পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

চরম সংকটে রয়েছে ছোটো সংস্থাগুলি

লকডাউনের জন্য ঋণদানের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কমে গিয়েছে ! তহবিলের অভাব, পুরানো ঋণে সুদের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং দক্ষ শ্রমিক ও কাঁচামালের অভাব ছোটো সংস্থাগুলিকে সমস্যায় ফেলছে ।

By

Published : Aug 26, 2020, 5:53 PM IST

চরম সংকটে রয়েছে ছোট সংস্থাগুলি
চরম সংকটে রয়েছে ছোট সংস্থাগুলি

তাদের ছোটো সংস্থা বলে উল্লেখ করা হয় । কিন্তু, তা সত্ত্বেও দেশে 12কোটি চাকরি তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে তাদের । অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অবস্থা এমনিতেই খুবই খারাপ । আর কোরোনা সংকট তাদের আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে । লকডাউন এবং ব্যবসায়িক আদান প্রদান কমে যাওয়ার কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাপের সংস্থাগুলি (MSME) কেন্দ্রীয় সরকারের আত্মনির্ভর প্যাকেজের উপর বড় ভরসা করেছিল । তিন মাস আগে সরকারি তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল ৩ লাখ কোটি টাকার একটি প্যাকেজের । যাতে 45 লাখ সংস্থা সুবিধা পাবে বলে বহুলভাবে প্রচারিত হয়েছিল । কিন্তু তা ছোট সংস্থাগুলির ভাগ্য বদলাতে পারেনি । রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে তা ছোট সংস্থাগুলির খারাপ অবস্থার ছবিকেই তুলে ধরেছে । যে পরিসংখ্যান গত বছর নিশ্চিত করেছিল ঋণের অপ্রতুলতা MSME–গুলির খারাপ অবস্থাকে জারি করে রেখেছিল ।

লকডাউনের জন্য ঋণদানের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় 17 শতাংশ কমে গিয়েছে ! তহবিলের অভাব, পুরানো ঋণে সুদের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং দক্ষ শ্রমিক ও কাঁচামালের অভাব ছোটো সংস্থাগুলিকে সমস্যায় ফেলছে । বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্র দশ বছরের জন্য সামান্য সুদে একটি ঋণ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে এবং তার প্রয়োগও করেছে । এই পরিকল্পনায় ঋণ শোধের পদ্ধতিও সহজ করে দেওয়া হয়েছে । যার মধ্যে বেশির ভাগটাই তুলে নেওয়া হয়েছে । কিন্তু একটা তথ্য সামনে এসেছে যে ছোটো সংস্থাগুলির থেকে ব্যাঙ্কগুলি 9 থেকে 14 শতাংশ সুদের হারে ঋণ দিচ্ছে । ঋণ বিতরণ কমে যাওয়ার কারণ কী, তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক । যখন ছোট সংস্থাগুলির সাহায্যের প্রয়োজন, যাতে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে বড় সাহায্য হয়, তখন অনেক সুদের হার চাপিয়ে এবং ঋণশোধের বিষয়টি আরও কড়া করে গিয়ে এই প্যাকেজের আসল উদ্দেশ্যে সম্পর্কেই প্রশ্ন তুলে দেওয়া হচ্ছে ।

সম্ভাব্য সাহায্য

সারা দেশের বিভিন্ন অংশে অবস্থিত 6.3 লাখ ছোটো সংস্থাগুলি এই মুহূর্তে সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় রয়েছে । আর নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে হাবুডুবু খাচ্ছে । CII (কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি)-এর প্রস্তাব দিয়েছে যে অন্তত তিন বছরের জন্য সমস্ত রকমের নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হোক । যাতে এই প্যানডেমিক ছড়িয়ে পড়ার সময় কেউ পিছিয়ে না পড়ে যায় । MSME-গুলির প্রতিনিধিরা সংসদীয় কমিটির সামনে যে সাক্ষ্য দিয়েছে, তাও অনেকটা CII–এর প্রস্তাবের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে ! কেন্দ্র সঠিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট আগামী সেপ্টেম্বরের মাসের মধ্যে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে । পরিস্থিতির ব্যাপকতা অনুভব করে এই গুরুত্বপর্ণ ক্ষেত্রকে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক সাহায্যের প্রয়োজন । যখন চিন এক হাজার গ্রামীণ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে ছোটো সংস্থাগুলিকে সঙ্গে সঙ্গে ঋণ দেওয়ার জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, জার্মানি "মিটল স্ট্যান্ড" (MSME) সংস্থাগুলিকে অসীম গুরুত্ব দিচ্ছে । নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও জাপান সরকারি সহযোগিতা দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে । ডিজিটাল প্রযুক্তিকে আত্মস্থ করে ছোট সংস্থাগুলির জন্য আরও ভালো পরিস্থিতি তৈরি করছে ওই দেশগুলি । কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টিকে মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার ছোট সংস্থাগুলির অংশীদারিত্ব আগামী সাত বছরে GDP–এর 29 শতাংশ থেকে বাড়িয়ে 50 শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । যতক্ষণ না পর্যন্ত উচ্চ ঋণের হার, ঋণের পরিমাণের অপ্রতুলতা এবং ঋণশোধের নিয়মে কড়াকড়ি ছোট সংস্থাগুলির উপর থেকে কমাচ্ছে, ততক্ষণ সমস্যা সঙ্কুল পরিস্থিতি একই রকম থেকে যাবে । পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বাধা দূর করা গেলে তবেই MSME ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এবং কয়েক বিলিয়ন জীবন বেঁচে যাবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details