প্রায় 200 বছর এই গ্রামে দীপাবলিতে প্রদীপ জ্বলেনি । উদযাপন হয়নি আলোর উৎসব ।
এই বছর কোরোনা প্যানডেমিকে অবশ্যই উৎসবের আলো হয়ত কিছুটা ফিকে হবে । সেইভাবে পুড়বে না আতসবাজি । কারও বাড়িতে কয়েকটা প্রদীপ কম জ্বলবে । কিন্তু এই গ্রামটি, এই গ্রামটি যে 200 বছর ধরেই উদযাপন করেনি দীপাবলি । আলোর দিনেও অন্ধকারে থাকে গ্রাম ? এ কোন গ্রাম ?
অন্ধ্রপ্রদেশে রণস্থল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পোন্নানাপালেম গ্রাম । দীপাবলি পালন না করাই তাদের রীতি । কোনও আনন্দ উৎসব হয় না, এদের কাছে দীপাবলির দিন অন্যান্য দিনের মতোই সাধারণ । কিন্তু কেন জ্বলে না আলো ? 200 বছরেও কি কেউ এই রীতি পালটাতে চায়নি ?
এক বিশ্বাস বা নিছকই কুসংস্কার ! আমাদের কাছে তা কুসংস্কার মনে হলেও, পোন্নানাপালেম গ্রামের বাসিন্দারা কিন্তু মনেপ্রাণে তা বিশ্বাস করেন । অনেক অনেক বছর আগে চতুর্দশীর দিন থেকে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দীপাবলি পালন হত গ্রামে । দীপাবলির পরবর্তী চতুর্থীতে পালন হত নাগ চতুর্থী । একবার নাগ পুজোর উৎসবে গ্রামের এক শিশুর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় । একইদিনে অপঘাতে মারা যায় দু'টি ষাঁড় । গ্রামবাসীর মনে কুসংস্কার ও ভীতি জন্মায় । তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, দীপাবলি ও নাগ চতুর্থী পালন করলে গ্রামে অকল্যাণ হবে । হয়ত মৃত্যু হবে আরও ।
সেই থেকেই নাগ চতুর্থী ও দীপাবলি পালন বন্ধ হয়ে যায় গ্রামটিতে । নতুন প্রজন্ম আবার দীপাবলি উদযাপনের কথা তুললেও রাজি হননি গ্রাম প্রধান । গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, কয়েক বছর আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে দীপাবলি পালন করেছিলেন তিনি । কয়েকদিন পর তাঁর ছেলের মৃত্যু হয় ।
তবে ? সত্যিই কি দীপাবলি উদযাপনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোনও অপমৃত্যু বা অভিশাপ ? না কি নিছকই কুসংস্কার ? জানা নেই । তবে একথা জানা আছে যে, এবছর যখন অন্যান্য জায়গায় দীপাবলি পালন হবে । জ্বলবে প্রদীপ । আতসবাজি হবে । অন্ধকারেই থাকবে অন্ধ্রপ্রদেশের এই গ্রাম ।