পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

Amazon Link in Pulwama Attack: পুলওয়ামা বিস্ফোরণে অ্যামাজনের রাসায়নিক ! রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার দাবি তুলল কেইট - Improvised explosive device

যদিও এর পিছনে অ্যামাজন এবং কেইট-এর মধ্যে চলে আসা দীর্ঘ বিবাদের সংযোগ দেখছেন অনেকে । লোভনীয় ছাড় দিয়ে অ্যামাজন যেভাবে কম দামে পণ্য বিক্রি করে ভারতের বাজার দখল করছে, তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আপত্তি তুলে আসছে কেইট ।

CAIT wants Amazon to face treason trial for allegedly selling chemicals used in Pulwama Terror Attack
পুলওয়ামা হামলায় অ্যামাজনের রাসায়নিক !

By

Published : Nov 21, 2021, 8:44 PM IST

নয়াদিল্লি, 21 নভেম্বর: তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে গাঁজা পাচারের অভিযোগ আগেই উঠেছে । এ বার পুরনো ঘা ক্ষত হয়ে ভোগাতে শুরু করল অনলাইন বিপণনী সংস্থা অ্যামাজন-কে । বছর তিনেক আগে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা ঘটাতে যে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল, তার উপাদান হিসেবে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক অ্যামাজন থেকেই কেনা হয়েছিল বলে দাবি সর্বভারতীয় ভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠন (কেইট)-এর । তার জন্য অ্যামাজন-এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করার দাবি তুলল তারা ।

মধ্যপ্রদেশে কোটি কোটি টাকার গাঁজা পাচারচক্রের সঙ্গে সংযোগ ধরা পড়তেই অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছিল কেইট । এ বার পুলওয়ামা হামলার ঘটনায় অ্যামাজন এবং সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করার দাবি তুলল তারা । সংগঠনের অভিযোগ, তাঁদের ই-কমার্স পোর্টাল থেকে কী বিক্রি হচ্ছে না হচ্ছে, সে দিকে নজর দেওয়ার কোনও গরজই নেই অ্যামাজন কর্তাদের । তার জন্যই একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনায় তাদের সংযোগ উঠে আসছে । বিষয়টিকে লঘু করে দেখা উচিত নয় ।

আরও পড়ুন:SpiceJet : বিমান পরিষেবা বাড়াচ্ছে স্পাইস জেট, কলকাতা ও বাগডোগরা থেকে নতুন উড়ান

2019 সালের 14 ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে হামলা চালায় এক আত্মঘাতী জঙ্গি । তাতে 40 জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু হয় । বিস্ফোরণ ঘটাতে যে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসেস (আইইডি) ব্যবহার করা হয়েছিল, তার মাল-মশলা অ্যামাজন থেকেই কেনা হয়েছিল বলে অভিযোগ । 2020-র মার্চে পুলওয়ামা হামলার যে তদন্ত রিপোর্ট সামনে এনেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), তাতেও এর উল্লেখ ছিল বলে দাবি কেইট-এর । তাদের দাবি, তদন্তকারীরা আগেই জানিয়েছিলেন যে, অ্যামাজনের ই-কমার্স পোর্টাল থেকেই হামলায় ব্যবহৃত বিস্ফোরকের মশলা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, নাইট্রো গ্লিসারিন এবং অন্যান্য সামগ্রী কেনা হয়েছিল ।

এর আগে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ঘিরে সাময়িক শোরগোল শুরু হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থিতিয়ে আসে । কিন্তু গাঁজা বিতর্কের পর এ বার পুলওয়ামা-কাণ্ড টেনে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিল কেইট । সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি বিসি ভারতীয় এবং সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ খন্ডেলওয়াল জানিয়েছেন, আইইডি, ব্যাটারি এবং অন্যান্য সরঞ্জামের মাল-মশলা যে অ্যামাজন থেকেই কেনা হয়েছিল, তা গ্রেফতার হওয়া এক অভিযুক্ত আগেই জানিয়েছিলেন এনআইএ-কে । গণমাধ্যমেও সেই সংক্রান্ত নথি রয়েছে ।

আরও পড়ুন:Adani Group : শ্রীলঙ্কায় আরও বিনিয়োগ করতে পারে আদানি গোষ্ঠী

তাই অ্যামাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয় বলে মত কেইট কর্তাদের । তাঁদের মতে, অ্যামাজনের বিক্রিত পণ্য যখন দেশের জওয়ানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে সংস্থা এবং তার কর্তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের মামলা দায়ের হওয়া উচিত । তাঁদের দায়সারা আচরণেই এটা সম্ভবা হয়েছে বলে মনে করছেন কেইট কর্তারা । সব কিছু জেনেও এত দিন কেন অ্যামাজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই দুই কর্তা ।

কেইট কর্তাদের যুক্তি, 2011 সালেই ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট । 1985 সালের বিস্ফোরক আইনে সেটিকে বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে । কারণ মুম্বই, বারাণসী, মালেগাঁও এবং দিল্লিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটাতে বার বার ওই রাসায়নিকই ব্যবহার করা হয়েছে । তাই 2011 সাল থেকে খোলা বাজারে তার বিক্রি এবং ভারতে তা তৈরির উপরেও বসানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞা । তা সত্ত্বেও অ্যামাজন ওই বিপজ্জনক রাসায়নিক কী ভাবে বিক্রি করছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা । বিষয়টি নিয়ে নতুন করে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছেন । এ ব্যাপারে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা ।

আরও পড়ুন:Nirmala Sitharaman : ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রশংসা বাইডেন প্রশাসনের, দাবি নির্মলার

বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূস গয়ালের কাছেও অবিলম্বে ই-কমার্স নীতি প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন ওই দুই কেইট কর্তা । শুধু অ্যামাজনই নয়, যে সমস্ত বৃহৎ ই-কমার্স সংস্থাগুলি সরকারি নির্দেশের তোয়াক্কা না করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সকলকে নয়া নীতির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন । যদিও এর পিছনে অ্যামাজন এবং কেইট-এর মধ্যে চলে আসা দীর্ঘ বিবাদের সংযোগ দেখছেন অনেকে । লোভনীয় ছাড় দিয়ে অ্যামাজন যে ভাবে কম দামে পণ্য বিক্রি করে ভারতের বাজার দখল করছে, তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আপত্তি তুলে আসছে কেইট । বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূস গয়ালও তা নিয়ে অ্যামাজনের সমালোচনা করেছিলেন । আবার অ্যামাজন কর্তা জেফ বেজোস মোদী বিরোধী হিসেবেও পরিচিত । তাই বার বার অ্যামাজনকে নিশানা করার পিছনে অন্য ইঙ্গিত দেখছেন সমালোচকরা ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details