গুজরাত, 25 মে : তখন ক্লাস চলছে পুরোদমে । হঠাৎ আগুনের ঝলকানি । ধোঁয়া বেরোতে শুরু করেছে গলগল করে । নিচে যাওয়ার পথ বন্ধ । অতএব ! প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই । একে একে মরণঝাঁপই মৃত্যু মুখে ঠেলে দিল ওদের । কয়েকজন বাঁচল বরাতজোরে । তাদের চোখে-মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট ।
সুরাতের সারথানা এলাকায় তক্ষশীলা কমপ্লেক্সে চলত চারটি কোচিং সেন্টার । ওই বহুতলের উপর দুটি তলায় গতকাল দুপুরে আনুমানিক সাড়ে তিনটে নাগাদ আগুন লেগে যায় । প্রায় 60 জন ছাত্র-ছাত্রী তখন ওই চারটি কোচিং সেন্টারে উপস্থিত ছিল । প্রাণ বাঁচাতে একে একে ঝাঁপ দিতে শুরু করে তারা । কয়েকজনের মৃত্যু হয় । কয়েকজন আহত হয়ে এখন হাসপাতালে ভরতি । এরমধ্যে একজন উর্মিলা প্যাটেল । তার মাথা, কোমর ও পায়ে আঘাত লেগেছে । বর্তমানে পিপি সাবানি হাসপাতালে ভরতি উর্মিলা ।
কাল দুপুরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে উর্মিলা বলে, "আমরা তখন পড়ছিলাম । হঠাৎ দেখি কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে এলাকা । সব কিছু যেন অন্ধকার হয়ে গেল । নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না । সাহায্যের জন্য চিৎকার করলাম । কিন্তু, সবাই তো দৌড়াচ্ছে । এই সময় মা-কে মনে পড়ছিল । দৌড়ালাম সিঁড়ির দিকে । কিছুই দেখতে পাইনি । ফিরে এলাম । তখন দেখি, একে একে সবাই ঝাঁপ দিচ্ছে । নিজেকেও শক্ত করে বললাম, আমাকে বাঁচতে হবে । ঝাঁপ দিলাম । তারপর আর কিছু মনে নেই । আজ সকালে চোখ খুলে দেখি আমি হাসপাতালে ।"
ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পর দমকল আসে । তখনও আগুনের লেলিহান শিখায় টিকে থাকা দায় । প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র হিমান্ত জয়ানির কথায়, দমকল তো এসেছিল । কিন্তু, উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ছিল না । ওদের ল্যাডার তিনতলা পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছিল না । জালও ছিল না । নাহলে বেশ কয়েকজনকে বাঁচানো যেত ।