যৌন মিলনের পর গর্ভধারণ আটকানোর অন্যতম উপায় হল ইমার্জেন্সি পিল সেবন । নামেই বোঝা যাচ্ছে, ইমারজেন্সি তথা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এর ব্যবহার হয় । এগুলি এক ধরনের পিল, মৌখিকভাবে যার সেবন হয় এবং তাও আবার তখন, যখন জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্য উপায়ে কোনও কাজ হয় না । এই ধরনের আপৎকালীন পরিস্থিতি হতে পারে ধর্ষণ, অসুরক্ষিত যৌন মিলনের সময় অথবা যৌন মিলনের সময় কোনওভাবে কন্ডোম ছিঁড়ে গেলে বা পিছলে গেলে ।
আমাদের বিশেষজ্ঞ, স্ত্রী ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিতা (হায়দরাবাদের তনভীর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত) । বলেছেন, “গর্ভনিরোধক হিসেবে এর সেবন দৈনন্দিন হারে হওয়া উচিত নয় এবং কেবলমাত্র আপৎকালীন পরিস্থিতিতেই এই পিল খাওয়া উচিত । এটা এক ধরনের ব্যাকআপ ।"
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজ়েশনের (WHO) এর মতে, "আপৎকালীন গর্ভনিরোধক (EC) অন্তত 95 শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভধারণ ঠেকাতে পারে, যদি যৌন মিলনের পাঁচ দিনের মধে্য তা সেবন করা হয় ।" যদিও যে কারণে একে শুধুমাত্র আপৎকালীন পরিস্থিতিতেই সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়, চিকিৎসক মিতার কথায় তা হল, "একটা ইমারজেন্সি পিলে যে পরিমাণ ওষুধ থাকে, তা সাধারণত 21 দিনের ওর্যাল কনট্রাসেপটিভ প্যাকেটে থাকে । ফলে দৈনন্দিন হারে এই পিল গ্রহণ ক্ষতিকারক হতে পারে ।"
কী ভাবে এটি কাজ করে?
তাঁর ব্যাখ্যা, “এই পিলে উচ্চ মাত্রায় প্রোজেস্টিন (প্রোজেস্টেরনের কৃত্রিম রূপ) থাকে । এটি সার্ভিক্যাল মিউকাসকে প্রগাঢ় করে দেয়, যার ফলে স্পার্ম তথা শুক্রাণু ডিম্বাণুর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না । তাছাড়াও এটি টিউবের সচলতা কমিয়ে দেয় এবং তার জেরে প্রতিস্থাপন হতে পারে না ।" তবে এটাও বুঝতে হবে যে ইমার্জেন্সি পিল তখনই কাজ করবে, যদি তা আগে নেওয়া হয় । গর্ভধারণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর এই পিল সেবনে কোনও কাজ হয় না এবং একে গর্ভপাতের উপায় বলে ভুল করা উচিত নয় । ইমারজেন্সি পিল জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপায়, গর্ভপাতের নয় ।