দিল্লি, 8 এপ্রিল : কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় আজ সর্বদলীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । পর্যালোচনা করেন দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে । তবে দিন কয়েক ধরেই লকডাউন বাড়ানো নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে । কেন্দ্রের তরফেও এখনও কোনওকিছু স্পষ্ট করা হয়নি । আশা করা হচ্ছে শনিবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠকের পরই লকডাউন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে । হতে পারে বড় কোনও ঘোষণা ।
14 এপ্রিলের পর লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হবে না কি সেদিনই শেষ হবে লকডাউন, আপাতত এনিয়ে জল্পনা চলছে । কেন্দ্রীয় সরকারের একাংশের তরফে খবর, রাজ্যগুলির আবেদন খতিয়ে দেখবে কেন্দ্র । অন্যদিকে গতকালই স্বাস্থ্য ও পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল জানান, লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি ।
এই পরিস্থিতিতে আজ সর্বদলীয় বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের গুলাম নবি আজ়াদ, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়, শিব সেনা নেতা সঞ্জয় রাওয়াত, সমাজবাদী পার্টি নেতা রামগোপাল যাদব, BSP নেতা এস সি মিশ্র, NCP নেতা শরদ পাওয়ার, DMK নেতা টি আর বালু সহ প্রমুখ । কথা হয় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। তবে লকডাউন বাড়ানো নিয়ে সেরকম কোনও ইঙ্গিত মেলেনি ।
গত কয়েকদিনে সাংসদ-মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সকলের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সেরে মাধ্যমে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পর্যালোচনা করেছেন সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন । কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন । বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাপাধ্যায় ও প্রতিভা পাতিলের সঙ্গেও । পরামর্শ নেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও এইচ ডি দেবেগৌড়ারও ।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার দ্বিতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী । আশা করা যায় তারপরই লকডাউন নিয়ে নেওয়া হতে পারে সিদ্ধান্ত ।
এর আগে 24 মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে 21 দিন ব্যাপী লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । এরপর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্যগুলিকে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে এবং যে জায়গাগুলিতে সংক্রমণের প্রভাব কম ধীরে ধীরে সেগুলি খুলতে হবে । কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । অর্থনীতির প্রধান কিছু ক্ষেত্র আবার চালু হতে পারে । নজর দেওয়া হতে পারে উৎপাদন ক্ষেত্রগুলিতেও । অন্যদিকে, কিছু রাজ্যে লকডাউন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছ । কোথাও বা ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে । আবার মন্ত্রীদের একাংশের প্রস্তাব আপাতত স্কুল, কলেজ, মন্দিরগুলি বন্ধ রাখা হোক । বিমান পরিষেবা কিছু ক্ষেত্রে চালু করা হলেও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হোক ।
কোরোনার জেরে দেশে এপর্যন্ত 149 জনের মৃত্যু হয়েছে । গত 24 ঘণ্টায় 35 জনের মৃত্যু হয়েছে । যা দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ । আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার পেরিয়েছে ।