মহিলাদের স্থায়ী কমিশন
1990 - মহিলাদের সশস্ত্র বাহিনীতে SSC অফিসার হিসেবে নিযুক্তিকরণ শুরু হয় ৷ সর্বাধিক মেয়াদ হয় 14 বছর ৷
2011 - সরকার মহিলা SSC অফিসারদের বিচারবিভাগীয় ও শিক্ষা বিভাগে স্থায়ী কমিশন দান করে ৷
15.08.2018 - প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অ - যুদ্ধ পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত এমন ক্ষেত্রে PC পদে মহিলা আধিকারিকদের যোগ্য বলে ঘোষণা করেন ৷
25.02.2019 - নতুন SSC মহিলা আধিকারিকদের জন্য আটটি সশস্ত্র বিভাগে স্থায়ী কমিশনের অনুমতি দেয় সরকার ৷ সেগুলি হল - সিগনালস ইঞ্জিনিয়র, আর্মি অ্যাভিয়েশন, এয়ার ডিফেন্স, ইলেকট্রনিকস ও মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়রস, আর্মি সার্ভিস কর্পস, আর্মি অর্ডিন্যান্স এবং ইন্টেলিজেন্স ৷
31.10.2019 - সেনা বাহিনীর অ্যাডজাট্যান্ট জেনেরাল লেফটেন্যান্ট জেনেরাল অশ্বিনী কুমার বলেন, স্থায়ী কমিশনের জন্য নির্বাচিত মহিলাদের নির্দিষ্ট বিভাগে যাওয়ার জন্য ওই বিভাগের প্রশিক্ষণ নিতে হবে ৷ তবে, 2020 সালের এপ্রিল মাস থেকে স্থায়ী কমিশনের পদে মহিলাদের নিযুক্তি হবে ৷
19.11.2019 - মহিলাদের জন্য স্থায়ী কমিশন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় : 2010 সালে যে আট জন মহিলা সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন ৷ তাদের নিয়োগ নিয়ে সেনাকে সিদ্ধান্তে আসতে অনুরোধ করে সুপ্রিম কোর্ট ৷
17.02.2020 - সুপ্রিম কোর্ট থেকে বলা হয়, মহিলারা সেনা কমান্ডার হিসেবে কাজ করতে পারে ৷ তবে, পুরুষ জওয়ানরা একজন মহিলার কাছ থেকে অর্ডার নিতে রাজি নয় ৷ কারণ সেটা তাদের কাছে বিরক্তিকর ৷ এরপর সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, মহিলাদের চাকরির স্থায়িত্ব সম্প্রসারণের জন্য নির্দেশ দেয় ৷ যা এর আগে শুধুমাত্র পুরুষদের জন্যই প্রযোজ্য ছিল ৷ পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে গিয়ে মহিলা ও পুরুষদের সমতার দিকে এই পদক্ষেপ ৷ এই সিদ্ধান্তের ফলে মহিলারাও পুরুষদের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে ৷ যেমন - পদাধিকার, পদন্নোতি , পেনশন ও দীর্ঘমেয়াদি চাকরি ৷
07.07.2020 - সুপ্রিম কোর্ট 17 ফেব্রুয়ারির নির্দেশকে অর্থাৎ যোগ্য মহিলাপ্রার্থীদের সশস্ত্র বাহিনীতে স্থায়ী কমিশনের অনুমতি দেওয়ার নির্দেশকে কার্যকরী করার জন্য সরকারকে 1 মাসের সময় দেয় ৷
23.07.2020 - কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীর মহিলা আধিকারিকদের জন্য স্থায়ী কমিশন মঞ্জুর করার নির্দেশে একটি অনুমোদনের চিঠি পাঠায় ৷ এর ফলে সেনায় মহিলাদের বৃহত্তর ভূমিকা বজায় রাখার পথ সুগম করবে ৷
বিশ্বের সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের ভূমিকা -
UK - 2018 সালে, ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করে ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলারা সবরকমের সামরিক ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবে ৷ ফ্রন্টলাইন পদাতিক ইউনিট ও রয়্যাল মেরিনসেও যোগ দিতে পারবেন ৷
USA - সেনায় মহিলাদের দরজা অনেক আগে থেকেই খোলা ছিল ৷ 1976 সালে, মহিলাদের ভরতি করা হয়েছিল অল সার্ভিস অ্যাকাডেমিকসে ৷ 1977 থেকে শুরু হয়েছিল প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ৷ আলাদা করে মহিলাদের দল দরকার না থাকায় 1978 সালে কংগ্রেস উইমেনস আর্মি কর্পস ভেঙে দেয় ৷ এরপর 2015 সালে প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে মহিলাদের সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরির জন্য সমস্ত দরজা খুলে দেওয়া হয় ৷
কানাডা - কানাডার সেনায় 85 শতাংশই পুরুষ ৷ যদিও, কানাডার সেনাবাহিনীতে 1989 থেকেই মহিলাদের সুযোগ ছিল ৷ সেনাবাহিনীতে 15 শতাংশ জায়গাই মহিলাদের জন্য ৷ তবে, একটি গবেষণা থেকে দেখা যায়, মহিলারা অপারেশন ভূমিকার থেকেও বেশি সাপোর্টিভ ভূমিকায় কাজ করেন ৷
রোমানিয়া - রোমানিয়ায় ভলান্টিয়র ফোর্সে সশস্ত্র মহিলাদের জন্য জায়গা আছে ৷ ইরাকে প্রায় 60 জনের সশস্ত্র মহিলা সেনার দলকে পাঠায় রোমানিয়া ৷ আফগানিস্তানে সশস্ত্রবাহিনীতে মাত্র 7 শতাংশ জায়গা আছে মহিলাদের ৷ যদিও , এই দেশের মহিলাদের অপারেশন ভূমিকায় কোনওরকম বৈষম্যগত সমস্যা নেই ৷
ফ্রান্স - ফ্রান্সের সেনায় প্রায় 19 শতাংশ মহিলাকর্মী ৷ সেখানে সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলারা অংশগ্রহণ করতে পারেন ৷ তবে, খুব কম সংখ্যক মহিলাই ফ্রন্ট লাইনে অর্থাৎ সামনের সারিতে থেকে কাজ করে ৷ UK - এর গবেষণা অনুযায়ী, ফ্রান্সের 2006 সালের ফ্রেঞ্চ গবেষণা অনুযায়ী মাত্র 1.7 শতাংশ মহিলাই সেনায় পদাতিক পদে কাজ করে ৷
জার্মানি - জার্মানিতে 2001 সাল থেকেই সেনাতে যোগ দিচ্ছে মহিলারা ৷ মহিলাদের সেনায় কাজ করতে না দেওয়া লিঙ্গসাম্যতার বিরুদ্ধে ৷ এই রায় দেওয়ার পর থেকেই সেনায় মহিলাদের নিয়োগ শুরু হয় ৷ সেনায় মহিলারা যেকোনও ধরনের পদ নির্বাচন করতে পারেন ৷ এমনকী মেরিন কমান্ডোসও ৷ 2001 থেকে 2014 সালের মধ্যে জার্মান সেনায় মহিলাদের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে যায় ৷ জার্মান সশস্ত্র বাহিনীতে রয়েছে প্রায় 800 জন মহিলা ৷ তারা আফগানিস্তান যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছিল ৷
ডেনমার্ক - 1998 সাল থেকেই দানিশ সেনার সমস্তরকম পদে যোগদান করতে পারে মহিলারা ৷ তারা ল্যান্ড কমব্যাটের ভূমিকাতে পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন ৷ দানিশ গবেষণা অনুযায়ী, পুরুষ ও মহিলাদের সমান দক্ষতা থাকতে হবে ৷ দানিশ মহিলা সেনা কর্মীরা আফগানিস্তান যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করে ৷
ইজ়রায়েল - 1990 সাল থেকেই এই দেশে সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করতে পারে মহিলারা ৷ প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রায় 90 শতাংশ ভূমিকাতেই কাজ করার জন্য যোগ্য মহিলারা ৷
দি নেদারল্যান্ডস - এদেশে মেরিন কর্পস বা সাবমেরিন পরিষেবায় মহিলাদের অংশগ্রহণের অনুমতি নেই ৷ এছাড়া অন্য পদে আবেদন করার অনুমতি আছে ৷ তা হলেও সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের সংখ্যা খুবই কম ৷ মহিলাদের থেকে প্রায় দ্বিগুণ পুরুষ এই ভূমিকায় অংশগ্রহণ করেন ৷ UK - এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিদেশি সামরিক বাহিনীতে মহিলাদের ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস সশস্ত্র বাহিনী সংকট-প্রতিক্রিয়ামূলক অভিযান এবং শান্তিরক্ষা মিশনের ক্ষেত্রে একসাথে কাজ করে ৷
নিউজ়িল্যান্ড - 2001 সাল থেকে মহিলারা সেনায় চাকরির অনুমতি পান ৷ এমনকী পদাতিক ভূমিকাতেও কাজের অনুমতি পান ৷ যদিও সেনায় মহিলাদের সংখ্যাটা অনেকটাই কম ৷ গবেষণায় দেখা যায়, 2004 সালের মে মাস অবধিও নিউজ়িল্যান্ড সেনায় মহিলা মাত্র 9 জন গানার, 3 জন রাইফেল অপারেটর ও একজন ফিল্ড ইঞ্জিনিয়র ছিল ৷
পোল্যান্ড - মহিলাদের সেনায় অংশগ্রহণে অনুমতি আছে ৷ 2004 সাল থেকে নার্সিং ও ভেটেনারি ক্ষেত্রে মহিলাদের সেনায় প্রয়োজন ছিল ৷ তবে, কম সময়ে অনেক পরিবর্তন হয়েছে ৷ 1999 সালের আগে পর্যন্ত মহিলাদের সেনাতে অংশগ্রহণের অনুমতি ছিল না ৷ এরপর চার বছরের প্রশিক্ষণ নিয়ে মহিলারা সেনায় অংশ নেয় 2004 সালে ৷
সুইডেন - 1989 সাল থেকে সুইডিশ সেনায় কোনও লিঙ্গবৈষম্যতা নেই ৷ তাদের মতে, মহিলারা সশস্ত্র বাহিনীতে ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারে ৷ বরং বিশেষ করে যুদ্ধে মহিলাদের অংশগ্রহণ একটি ইতিবাচক দিক ৷
অস্ট্রেলিয়া - 2011 সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সেনায় সশস্ত্র পদে অংশগ্রহণ করতে পারে মহিলারা ৷ আফগানিস্তানের যুদ্ধ, স্পেশাল ইউনিট ও পদাতিক বাহিনীতে যোগ দেয় মহিলারা ৷ ন্যাভাল ডাইভার হিসেবেও কাজ করে মহিলারা ৷ অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তণ প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলিয়ার্ড বলেন, মহিলা ও পুরুষরা হল সমান ৷ মহিলা ও পুরুষদের নিজের দেশের হয়ে লড়ে শহিদ হওয়ার সমান অধিকার আছে ৷ এরপর 2014 সালের 63 জন অস্ট্রেলিয়ান মহিলা ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে সেনায় নাম লেখায় ৷
নরওয়ে - 1985 সালে নরওয়ে NATO - র অন্তর্ভুক্ত প্রথম দেশ যা, সাবমেরিন-সহ সমস্ত ক্যাটাগরিতে মহিলাদের নিয়োগের অনুমতি দেয় ৷