ভারত ও চিনের LAC (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা) বরাবর সীমান্ত উত্তেজনা চতুর্থ সপ্তাহে পড়ল ৷ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, চিন ইতিমধ্যে চার হাজার ট্রুপ সেনা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম এনে হাজির করেছে ৷ অস্বাভাবিকভাবে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার জেরে ভারত ও চিনের একাধিক সেনা জওয়ান আহত হয়েছেন ৷ বেজিংয়ের শীর্ষস্তর থেকে ছাড়পত্র না এলে এই ধরনের পরিকল্পিত অনুপ্রবেশ ঘটা সম্ভব নয় ৷ উহান এবং মহাবলিপুরমের যে ঘরোয়া বৈঠক হয়েছিল, সেখানে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি করার বিষয়টি কী হল ? এখন কেন ? অতীতের কিছু ঘটনা পরপর সাজানো হল ৷
বিশ্বজুড়ে চিনকে যেভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেটা তারা একেবারেই সহ্য করতে পারছে না ৷ তারা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় দাঁড়িয়ে ৷ 1918-20 সালের স্প্যানিশ ফ্লু-এর পর মানবতার জন্য সবচেয়ে মারাত্মক মহামারীর জন্মস্থান হিসেবেই চিনকে ধরে নেওয়া হয়েছে ৷ বিদেশি বিনিয়োগ ও শিল্প ক্রমশ সেখান থেকে সরে যাচ্ছে ৷ UN-এর নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিয়ে চিন কোরোনা ভাইরাস মহামারীর জেরে বিপুল ক্ষতি নিয়ে আলোচনা আটকাতে পেরেছে ৷ কিন্তু EU-এর তরফে ওয়ার্লড হেল্থ অ্যাসেম্বলি (মে 18-19)-তে যে খসড়া প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে, তা তাদের নাড়িয়ে দিয়েছে ৷ ওই খসড়া প্রস্তাবে সমর্থন করেছে আরও 120টি দেশ ৷ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের হাতে কোনও বিকল্প ছিল না ৷ তাই তিনি ব্যাপক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে বাধ্য হন ৷ তিনি সেটাই করেছেন, যেটা চিন করতে জানে ৷ সমস্যার উপর টাকা ছুঁড়ে দিয়েছেন ৷ আফ্রিকায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ার কাজে সাহায্য করার জন্য দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৷
বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার লড়াইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায় ৷ অ্যামেরিকার নিজস্ব উচ্চ-প্রযুক্তি গতি পেয়েছে এবং বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতাও শুরু হয়েছে ৷ মানুষের মনোভাব একেবারে চিনের বিরুদ্ধে ৷ চিনের নেতৃত্ব খুব চাপের মধ্যে রয়েছে এবং অ্যামেরিকা কংগ্রেস চিনের কাছ থেকে দুই বা তার বেশি ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ আদায়ে খসড়া প্রস্তাব আনতে চলেছে ৷ গোটা বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে বিদেশমন্ত্রী ওয়্যাং ই জানিয়েছেন যে অ্যামেরিকা রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়াচ্ছে ৷ এর মাধ্যমে তারা "চিনকে আক্রমণ ও কোণঠাসা করার সমস্ত সুযোগ ব্যবহার করছে ।"
এই ধরনের পরিস্থিতিতে যে কোনও দেশই নিজেদের নীরব রাখতে চাইবে এবং চাইবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে থাকতে ৷ চিনের সঙ্গে নয় ৷ তারা দক্ষিণ চিন সাগরে নতুন করে আগ্রাসী মনোভাব নিয়েছে ৷ তাইওয়ানের সঙ্গে নতুন করে সংযোগ স্থাপন করছে ৷ বিদ্রোহীদের দমন করে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন বন্ধ করতে নতুন নিরাপত্তা আইন এনেছে ৷ মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও 'ঘটনাস্থানের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে' ঘোষণা করেছেন হংকং আর স্বশাসিত থাকবে না৷ তাদের উপর নিষেধাজ্ঞার পথ প্রশস্ত হচ্ছে ৷