পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

নিষিদ্ধ হোক তামাকজাত দ্রব্য, বাঁচবে দেশ

COVID-19 রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে, ধূমপায়ীদের নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের তুলনায় 14 গুণ বেশি ।

Tobacco should banned from India
তামাকজাত দ্রব্য

By

Published : Apr 16, 2020, 9:03 PM IST

তামাকের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত ভারতের ৷ COVID-19 এর প্রকোপ থেকে নাগরিকদের বাঁচাতে বিশ্ব জুড়ে সব দেশই আপ্রাণ চেষ্টা করছে । এই অতিমারীতে বিশ্বজুড়ে ইতিমধ্যেই এক লাখ 30 হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে । আক্রান্ত 20 লাখেরও বেশি । সংক্রমণ ঠেকাতে যে সব দেশ সম্পূর্ণ লকডাউনের রাস্তায় হেঁটেছে, তাদের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতেই রয়েছে ভারত । কেন্দ্রের দাবি, তিন সপ্তাহের লকডাউনের ফলে আট লাখ 20 হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে । সংক্রমণের গতি কমাতে কেন্দ্র আরও কিছু ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছে ।

নোভেল কোরোনা ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে প্রকাশ্যে তামাকের ব্যবহার (খাওয়া বা ধূমপান) বন্ধের জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক । বিহার, ঝাড়খণ্ড, তেলাঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, নাগাল্যান্ড এবং অসম ইতিমধ্যেই সেই নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে শুরু করেছে । বাকি রাজ্যগুলিকেও এই সব রাজ্যের দেখানো পথে চলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র । গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের 24 কোটি জনসংখ্যার মধ্যে পাঁচ কোটি 30 লাখ মানুষ কোনও না কোনওভাবে তামাক খান । টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের একটি রিপোর্ট বলছে, সিগারেট এবং বিড়ির ব্যবহার কিছুটা কমলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে খৈনি (15.9 শতাংশ), গুটখা (11.5 শতাংশ), সুপারি (10.2 শতাংশ) এবং পান মশলা (7.2 শতাংশ)-র ব্যবহার বেড়েছে ।

চিবিয়ে খাওয়ার এই সব তামাকজাত পদার্থের জন্য ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় এবং ইসোফেগাসে ক্যানসার হচ্ছে । এ বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই যে, তামাক খাওয়া মানুষের COVID-19 হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি । COVID-19 রোগীদের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে, ধূমপায়ীদের নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের তুলনায় 14 গুণ বেশি । এই আবহে আইন করে তামাকের ব্যবহার একেবারে বন্ধ করে দেওয়া উচিত । আজ থেকে 15 বছর আগে জন স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সরকারকে অবগত করেছিল সুপ্রিম কোর্ট । কিন্তু মদ ও তামাক থেকে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আশায় সরকারের কাছে নাগরিকদের প্রাণের মূল্য যেন কমে গিয়েছে ।

মন্ত্রকেরই একটি হিসেব বলছে, প্রতি বছর ভারতে 85 হাজার পুরুষ এবং 35 হাজার মহিলা মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন । এই সংখ্যার প্রায় 90 শতাংশ তামাক সেবনকারী । সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর সরকার চিবিয়ে খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত তামাকজাত বস্তু, যেমন খৈনি, জর্দা এবং গুটখা সেবন নিষিদ্ধ করে । কিন্তু, যেহেতু এই আদেশ কাগজের পর্যায়েই সীমাবদ্ধ ছিল, তাই 2016 সালে সুপ্রিম কোর্ট ফের সরকারকে জনস্বাস্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করে । তামাকের নেশা কোন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, তা ড্রোনের মাধ্যমে গ্রাহকের অর্ডার দেওয়ার ঘটনা থেকেই বোঝা যায় । কানপুরকে কেন্দ্র করে 100-রও বেশি ব্র্যান্ডের গুটখা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রপ্তানি করা হয় ।

ধূমপায়ী এবং তামাক চিবিয়ে খাওয়া ব্যক্তিদের যক্ষ্মা ও নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি । নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এই সব ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যের অবস্থার আরও অবনতি হবে । সমস্যা আর না বাড়াতে সরকারের উচিত, লকডাউনের এই সময় শুধুমাত্র তামাকের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা না চাপিয়ে এর উৎপাদনই বন্ধ করে দেওয়া । তামাকের উৎপাদন ছেড়ে কৃষকরা যখন বিকল্প চাষ শুরু করবেন, তখনই গোটা দেশ কিছুটা বিশুদ্ধ বাতাসের নিঃশ্বাস নিতে পারবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details