পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

গান্ধি প্রমাণ করেছিলেন সবসময় অহিংসারই জয় হয় - Gandhi hesitate to spoke

তো কাটা থেকে শুরু করে খাদি পরে লবণ আইনের বিরোধিতা করা, সবকিছুতেই নিজের আদর্শকে তুলে ধরেছিলেন তিনি ৷ তাঁর এই গুণে অবাক হয়েছিল গোটা বিশ্ব ৷ কথায় আছে প্রচারের আগে অনুশীলনের প্রয়োজন ৷ কিন্তু গান্ধি সেই প্রবাদকে ভ্রান্ত প্রমাণ করেছিলেন ৷

ফাইল ফোটো

By

Published : Sep 2, 2019, 11:29 PM IST

বিদ্বেষ ও হিংসা মানুষের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায় ৷ মনে ভয় তৈরি করে ৷ তারপর ধীরে ধীর সমাজকে গ্রাস করে নেয় ৷ প্রথমে চরমপন্থীরা এই উগ্রতায় মুগ্ধ হয়ে সেটাকে নিজেদের আদর্শ মানতে শুরু করেছিল ৷ পরে আধিপত্য স্থাপনে গান্ধিবাদকেই নিজেদের পন্থায় পরিণত করেছিল তারা ৷ শুরুতে হয়তো ভয়, বিদ্বেষ জিততে পারে ৷ কিন্তু শেষে সবসময় শান্তিরই জয় হয় ৷ তাই সেদিক থেকে দেখলে মানবিক ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গড়ে তুলতে গান্ধির জনসংযোগ চিরকালই প্রাসঙ্গিক ৷

গান্ধির অবদান শুধুমাত্র ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামেই সীমাবদ্ধ থাকেনি ৷ ভারতের জনসংযোগের সীমাকেও নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন তিনি ৷ জনসংযোগের জন্য সবসময় শব্দের প্রয়োজন হত না ৷ তিনি বিশ্বাস করতেন বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য আনতে গেলে মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়া জরুরি ৷ তাঁর এই বিশ্বাসের প্রতিফলন রয়েছে একটি উক্তিতে ৷ তাঁর সেই উক্তি অনুযায়ী, "একসময় নেতৃত্ব বলতে নিজের কর্তৃত্বকেই বুঝতাম কিন্তু আজ বুঝি মানুষের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার মধ্যেই নেতৃত্বের আসল উপলব্ধি লুকিয়ে রয়েছে ৷"

গান্ধি প্রকৃত ও খাঁটি বক্তা এবং একজন সৎ লেখক ছিলেন ৷ তাঁর সরলতা, আন্তরিকতা ও প্রচ্ছন্নতা মানুষকে আকর্ষণ করত ৷ এই আকর্ষণীয় চরিত্র আক্ষরিকভাবে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে উচ্চতার শিখরে নিয়ে গেছিল ৷ মানুষকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকতেন মহাত্মা ৷ সে সংবাদ প্রতিবেদন লেখার মাধ্যমেই হোক বা তাঁর নীতিমূলক বক্তৃতার মাধ্যমে ৷ তিনি সর্বদা মানুষকে স্বাধীনতার পথে চালিত করার চেষ্টা করতেন ৷ সেইসময় অহিংসার পথকে অস্বীকার করে অনেকেই হিংসার পথ বেছে নিয়েছিলেন ৷ তাঁদের কাছে গান্ধি প্রমাণ করেছিলেন অহিংসার শক্তি হিংস্রতার থেকে অনেক বেশি৷

একসময় অত্যন্ত লাজুক বক্তা ছিলেন মহাত্মা ৷ কিন্তু সেই মহাত্মার বক্তব্যই মানুষকে অহিংসার পথে চালিত করেছিল ৷ হয়ে উঠেছিলেন মানবিকতার মসীহা ৷ তাঁর কথায়, "কথা বলতে গিয়ে দ্বিধা বোধ করা একসময় বিরক্তির কারণ ছিল ৷ কিন্তু আমার সেই বাচনিক ক্ষমতাই এখন উপভোগের কারণ ৷ আমার এই অভিজ্ঞতা শব্দের মূল্য বোঝাতে শিখিয়েছে ৷"

সুতো কাটা থেকে শুরু করে খাদি পরে লবণ আইনের বিরোধিতা করা, সবকিছুতেই নিজের আদর্শকে তুলে ধরেছিলেন তিনি ৷ তাঁর এই গুণে অবাক হয়েছিল গোটা বিশ্ব ৷ কথায় আছে প্রচারের আগে অনুশীলনের প্রয়োজন ৷ কিন্তু গান্ধি সেই প্রবাদকে ভ্রান্ত প্রমাণ করেছিলেন ৷ নিজেকে সাধারণ মানুষ ও তাদের সমস্যার সঙ্গে একাত্ম করার আগে একবারও ভাবেননি তিনি ৷ গান্ধির বক্তব্য আক্ষরিক অর্থে সঠিক না হলেও মানুষ তাঁর বক্তৃতায় মুগ্ধ হত ৷ তাঁর প্রাণশক্তি ও আদর্শকে উপলব্ধি করতে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হত ৷ তাঁর নির্মল হাসির মধ্যে আশার অসীম আলো প্রকাশ পেত ৷ কিন্তু এমন একটা সময় আসে যখন হিংসার ঔজ্জ্বল্যে ম্লান হয়ে যায় আশার আলো ৷ সেইসময় মহাত্মা নিজের অহিংসার শিখায় হিংসার দমন করেছিলেন ৷ সেদিন নিস্তব্ধতার মাধ্যমে গান্ধির প্রতিটি শব্দ সঠিক মূল্য পেয়েছিল ৷

গান্ধি সর্বদা সত্যাগ্রহের মাধ্যমে সত্যের জন্য লড়াই করেছিলেন ৷ গান্ধির সেই উক্তি যেখানে তিনি বলেছিলেন, "নিজের চিন্তাগুলি ইতিবাচক রাখুন কারণ তার প্রতিফলন ঘটে আপনার শব্দে ৷ আচরণে স্বচ্ছতা রাখুন কারণ তা আপনার অভ্যাসে পরিণত হয় ৷ সুঅভ্যাসের অধিকারী হন কারণ তা আপনার আদর্শে পরিণত হবে ৷ আর নিজের আদর্শকে ইতিবাচক রাখুন কারণ সেটাই আপনার লক্ষ্য নিশ্চিত করবে ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details