পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

ছাত্র ভিসায় বদল ট্রম্পের বিদ্বেষমূলক অভিবাসন নীতির অংশ

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বদল এনেছেন ছাত্র ভিসায় । সন্দেহ নেই প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ ছাত্রদের সমস্য়ায় ফেলবে । ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক পদক্ষেপের বিষয়ে নিজের মত জানালেন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মেট্রোপলিটন মিউজ়িয়াম অফ আর্টের প্রাক্তন চিফ ডিজিটাল অফিসার শ্রীনিবাসন । সাক্ষাৎকার নিলেন স্মিতা শর্মা ।

Student Visa Changes Part Of Trump Racist Immigration Policy
ছাত্র ভিসায় বদল ট্রম্পের বিদ্বেষমূলক অভিবাসন নীতির অংশ—দাবি বিশেষজ্ঞদের

By

Published : Jul 9, 2020, 2:16 PM IST

সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক ঘোষণার পর আমেরিকায় আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের মধ্যে তুমুল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । আমেরিকায় পাঠ্যসূচিগত শিক্ষার পাঠ নিচ্ছেন, এমন F-1 অ-অভিবাসী পড়ুয়া ও কারিগরি শিক্ষা নিচ্ছেন M1 অ-অভিবাসী পড়ুয়াদের জন্য স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (SEVP) সোমবার অস্থায়ী কিছু সংস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে । এতে অধিকাংশ চিনা পড়ুয়া ও প্রায় দুই লাখ ভারতীয় পড়ুয়ার উপর প্রভাব পড়বে । কারণ শীতকালীন সেমেস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি তাঁদের জন্য কোনও ক্যাম্পাস কোর্স না রাখে, তাহলে তাঁদের অ্যামেরিকা ছাড়তে হবে । এবিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা এখনও আসেনি । তবুও দ্য স্টোনি ব্রুক স্কুল অফ জার্নালিজ়মের ডিজিট্যাল ইনোভেশনের ভিজিটিং প্রফেসর শ্রী শ্রীনিবাসন মনে করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই এই বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করা হয়েছে । এটি আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে অধিগৃহীত বিদ্বেষমূলক অভিবাসন নীতিরই অংশ । ইন্দো-আমেরিকান কণ্ঠ হিসাবে সুপরিচিত শ্রীনিবাসন হলেন সিটি অফ নিউ ইয়র্ক এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মেট্রোপলিটন মিউজ়িয়াম অফ আর্টের প্রাক্তন চিফ ডিজিটাল অফিসার । তাঁর যুক্তি, ছাত্র ভিসা, ও H1B ও L1 ভিসায় সর্বনাশা বদল এনে ট্রাম্প আদপে নিজের ‘রক্ষণশীল এবং বিদেশি - বিরোধী নির্বাচনীক্ষেত্র’- কেই তোষণ করে চলছেন ।

নিউইয়র্ক থেকে সাংবাদিক স্মিতা শর্মাকে শ্রীনিবাসন জানিয়েছেন, অভিবাসন নীতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে যে বদল আনা হয়েছে, তা ইন্দো-অ্যামেরিকান সম্প্রদায়ের কাছে ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার সময় । এই সম্প্রদায় ট্রাম্পের স্বজাতিয় ভোট ব্যাঙ্ক নয়, যদিও এঁদের বেশিরভাগই ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিরীহ প্রার্থী বলে মনে করেছিলেন । প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই বছরে আমেরিকার আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কী কী বদল আসতে চলেছে এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজ়েশন ও তার মতো অন্যান্য বিশ্বব্যাপী সংগঠন এবং আরও বড় বড় বিশ্বব্যাপী চুক্তি থেকে অ্যামেরিকার বেরিয়ে আসার ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে তাদের অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে-এ সব নিয়ে স্মিতা শর্মা অধ্যাপক শ্রীনিবাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন ।

প্রঃ F1 ভিসায় সংস্কার ঠিক কীভাবে হয়েছে তা বুঝিয়ে বলবেন? এর মানে কি এই যে, শীতকালীন সেমেস্টারের জন্য ক্যাম্পাস যদি পুরোপুরি অনলাইনে পরিচালিত হয় তাহলে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আমেরিকা ছাড়তে হবে?

উঃ চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চলছে আর ট্রাম্প প্রশাসন এটাই করে আসছে । বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য । এই সব বিশৃঙ্খলতা, গুজব, ভ্রান্ত খবর ছড়ানো, জোর করে বিদ্বেষমূলক ও অন্যান্য নীতি—নির্দেশিকা - সব কিছু একই সময়ে ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার ফলেই আমরা দেখছি, স্বাস্থ্য ও আর্থিক ক্ষেত্রে অ্যামেরিকা কীভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে । আবার বর্ণবৈষম্যমূলক অবিচারের ঘটনাতেও বিশ্বে তাদের মুখ পুড়েছে । সকলের বোঝা উচিত যে অভিবাসনের প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি এবং যেভাবে ধাপে ধাপে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন পদক্ষেপ করে চলেছেন তাতে প্রতে্যকের চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে । আমরা আশাবাদী যে, এবিষয়ে ভবিষ্যতে আরও স্পষ্টতা আসবে । কিন্তু পড়ুয়াদের সামনে দু’টো বিকল্প রয়েছে । হয় তাঁদের অ্যামেরিকা ছেড়ে চলে যেতে হবে বা এমন কোনও স্কুলে ট্রান্সফার করতে হবে যেখানে ছাত্র—শিক্ষক মুখোমুখি ক্লাস বেশি হয় । সুখবর এটাই যে অনেক স্কুলে ধীরে ধীরে আবার এই ধরনের ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে । আবার খারাপ খবর হল, শীতকালীন সেমেস্টারে যা এদেশে তাড়াতাড়ি শুরু হয়, অনেক ছাত্রছাত্রীরা অসুবিধায় পড়বে । তবে যেহেতু গোটা বিষয়টি নিয়ে এত জটিলতা রয়েছে, তাই সম্ভবত পরে কিছু সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হতে পারে । কিন্তু এর কোনওটাই চমকে দেওয়ার মতো নয় । অ্যামেরিকার উচ্চ স্তরীয় প্রশাসন অভিবাসন বিরোধী । এর আগে যাঁরা অ্যামেরিকায় এসে সফল হয়েছেন তার পিছনে দু’টি কারণ রয়েছে । এক অভিবাসন নীতি আর দুই সেই সব পড়ুয়াদের কৃতিত্ব যারা এখানে এসেছে, পড়াশোনা করেছে, থেকেছে এবং কিছু করে দেখিয়েছে । আর এটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বার্থের অনুকূলে নয় । তিনি IIT কর্মীদের চান না । IIT ইঞ্জিনিয়ার এবং সমতুল ভারতীয়রা মনে করেন ট্রাম্পের তৈরি এই বিদ্বেষমূলক অভিবাসন নীতি তাঁদের জন্য নয় । তাঁরা মনে করেন, ট্রাম্প তাঁদের অ্যামেরিকায় দেখতে চান । কিন্তু ঘটনা তা নয় । ভারতীয় IIT ইঞ্জিনিয়ারদের বদলে ট্রাম্প নরওয়ের মৎস্যজীবীদের অ্যামেরিকায় বেশি দেখতে পছন্দ করবেন ।

প্রঃ আন্তর্জাতিক পড়ুয়ামহলের (যাদের বেশিরভাগই চিনা এবং ভারতীয়) মধ্যে কতটা উদ্বেগ আর বিভ্রান্তি রয়েছে?

উঃ ওরা খুব উদ্বেগে আছে । ভবিষ্যতে কী হবে তা নিয়ে বিভ্রান্তিও রয়েছে । যারা ভরতি হয়ে গিয়েছে, তাদের ভিসা পাওয়া নিয়ে বেশি জটিলতা রয়েছে কারণ ভিসা অফিসগুলি এখনও খোলেনি । তাই খুব বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি চলছে । আমরা জানি না কী হবে । তাই যারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে সেই পড়ুয়াদের আমি পরামর্শ দিচ্ছি শান্ত হয়ে থাকো এবং দেখো, চূড়ান্ত নির্দেশিকায় ঠিক কী আছে । তারপর সিদ্ধান্ত নাও । ট্রাম্প এইভাবেই বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির জন্য জটিলতার বেলুন হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন । তবে এটা যদি নীতিতে পরিণত হয় তাহলে আমরা মস্ত বড় সমস্যায় পড়ব । আর সেটা শুধুমাত্র ভারতীয়দের জন্য নয়, অ্যামেরিকার জন্যেও মস্ত বড় সমস্যা তথা বিপর্যয় ডেকে আনবে ।

প্রঃ শীতকালীন সেমেস্টারের জন্য বেশিরভাগ কলেজে ভরতি প্রক্রিয়া শেষ । তাহলে পড়ুয়াদের কীভাবে ট্রান্সফার নেওয়া হবে? তাছাড়া বেশিরভাগ দেশে লকডাউন চলছে, আমরা জানি না ভারতের আন্তর্জাতিক উড়ান ফের কবে চলাচল শুরু করবে। তাহলে পড়ুায়ারা কীভাবে অ্যামেরিকা ছাড়বে?

উঃ সেটাই তো! আমরা কোথায় যাচ্ছি তা নিয়ে কোনও স্পষ্টতা নেই । কিন্তু এটা হঠাৎ করে হয়নি । এটা কোনও দুর্ঘটনা নয় । এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত । তা না হলে এরকম একটা মহামারির সময় কোনও দেশের প্রশাসন WHO থেকে সরে আসে?

প্রঃ এর আগে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত H1B, L1 ভিসা প্রত্যাহার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন । তাছাড়া গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদনকারীদের ভাগ্যও ঝুলে রয়েছে । প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই বছরে কোনও অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী ক্ষেত্রকে কী বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে?

উঃ এক'শ শতাংশ । এই নির্বাচনী ক্ষেত্র হল ট্রাম্পের ভিত্তি, যা দেশের অন্তত 40 শতাংশ এলাকা জুড়ে রয়েছে আর সেখানের বাসিন্দাদের 90 শতাংশই তাঁর পক্ষে । ট্রাম্পের এই ভিত্তি বিদেশি বিরোধী, বিদ্বেষী মনোভাবাপন্ন এবং কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন । ট্রাম্প তাঁর দেশের সংখ্যালঘু নাগরিক এবং অভিবাসীদের নিজের শত্রু বানিয়ে ফেলেছেন । একবার যদি তাঁর উদ্দেশ্য সিদ্ধি হয়ে যায়, তাহলে এরপর তাঁকে যেটা টানা করে যেতে হয় তা হল নিজের সমর্থকদের ভুল তথ্য, গুজব ছড়িয়ে তাঁদের মনে ভয় তৈরি করা । আর এই মিথ্যা বলার কাজ কিছু কিছু টিভি চ্যানেল ট্রাম্পের হয়ে রোজ করে যাচ্ছে । সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়া যারা তাঁকে সমর্থন করছে এবং তাঁর হয়ে মিথ্যা খবর পরিবেশন করছে–এদের উপর ভর করেই তিনি সফলভাবে বিশৃঙ্খলতা ছড়িয়ে চলেছেন । H1, L1 ভিসায় অভিবাসন নীতি নিয়ে তিনি যা করেছেন তা এক কথায় সর্বনাশা । ঠিক এর বিপরীতে রয়েছে আরও একটি নির্বাচনী ক্ষেত্র যেখানকার বাসিন্দারা তাঁর এই নীতির বিরোধী এবং তাঁরা অভিবাসীদের গুরুত্ব বোঝেন । প্রযুক্তিক্ষেত্রও ট্রাম্পের নীতির বিরোধী কারণ তাদের দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন । প্রযুক্তিক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের অভাব ততটা নেই এবং এই নীতির ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ অ্যামেরিকার বাইরে ছড়িয়ে পড়বে । প্রযুক্তি সংস্থাগুলি বলছে H1B ভিসা ব্লক করলে অ্যামেরিকার নাগরিকরাই যে চাকরি পাবে তেমনটা কখনই নয় ।

প্রঃ আমরা দেখেছি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বিডেন জানিয়েছেন ক্ষমতায় এলে H1B ভিসা নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করবেন । হিউস্টন থেকে গুজরাতের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প এবং মোদির মধ্যে যে রসায়ন আমরা দেখেছি তাতে ইন্দো-অ্যামেরিকানদের প্রতিক্রিয়া কেমন?

উঃ কোনও একটি ভারতীয় সম্প্রদায় নেই । অনেক ভাগ আছে । কিছু মানুষ আছেন যাঁরা ট্রাম্পকে ভালবাসেন । যাঁরা তাঁকে দেখে উৎসাহিত হন, কারণ ট্রাম্প এমন কিছু বলেন যা তাঁরা শুনতে চান । কারণ তাঁরা মনে করেন, ট্রাম্পের ঘোষিত করছাড় নীতিতে তাঁরা উপকৃত হবেন । যাঁরা বিশ্বাস করেন তাঁরা অ্যামেরিকায় আসার সুযোগ পেয়েছেন, সফল হয়েছেন তাই এখানে থাকতে পারছেন। পরবর্তী প্রজন্ম যেন এখানে না আসে। আবার উলটো দিকে উদারবাদী কিছু মানুষও আছেন, যাঁরা ট্রাম্পের নীতির ঘোর বিরোধী । তাঁরা সকল নীতি নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সরব হন । এখানকার বড় বড় কিছু সমাজকর্মী ভারতীয় বংশোদ্ভূত । এখানকার ভারতীয় সম্প্রদায় কোনও একটি নির্দিষ্ট নয়, এখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষদের একটি বৃহৎ সম্প্রদায় রয়েছে যাঁরা বিচ্ছিন্ন এবং অ্যামেরিকার খবর পড়েন না, মার্কিন হিসাবে এদের নাম নথিভুক্ত নেই এবং ভোটও দেন না । কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এমন অনেক মানুষেরই ঘুম ভেঙেছে যাঁরা ভাবতেন, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে মিস্টার ট্রাম্প খুবই নিরীহ । এদের অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে । কিন্তু অভিবাসন নিয়ে যা হচ্ছে তাতে এখনও যদি কারও ঘুম না ভাঙে, জানি না কবে ভাঙবে । ট্রাম্পকে যাঁরা ভালবাসেন তাঁদের মধ্যে রয়েছে সেই সকল পড়ুয়া যাঁরা ছাত্র ভিসায় এখানে এসেছেন অথবা তাঁরা H1B ভিসায় এসেছেন । কিন্তু ট্রাম্পের এই কুকর্মে এত মানুষের অবস্থা শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এর পরেও যদি তাঁরা ট্রাম্পকে সমর্থন করেন, তাহলে নীতিগত ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে । ট্রাম্পের মতোই একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বলতে পারেন, " ফিফথ এভিনিউতে আমি কাউকে গুলি করলেও আমার কিছু যাবে—আসবে না! " অন্য কোনও নেতার মুখে এমন কথা ভাবুন তো ! দক্ষিণ কোরিয়া আর অ্যামেরিকার দিকে তাকান । দুই দেশেই একই দিনে প্রথম COVID - 19 - এ নিশ্চিত আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছিল । আর যে সময় কোরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা 200, সেখানে অ্যামেরিকায় সংখ্যাটা 50 হাজার ছুঁই ছুঁই ৷ আর কোরিয়া অ্যামেরিকার থেকে 15 গুণ বেশি ঘনবসতিপূর্ণ । এই সকল ঘটনা আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে ।

প্রঃ গতকাল আমরা দেখেছিলাম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কড়া সমালোচনা করছেন এবং এ কথাও বলছেন যে, স্কুল এবং ক্লাস খুলে দেওয়া উচিত । কারণ তা বন্ধ রাখা আলস্যতার পরিচয় দেয় । F1 ভিসায় সংস্কার কি ক্যাম্পাস খোলার জন্য এই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপর তাঁর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল? মুখোমুখি ক্লাস শুরু হওয়ার জন্য সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কি নিরাপদ?

উঃ আমি মনে করি না ৷ দু’টো বিষয় প্রত্যক্ষভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত । কিন্তু ট্রাম্প শুধু কলেজগুলিকেই নয়, স্কুল খুলতেও জোর করছেন । তিনি বলেছেন, গভর্নরদের উপর চাপ দিয়ে স্কুল খোলাবেন । দেশ বর্তমানে বিরাট বড় মহামারির মুখে পড়েছে । আমরা চেষ্টা করছি সংক্রমণের হার কমিয়ে আনার । কিন্তু পরিবর্তে আমরা এখনও প্রথম ধাক্কার মাঝামাঝি স্তরে আছি । আর কোনও দেশে এত দ্রুত সংক্রমণের হার বাড়েনি । আমরা কিছুই করিনি । মনে হচ্ছে, লকডাউনের মধে্য দিয়ে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের দুঃখ কষ্ট সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হল । সবকিছুই রাজনৈতিক হয়ে উঠেছে ।

প্রঃ অ্যামেরিকা আনুষ্ঠানিকভাবে WHO থেকে সরে আসার কথা ঘোষণা করেছে । অথচ গোটা বিশ্ব এখনও মহামারির কবলে । কংগ্রেসের সদস্য অমিয় বেরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একাধিক টুইট করেছেন । অ্যামেরিকা বর্তমানে একাধিক বিশ্বব্যাপী সংগঠন এবং চুক্তি যেমন JCPOA, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে । তাহলে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী স্তরে সমর্থনের নিরিখে দেশগুলির ক্রমাঙ্কের বিন্যাস ঠিক কেমন?

উঃ ট্রাম্পের প্রতি পদক্ষেপে বিপর্যয় ঘটেছে । কিছু সময়ের জন্য আমি এবং আমার মতো আরও অনেকে প্রথম বার ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়াকেই প্রহসন মনে করছিলাম । অনেকে এও মনে করেছিলেন, হয়তো প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প সুস্থ হয়ে উঠবেন । কিন্তু প্রথমদিন থেকে তিনি তাঁর নির্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে গিয়েছেন । আর তারই ফলে আজ আমাদের এই হাল । তিনি যা করেছেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ তিনি আগেই জানিয়েছিলেন যে তিনি এমনই করবেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details