দিল্লি, 15 জানুয়ারি : রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে রুদ্ধদ্বার আলোচনায় বসতে চলেছে ৷ কাশ্মীর ইশুতে এই নিয়ে গত ছয় মাসে দ্বিতীয়বার রুদ্ধদ্বার আলোচনা করছে নিরাপত্তা পরিষদ ৷ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র (যাদের ভেটো প্রয়োগ করার অধিকার আছে) ও দশটি অস্থায়ী সদস্য দেশ নিউ ইয়র্কে ওই আলোচনায় অংশ নেবে ৷ অনুমান করা হচ্ছে, কাশ্মীর থেকে 370 ধারা প্রত্যাহার করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণার ফলে কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতির ইশুটি আলোচনায় তুলতে পারে চিন ৷
পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে চিন কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ ও রাজনৈতিক কারণে গৃহবন্দি করে রাখার মতো ইশুগুলি নিয়েও আলোচনা করতে পারে ৷ তবে, এই আলোচনা থেকে কোনও দিকনির্দেশ বা সমাধান আসার সম্ভাবনা নেই বললেই ভালো হয় ৷ এই রুদ্ধদ্বার আলোচনায় যে বিষয়গুলি উঠবে তার পুরোটাই নিরাপত্তা পরিষদের সভায় আলোচিত বিষয়সূচি হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে ৷ মোদি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে পরেই গত বছরের অগাস্টে নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনাতেও এই একই ঘটনা ঘটেছিল ৷
অন্যদিকে ফ্রান্স আগেই জানিয়ে দিয়েছিল কাশ্মীর হল ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ইশু ৷ এ'বারও ফ্রান্স নিজেদের সেই সিদ্ধান্তেই অনড় থাকবে বলে জানা গেছে ৷ ফ্রান্সের সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, "আলোচনায় কাশ্মীর ইশু আরও একবার উত্থাপন করার জন্য ফ্রান্সকে অনুরোধ করেছে নিরাপত্তা পরিষদের এক সদস্য রাষ্ট্র (চিন) ৷ তবে, ফ্রান্সের এ'বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট এবং এটা পরিবর্তন হবে না ৷ কাশ্মীর ইশু একমাত্র দ্বিপাক্ষিক স্তরেই সমাধান সম্ভব ৷ এ'কথা আমরা আগেও বহুবার বলেছি ৷ "
নতুন বছরের শুরুতে গত শুক্রবার কাশ্মীর ইশু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরঁ ৷ অ্যামেরিকা, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত-সহ বিদেশি দূতেদের জম্মু সফরের ঠিক পরের দিনই মোদির সঙ্গে কথা হয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের ৷ ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, "ভারত ও ফ্রান্সের সুসম্পর্কের উপর ভিত্তি করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ৷ ফ্রান্স এই বিষয়ের (কাশ্মীর পরিস্থিতি) দিকে নজর রাখছিল ৷"
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদেরকেও জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে ভারত সরকার ৷ ওই প্রতিনিধি দলের মধ্যে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতও থাকবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে ৷ কিছুদিন আগেই জানা গিয়েছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতেরা রাজি হচ্ছেন না কারণ তাঁরা কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ ও গৃহবন্দী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বিনা বাধায় কথা বলতে চেয়েছিলেন ৷ তবে, এই কানাঘুষো উড়িয়ে দিয়ে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে এখনও কথাবার্তা চলছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলির সঙ্গে এবং রাষ্ট্রদূতেরা যাতে পরিদর্শনে যেতে পারেন তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷