বিদ্বেষ ও হিংসা মানুষের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায় ৷ মনে ভয় তৈরি করে ৷ তারপর ধীরে ধীর সমাজকে গ্রাস করে নেয় ৷ প্রথমে চরমপন্থীরা এই উগ্রতায় মুগ্ধ হয়ে সেটাকে নিজেদের আদর্শ মানতে শুরু করেছিল ৷ পরে আধিপত্য স্থাপনে গান্ধিবাদকেই নিজেদের পন্থায় পরিণত করেছিল তারা ৷ শুরুতে হয়তো ভয়, বিদ্বেষ জিততে পারে ৷ কিন্তু শেষে সবসময় শান্তিরই জয় হয় ৷ তাই সেদিক থেকে দেখলে মানবিক ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গড়ে তুলতে গান্ধির জনসংযোগ চিরকালই প্রাসঙ্গিক ৷
গান্ধির অবদান শুধুমাত্র ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামেই সীমাবদ্ধ থাকেনি ৷ ভারতের জনসংযোগের সীমাকেও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন তিনি ৷ জনসংযোগের জন্য সবসময় শব্দের প্রয়োজন হত না ৷ তিনি বিশ্বাস করতেন বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য আনতে গেলে মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়া জরুরি ৷ তাঁর এই বিশ্বাসের প্রতিফলন রয়েছে একটি উক্তিতে ৷ তাঁর সেই উক্তি অনুযায়ী, "একসময় নেতৃত্ব বলতে নিজের কর্তৃত্বকেই বুঝতাম কিন্তু আজ বুঝি মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার মধ্যেই নেতৃত্বের আসল উপলব্ধি লুকিয়ে রয়েছে ৷"
গান্ধি প্রকৃত ও খাঁটি বক্তা এবং একজন সৎ লেখক ছিলেন ৷ তাঁর সরলতা, আন্তরিকতা ও প্রচ্ছন্নতা মানুষকে আকর্ষণ করত ৷ এই আকর্ষণীয় চরিত্র আক্ষরিকভাবে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে উচ্চতার শিখরে নিয়ে গেছিল ৷ মানুষকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকতেন মহাত্মা ৷ সে সংবাদ প্রতিবেদন লেখার মাধ্যমেই হোক বা তাঁর নীতিমূলক বক্তৃতার মাধ্যমে ৷ তিনি সর্বদা মানুষকে স্বাধীনতার পথে চালিত করার চেষ্টা করতেন ৷ সেইসময় অহিংসার পথকে অস্বীকার করে অনেকেই হিংসার পথ বেছে নিয়েছিলেন ৷ তাঁদের কাছে গান্ধি প্রমাণ করেছিলেন অহিংসার শক্তি হিংস্রতার থেকে অনেক বেশি৷