ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে গান্ধিজির অবস্থান আকাশ-ছোঁয়া । তিনি দেশীয় জাতীয়তাবাদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন । সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথও একজন বিশ্ববন্দিত কবি । স্বাধীনতা অর্জন করতে গান্ধি অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেছিলেন । তবে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে অসহযোগ আন্দোলন কোনও কার্যকর সমাধান নয় বলে বিশ্বাস করতেন রবীন্দ্রনাথ । অসহযোগ আন্দোলনকে রাজনৈতিক সন্ন্যাস বলে আখ্যা দেন রবীন্দ্রনাথ । পাশাপাশি তিনি গান্ধির ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিন্দি ও উর্দু করার প্রস্তাবেও অসন্তোষ প্রকাশ করেন । কবির মতে, দক্ষিণ ভারতের মানুষ এতে সমস্যায় পড়বে ।
1925 সালে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কথা বলতে গেছিলেন গান্ধি । চরকা ও খাদি নিয়ে আন্দোলনের উপর আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে । এ ব্যাপারে দুজনের বিপরীত মেরুর অবস্থান ও বাকবিতণ্ডা এক দীর্ঘ আলোচনায় পরিণত হয় । মডার্ন রিভিউ ম্যাগাজ়িনের 1925 সালের সেপ্টেম্বর সংখ্যায়, গান্ধির চরকা আন্দোলনকে তীব্র সমালোচনা করেন বিশ্বকবি । এই সূত্রে গান্ধির অসহযোগ আন্দোলন, দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের আদর্শের বিরুদ্ধেও কলম ধরেছিলেন তিনি । কিন্তু তবু দুইজনের মধ্যে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হত ।