মুম্বই, 15 ফেব্রুয়ারি : একটি আইনের বিরুদ্ধে যাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন, তাঁদের রাষ্ট্রদ্রোহী বলা যায় না । আজ বম্বে হাইকোর্টের ঔরাঙ্গাবাদ বেঞ্চের তরফে এই কথা বলা হয় । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে অবস্থানে বসতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ইফতেখর শেখ । আজ তাঁর আবেদনের উত্তর দিয়ে আদালত এই কথা জানায় ।
মহারাষ্ট্রের বিড়ে অবস্থানে বসতে চেয়েছিলেন ইফতেখর । সেজন্য জেলাশাসক ও পুলিশের অনুমতি চেয়েছিলেন । কিন্তু তাঁর আবেদন প্রত্যাহার হয় । তখন বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানান তিনি । আজ টিভি নলবদে ও এমজি শেওলিকরের ডিভিশন বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি হয় । বিচারপতিরা বলেন, "একজন মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করতে পারেন । আদালত আশা করে এটি তাঁর অধিকার বলে বিবেচিত হবে বলে । একটি আইনের বিরোধিতা করতে চাইলেই তাঁদের দেশদ্রোহী বা বিশ্বাসঘাতক বলা যায় না । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের কারণে সরকার বিরোধী প্রতিবাদ বলেই গণ্য হবে ।"
আদালত তার রায়ে উল্লেখ করে, "ভারত স্বাধীনের জন্য একাধিক বিক্ষোভ হয়েছিল । তা অহিংস ছিল । এবং সেই অহিংসার পথই এখনও ভারতবাসীরা মেনে চলছেন । আমরা ভাগ্যবান ভারতের বেশিরভাগ মানুষ এখনও অহিংসায় বিশ্বাস রাখেন । নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধিতার ক্ষেত্রেও আবেদনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলনের পথ বেছে নিচ্ছেন । "
সারা দেশজুড়ে অনেক মানুষ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে । এর অন্যতম উদাহরণ দিল্লির শাহিনবাগ । মহিলাদের নেতৃত্বে শতাধিক মানুষ প্রায় দু'মাস ধরে অবস্থান বসেছে সেখানে । মুম্বই শহরেও এই আইনের বিরোধিতা করছে একাংশ । ইফতেখর শেখের আবেদনের উত্তরে আদালত আজ জানায়, "আমাদের মনে রাখতে হবে ভারত গণতান্ত্রিক । যদি CAA-র মতো কোনও আইন তৈরি হয়, নির্দিষ্ট কোনও ধর্মের মানুষ এই বিষয়ে আঘাত পেতে পারে বলে অনেকে মনে করছে ৷ তাই তারা বিরোধিতা করছে ৷ এটি দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্বাসের বিষয় ৷ এই ক্ষেত্রে আদলত সেই বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ করতে পারে না । যদি কোনও মানুষ আন্দোলন করতে চান, আদালত দেখবে এটি তাঁদের মৌলিক অধিকার কি না । যদি তা হয় তবে সেইক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার কথা নয় ।