যাঁরা মানুষের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন বিপন্ন করতে পিছপা হননি -
কোনও নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব হলে, চিকিৎসক এবং বৈজ্ঞানিকরা এগিয়ে আসেন ওষুধ খুঁজতে । প্রথমে তাঁরা পশুদের উপর পরীক্ষা করে দেখেন ৷ ওষুধ কেমন কাজ করছে । কিন্তু, অনেক বৈজ্ঞানিক এবং চিকিৎসক এমনও আছেন, যাঁরা নিজেদের উপর এই সব ওষুধের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন ৷ তা করতে গিয়ে নিজেদের জীবনেও বিপদ ডেকে এনেছেন । গবেষণা করতে গিয়ে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারের মুখে পড়েছেন ৷ এমন কিছু দৃষ্টান্ত দেওয়া হল ৷
ইয়েলো ফিভারে মৃত্যু -
1881 সালে ডা. কার্লোস গবেষণা করে জানেন , প্রাণঘাতী ইয়েলো ফিভারের মূল কারণ হল মশার কামড় । মার্কিন সেনাবাহিনীর চিকিৎসকরা তা প্রমাণ করতে এগিয়ে আসেন । মেডিকেল সায়েন্টিস্ট ওয়াল্টার রিডের নেতৃত্বে 1900 সালে ইয়েলো ফিভারের কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেন চিকিৎসক জেমস কেরল, অ্যারিসটিডস আগ্রামন্টে এবং জেসি উইলিয়াম লাজিয়ার । আর তা করতে গিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মশার কামড় খান কেরল এবং লাজিয়ার । এরপর দু’জনেরই ইয়েলো ফিভার হয় । কিছুদিন পরে লাজিয়ারের মৃত্যু হয় । কেরল তখন সুস্থ হয়ে উঠলেও 7 বছর পর একই রোগে তাঁরও মৃত্যু হয় । কিন্তু তাঁদের এই আত্মোৎসর্গ বহু মানুষকে ইয়েলো ফিভারের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল ৷
নিজের অস্ত্রোপচার নিজেই করেছিলেন যাঁরা -
তখনকার দিনে অস্ত্রোপচার করতে হলে গোটা শরীরে অ্যানাস্থেসিয়া করতে হত। কিন্তু একজন মহান চিকিৎসক বলেন, তা করা নিষ্প্রয়োজন । আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার চিকিৎসক, ডা. ও’নিল কেন চেয়েছিলেন, অস্ত্রোপচারের এই পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে । তাঁর একটি আঙুলে এক ধরনের সংক্রমণ হয়েছিল । কিন্তু তিনি কেবল সেই আঙুলটিতেই অ্যানাস্থিসিয়া করেন এবং নিজে নিজেই তাতে অস্ত্রোপচার করেন । আবার 1921 সালের 15 ফেব্রুয়ারি তিনি নিজের পেটে লোকাল অ্যানাস্থেসিয়া করেন ৷এরপর নিজেই সফলভাবে অ্যাপেনডেকটমির অস্ত্রোপচার করেন । তখন তাঁর বয়স ছিল 60 বছর । 10 বছর পর তিনি নিজের উপর তৃতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন ৷ তারপর 36 ঘণ্টার মধ্যেই কাজে যোগ দেন । তাঁর এই সব অ্যাডভেঞ্চার, লোকাল অ্যানাস্থিসিয়ার প্রক্রিয়াকে গোটা পৃথিবীজুড়ে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছিল ।