জয়পুর, 18 জুলাই : রাজস্থানে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বড় সমস্যার মুখোমুখি কংগ্রেস সরকার । প্রকাশ্য সংঘাতে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী । এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বে ফের একবার ঘি ঢালল BJP । সম্পূর্ণ অসাংবিধানিকভাবে একাধিক রাজনৈতিক নেতার ফোন ট্যাপ করছে সরকার । এই অভিযোগ তুলল BJP শিবির । এই নিয়ে CBI তদন্তের দাবিও জানিয়েছে তারা।
রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পাইলটকে । প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট কংগ্রেস ছেড়ে BJP-তে যোগ দেবেন বলেও জল্পনা শুরু হয় । সচিন পাইলট সে জল্পনা উড়িয়ে দিলেও দলবদল নিয়ে কানাঘুষো শেষ হচ্ছে না । এরই মধ্যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ফোন ট্যাপ করার অভিযোগ আনল BJP ৷
প্রসঙ্গত, গতকালই কংগ্রেসের তরফে বেশ কয়েকটি অডিয়ো ক্লিপ সামনে আনা হয় । সেখানে অভিযোগ করা হয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতসহ কয়েকজন নেতা রাজস্থানে অশোক গেহলটের সরকার ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত করছে ।
এবার কংগ্রেসের এই অভিযোগের পালটা এল BJP শিবির থেকে । দলের মুখপাত্র ম্বিত পাত্র বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী গেহলট ও বাকি কংগ্রেস নেতারা বলছেন, যে অডিয়ো ক্লিপগুলি সামনে এসেছে সেগুলি পুরোপুরি সত্য । কিন্তু, পুলিশ যে FIR করেছে, তাতে এমন কিছুই উল্লেখ নেই ।"
সম্বিত পাত্রর আরও দাবি, "কংগ্রেস হাইকমান্ড ও অশোক গেহলটের কাছে আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে । তাহলে কি ফোন ট্যাপিং হয়েছে ? ফোন ট্যাপ করা হলে, তা কি যথাযথ SOP নিয়ম মেনে করা হয়েছে? না কি কোণঠাসা হয়ে যাওয়া কংগ্রেস সরকার নিজেদের বাঁচাতে অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে ?"
ফোন ট্যাপিংয়ের ফলে রাজস্থানের আমজনতার গোপনীয়তাও লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান সম্বিত পাত্র । রাজস্থানে কি তবে পর্দার আড়ালে কোনও জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে ? প্রশ্ন তোলেন তিনি ।
এদিকে ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হতে শুরু করেছে রাজস্থানের রাজনৈতিক সংকটের পরিস্থিতি । সচিনের বিদ্রোহে টালমাটাল রাজস্থান সরকার ৷ এরইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী গেহলট দাবি করেন, বিগত 18 মাস ধরে সচিন পাইলটের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি । বলেন, "শুরু থেকেই যদি কোনও মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলেন, তাঁর কথা না শোনেন, কোনওরকম আলাপচারিতায় না যান, তবে বিরোধ হবেই । গণতন্ত্রে দু'পক্ষের মধ্য কথা বলাটা খুবই দরকার ।" তবে বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা BJP-তে যোগ দেবেন না বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করছেন, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন গেহলট । পাইলট যদি দলে ফিরতে চান তবে তাঁকে আলিঙ্গন করে স্বাগত জানাবেন বলেও জানিয়েছেন গেহলট ।
কংগ্রেসের এই টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজস্থানের BJP নেত্রী বসুন্ধরা রাজেও । বলেছেন, "কংগ্রেসের এই অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল ভুগতে হচ্ছে রাজ্যের আম জনতাকে । আর দোষ চাপানো হচ্ছে BJP-র উপর । এটা খুবই দুঃখজনক । "
