হাথরস, 7 অক্টোবর : হাথরস মামলার তদন্তে আরও দশদিন সময় হাতে পেল বিশেষ তদন্তকারী দল বা স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন (SIT) টিম । এই মামলায় আজ একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল । তবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে তাদের আরও দশদিন সময় দেওয়া হল।
গতকাল তিন সদস্যের SIT ওই যুবতির গ্রামে যায় । যেখানে তার উপর হামলা হয়েছিল এবং যেখানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল, সেইসব জায়গা খতিয়ে দেখে । এই দলটির সঙ্গে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞও ছিলেন ।
গতকাল তদন্তকারী দলের তরফে জানানো হয়েছিল , আগামীকাল নাগাদ তদন্ত শেষ হবে । আশা করছি , আগামীকাল রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে পারব । যদি আমরা কোনও কারণে তদন্ত শেষ করতে না পারি, তবে আরও একদিন বা দু'দিন সময় নিতে পারি । " এরপরই আজ তদন্তে আরও দশদিন সময় হাতে পেল তদন্তকারী দল ।
হাথরসের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে কম জলঘোলা হয়নি ৷ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে বিরোধীরা সরব হয়েছে ৷ তারমধ্যেই কয়েকদিন আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে জানানো হয়, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি ৷ আর এরপর ফরেনসিক রিপোর্টেও একই কথা জানানো হয় ৷ বলা হয় , "যুবতিকে ধর্ষণ বা গণধর্ষণ করা হয়নি ।" আগ্রার ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে ওই যুবতির নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৷ তখনই ফরেনসিক দল জানায়, ধর্ষণ হয়নি তাঁর ৷ যদিও ঘটনার 11 দিন পর নমুনা পরীক্ষা কতটা সঠিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা ।
এর আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ দাবি করে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যুবতির ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি ৷ ঘাড়ে আঘাত পেয়ে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর পুলিশের বক্তব্য, ফরেনসিক রিপোর্টেও ধর্ষণের কোনও চিহ্ন নেই ৷ এর থেকে প্রমাণিত কিছু মানুষ জাত-পাতের ভিত্তিতে বিষয়টিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে ৷ তবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ এদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতামত ভিন্ন ৷ তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার এগারো দিন কেটে যাওয়ার পর যুবতির নমুনা আগ্রার ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয় ৷ এতদিন বাদে স্বাভাবিকভাবেই কোনও প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে না ৷
14 সেপ্টেম্বর মা ও দাদার সঙ্গে প্রতিদিনের মতো ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন যুবতি ৷ অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে পাশের একটি জমিতে নিয়ে যায় ও গণধর্ষণ করে চারজন৷ জিভ টেনে ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় ৷ তাঁর জিভে গভীর ক্ষত ছিল । JNMC-এ চিকিৎসা চলছিল যুবতির । অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সেখান থেকে পরে AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হয় । চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবতির শিরদাঁড়ায় গুরুতর আঘাত ছিল । যার জন্য তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন । শ্বাসও নিতে পারছিলেন না যুবতি । অবশেষে 29 সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর ৷