ভারতে যৌন স্বাস্থ্যের বিষয়টি এমনই যে বেশিরভাগই এই বিষয়ে কথা বলতে লজ্জা পান । বা বলা ভালো, এ'দেশে পরিবারের সামনে এই বিষয়ে আলোচনা করা একরকম নিষিদ্ধ । তবে আধুনিক যুগে, পরিবর্তিত মানসিকতার সঙ্গে নতুন প্রজন্ম এই নিয়ে কথা বলতে শুরু করছে সচেতনতা ছড়ানোর উদ্দেশে, যদিও তার বেশিটাই ডিজিটাল তথা সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে । এই সচেতনতা ছড়ানোর জন্যই প্রতি বছর 4 সেপ্টেম্বর, বিশ্ব যৌন স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হয়, যার এই বছরের থিম হল ‘COVID-19-এর সময়ে যৌন সুখ’ । 2010 সালে ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন ফর সেক্সুয়াল হেলথ (WAS) তাদের সমস্ত সংগঠনগুলিকে 4 সেপ্টেম্বর, ‘ওয়ার্ল্ড সেক্সুয়াল হেলথ ডে’ (WSHD) উদযাপন করার নির্দেশ দেয় । WAS জানিয়েছে, গোটা বিশ্বজুড়ে যাতে যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে সামাজিক সচেতনতা আরও বৃদ্ধি করা যায়, সেই লক্ষ্যেই তাদের এই উদ্যোগ । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলেছে, “যৌন স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে সঠিকভাবে পর্যালোচনা করতে হলে, যৌনতা এবং যৌন সম্পর্ককে ইতিবাচক এবং সম্মানজনকভাবে পর্যালোচনা করতে হবে । পাশাপাশি কীভাবে আনন্দজনক অথচ নিরাপদ যৌন সম্পর্ক বজায় রাখা যায় কোনওরকম জোর-জবরদস্তি, বৈষম্য এবং হিংসা ছাড়াই, তারও হদিশ দিতে হবে । একক ব্যক্তি হোন বা দম্পতি কিংবা পরিবার, সামগ্রিকভাবে প্রত্যেকের সুস্বাস্থ্যের দিকে মৌলিকভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সম্প্রদায় তথা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তরে উন্নয়নের দিকটিও মাথায় রাখতে হবে ।” সুতরাং, সামাজিকভাবে এটা মেনে নিতেই হবে যে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনও মানুষের যৌন আকাঙ্ক্ষা থাকাটা খুব স্বাভাবিক আর মানুষের জীবনের এটি একটি স্বাভাবিক অঙ্গ ।
যৌন সম্পর্কের ফলে সংক্রামিত রোগব্যাধি (STIs)
যৌন আকাঙ্ক্ষা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয় হলেও প্রত্যেকেরই জীবনে নিরাপদ যৌন সম্পর্ক থাকাটা খুব জরুরি । যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রামিত হয় এমন একাধিক ব্যাধি রয়েছে, যা সহবাসের ফলে ঘটতে পারে । WHO-এর মতে, বিশ্বে প্রতিদিন ১০ লাখেরও বেশি যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমণ (সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশনস - STIs) ছড়ায় ।
“৩০টিরও বেশি আলাদা আলাদা ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস এবং প্যারাসাইট যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রামিত হতে পারে । এই সব প্যাথোজেনের মধ্যে আটটিকে যৌন সম্পর্কের ফলে সংক্রামিত ব্যাধির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে ।” এগুলি হল–
1. সেরে ওঠা সম্ভব : সিফিলিস, গনোরিয়া, ক্ল্যামেডিয়া এবং ট্রিকোমোনিয়াসিস
2. সেরে ওঠা সম্ভব নয় : হেপাটাইটিস বি, হার্পিস সিম্প্লেক্স ভাইরাস (HSV বা হার্পিস), HIV এবং হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV)
“উপসর্গ বা রোগব্যাধি যা সেরে ওঠা সম্ভব নয়, এমন ভাইরাসজনিত সংক্রমণের ফলে হয়, চিকিৎসার মাধ্যমে তার হার কিছুটা হলেও হ্রাস করা সম্ভব ।”
এই ধরনের সংক্রমণ ওরাল, ভ্যাজাইনাল এবং অ্যানাল যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ঘটতে পারে । এই ধরনের সংক্রমণ ছাড়াও নিরাপদ নয় এমন সহবাসের ফলে বিশেষয় কমবয়সী মেয়েদের অবাঞ্ছিত গর্ভধারণও ঘটতে পারে ।
নিরাপদ সহবাসের টিপস
- সঙ্গীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করুন ।