দিল্লি, 27 জুন : কারতারপুর করিডোর খোলা নিয়ে সায় দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার । মহারাজা রঞ্জিৎ সিংয়ের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পুণ্যার্থীদের জন্য 29 জুন এই করিডোর খোলার জন্য আর্জি জানিয়েছিল পাকিস্তান । কিন্তু কোরোনা ভাইরাসের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে তাতে সায় দিচ্ছে না ভারত ।
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি আজ কারতারপুর করিডোর নিয়ে টুইট করেন । তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে ধর্মীয় স্থানগুলি খুলে দেওয়া হচ্ছে । সেই কথা মাথায় রেখে শিখ পুণ্যার্থীদের জন্য কারতারপুর সাহিব করিডোর খোলার উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তান । মহারাজা রঞ্জিৎ সিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে 29 জুন করিডোর খুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা হচ্ছে । ভারতের কাছে আবেদন সেখানে যেন করিডোর খুলে দেওয়া হয় ।” যদিও ভারতের তরফে জানানো হয়েছে নিজেদের ইমেজ বজায় রাখতে পাকিস্তান এসব করছে । কেন্দ্রীয় সরকারের এক আধিকারিক জানান, “কারতারপুর করিডোর খুলে দিয়ে পাকিস্তান ভালো সাজাতে চাইছে । মাত্র দু'দিনের নোটিশে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না । ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে সীমান্ত দিয়ে পারাপারের জন্য সাতদিন আগে দু'দেশ একে-অপরকে জানাবে ।”
কারতারপুর করিডোর গত বছর নভেম্বরে উদ্বোধন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান । শিখ ধর্মগুরু নানকের 550 তম জন্মবার্ষিকীতে কারতারপুর করিডোর খুলে দেওয়া হয় । দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও বিশ্বের শিখ পুণ্যার্থীরা এই করিডোর খুলে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছেন । COVID-19 এর কারণে চলতি বছরের 16 মার্চ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় ওই করিডোর । যদিও দীর্ঘ লকডাউনের পর বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে । পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, “সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে কর্তারপুর করিডোর খোলার জন্য ভারতকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে পাকিস্তান ।” ভারত ও পাকিস্তান, দু'দেশে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে । বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপর চাপ পড়েছে । গত 24 ঘণ্টায় পাকিস্তানে COVID-19'এ 150 জন মারা গেছেন । অন্যদিকে বিশ্বের মধ্যে পাকিস্তানে সব থেকে দ্রুত কোরোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ।
পাকিস্তানের তরফে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তার উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র বলছে, “সীমান্ত পারাপার সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে । স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে ।” ভারতে পাকিস্তানের প্রতিনিধি সৈয়দ হায়দার আলিকে ডেকে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, তাঁঁদের দূতাবাসে সাত দিনের মধ্যে 50 শতাংশ কর্মী কমাতে হবে । প্রতিনিধিদের হেনস্থার অভিযোগে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছু সময় ধরে খারাপ । দিল্লি ও ইসলামাবাদের তরফে প্রতিনিধিদের আটকে রেখে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ।
ভারতীয় আধিকারিক আরও জানান, “দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী রবি নদীর উপরে সেতু তৈরির কথা পাকিস্তানের । বর্ষার সময় কারতারপুর করিডোর দিয়ে পুণ্যার্থীদের যাতায়াত সুরক্ষিত করতে ওই সেতু তৈরি প্রয়োজন ।” চার কিলোমিটার বিস্তৃত ঐতিহাসিক কর্তারপুর করিডোর ভারতের গুরুদাসপুরের ডেরা বাবা নানক দেব থেকে পাকিস্তানে কারতারপুর সাহিব পর্যন্ত বিস্তৃত । কারতারপুর সাহিবে জীবনের 18 বছর কাটিয়েছেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক ।