্দেহ, ওই দম্পতি মেয়েটিকে অবৈধভাবে দত্তক নিয়েছিলেন ৷ ওই শিশু অধিকার কর্মী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরীক্ষা করারও দাবি করেছেন ।
আরও পড়ুন:ধর্ষণ করে খুন, অভিযুক্তের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে মিলল নাবালিকার দেহ