লেহ, 3 জুলাই : সকালে নাম না করে চিনকে আগ্রাসী ও বিস্তারবাদী বলে আক্রমণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । এবার বিকেলে হাসপাতালে গালওয়ানে জখম সেনাদের দেখতে গিয়ে বললেন, "বিশ্বের কোনও শক্তির কাছে ভারত মাথানত করেনি । করবেও না ।"
চিন-ভারত সংঘর্ষের আবহে আজ ভোরে লাদাখ পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি । তাঁর সঙ্গে ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত এবং সেনাপ্রধান এম এম নারাভনে । সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে স্থলসেনা, বায়ুসেনা এবং ITBP-র জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি । সেনা আধিকারিকরা তাঁকে পরিস্থিতির কথা জানান ।
এরপর প্রধানমন্ত্রীকে লাদাখ সীমান্তের পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন জেনেরাল বিপিন রাওয়াত । তাঁকে সীমান্ত পরিস্থিতির কথা জানান । পরে বিকেলে গালওয়ানে জখম সেনাদের দেখতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী । সেখানে গিয়ে বলেন, "বিশ্বের কোনও শক্তির কাছে ভারত মাথানত করেনি । আমি এটা বলতে পারছি আপনাদের মতো বীরদের জন্যই ।"
তিনি আরও বলেন, "আমি এখানে এসেছি আপনাদের সকলে ধন্যবাদ জানাতে । কোনও শক্তির কাছেই আমাদের দেশ ঝোঁকেনি । ঝুঁকবেও না । আমি আপনাদের সম্মান জানাই । পাশাপাশি আপনাদের যাঁরা জন্ম দিয়েছেন তাঁদেরও সম্মান জানাই । আশা করি সকলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন । "
জখম সেনাদের দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী সেনা জওয়ানদের সাহসিকতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, "যাঁরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাঁরা যথাযথ জবাব দিয়ে গেছেন । আপনারা দেশের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন, সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা দেশবাসী তো মনে রাখবেই, আগামী প্রজন্মও মনে রাখবে ।" প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "আপনারা হাসপাতালে আছেন তাই হয়তো জানেন না, আপনাদের জন্য 130 কোটি ভারতবাসী গর্বিত । আপনাদের বীরত্ব বিশ্বের কাছে বার্তা দিয়েছে ভারত মাথা নত করে না । আপনারা যেভাবে অন্য শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তা দেখে বিশ্ব জানতে চাইছে এই বীররা কারা? তাঁদের আত্মত্যাগই বা কী ? তাঁরা কী এমন প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন ? বিশ্ব আপনাদের বীরত্বের কথা জানতে চাইছে ।"
সেনা জওয়ানদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী চলতি বছর লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে চিন এবং ভারতের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয় । মধ্যস্থতায় সম্মতি দেয় দুই দেশই । কিন্তু এরই মধ্যে 15 জুন গালওয়ান উপত্যকায় চিন এবং ভারতীয় সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বাধে । ভারতের 20 জন জওয়ান শহিদ হন । এরপরই ভারতের প্রায় প্রতি রাজ্যে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । চিনা দ্রব্য বয়কটের ডাক দেয় সাধারণ মানুষ । একাধিক জায়গায় চিনা প্রেসিডেন্টের কুশপুত্তলিকা দাহ হয় ।
সম্প্রতি 59 টি চিনা অ্যাপকে দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার । এছাড়াও চিনের সঙ্গে একাধিক চুক্তি বাতিল হয়েছে ইতিমধ্যেই ।