মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধির 150তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের উদ্যোগ শুরু হয়েছে সর্বত্র । এই বিষয়ে ETV ভারতের তরফে যোগাযোগ করা হয় মহাত্মা গান্ধির নাতি তুষার গান্ধির সঙ্গে । ETV ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তুষার জানান, তাঁর দাদু বেঁচে থাকলে আজকের সমাজের এই অসহিষ্ণুতা জন্মানোর আগেই নির্মূল করে দিতেন ।
গান্ধির জন্মবার্ষিকী পালনে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগ সত্ত্বেও BJP-র কয়েকজন নেতা গান্ধির হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমিক ও নায়ক হিসাবে তুলে ধরেছেন সাম্প্রতিককালে । মহাত্মা গান্ধির হত্যাকারী গডসেকে নায়ক হিসাবে তুলে ধরার বিষয়টিকে আশঙ্কাজনক আখ্যা দিয়ে তুষার বলেন, "এটা খুব স্পষ্ট যে ভারতে গডসে আজ এক নায়ক । বর্তমানে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে । এটা একটা অসুখ । তবে এই অসুখেরও ওষুধ আছে ।"
বিশ্বব্যাপী অসহিষ্ণুতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তুষার গান্ধি বলেন, "আজকাল কোনও মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া খুব স্বাভাবিক একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । সবাই এটাকে মেনে নিয়েছে । যারা এই বিষয়টাকে মেনে নিতে পারেন না, তাঁরা নীরব । এই নীরবতা সমাজের জন্য খুবই ভয়ানক ।
একসময় মনে হয় যেন আমাদের আর কোনও আশা নেই । বিশ্বের সর্বত্রই যেন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে উগ্রবাদ । চরমপন্থা এবং অসহিষ্ণু আদর্শ বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে ।"
মহাত্মা গান্ধির 150তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেন্দ্রের তরফে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের উপর বেশি জোর দেওয়া হলেও এই অভিযানকে গান্ধির মতাদর্শের আংশিক অভিযোজন বলে মনে করেন তুষার । তিনি বলেন, "হ্যাঁ, স্বচ্ছতা খুবই প্রয়োজনীয় বিষয় । তবে তার থেকেও বেশি প্রয়োজন দেশবাসীর মধ্যে ভ্রাতৃপ্রেম । বাহ্যিকভাবে সমাজকে পরিষ্কার করা খুব সহজ, কিন্তু ভিতর থেকে প্রত্যেককে স্বচ্ছ করে তোলা সহজ নয় ।"
মহাত্মা গান্ধি ফাউন্ডেশনের সভাপতি তুষারের মতে ভারতের বর্তমান আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় মহাত্মা গান্ধির আদর্শ, জীবন ও শিক্ষা অনুকরণীয় । তিনি বলেন, "বর্তমান বিশ্বের অস্থির জীবনধারাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে গান্ধির মতাদর্শ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই ।"