সীমান্ত সংক্রান্ত দাবি নিয়ে ভারত ও নেপাল দুই দেশের মধ্যে বিবাদ চলছে । পাশাপাশি , সাম্প্রতিক সময়ে মানচিত্রেও এই নিয়ে আগ্রাসন লক্ষ্য করা গিয়েছে । এর প্রভাব পড়েছে মহাকালী নদীর উপর তৈরি হতে চলা 5600 MW এর বাঁধের উপর । ওই নদী নেপাল ও ভারতের রাজ্য উত্তরাখণ্ডের মধ্যে প্রবাহিত হয় । এই নদী দুই দেশের মধ্যে সীমান্তও নির্ধারিত করে । বৃহৎ এই বাঁধ দুই দেশের মধ্যে যৌথভাবে তৈরি করার কথা ছিল । এই নিয়ে 1996 সালে একটি MOU সাক্ষর করা হয়েছিল । 2014 সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাঠমাণ্ডু সফরে গিয়েছিলেন । সেখানে গিয়ে তিনি এই বাঁধ নির্মাণের কাজ তরান্বিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন । সেই কারণে দুই দেশের মধ্যে আরও একটি MOU সাক্ষরিত হয়েছিল । এই প্রকল্পের আনুমানিক খরচ ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং এটা শেষ হওয়ার কথা 2026 সালে ।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি এমনই হয়ে গিয়েছে যে এই প্রকল্পকে তার বিপরীতে গিয়ে তৈরি করতে হবে । কারণ, বর্তমান নেপাল সরকার ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান করতে শুরু করেছে । নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন । তিনি নেপালের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা । তিনি চিনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই এই অবস্থান নিয়েছেন । গত বছরের অক্টোবরে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নেপালে সফর করেন । সেখানে তাঁকে দারুণভাবে স্বাগত জানানো হয়েছিল । নেপালকে পরিকাঠামোগত ও আর্থিক সাহায্য করার জন্য চিনের প্রেসিডেন্ট একাধিক চুক্তিতে সাক্ষর করেছিলেন ।
প্রকল্পটির জনপ্রিয় নাম হল পঞ্চেশ্বর বাঁধ । এটাকে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বাঁধ হিসেবে ধরা হয় । কালাপানিকে মহাকালী নদী 11 হাজার 800 ফুট উঁচু থেকে 660 ফুট উচ্চতায় পড়ছে । তারপর তরাই অঞ্চলে প্রবেশ করছে । ওই জায়গায় জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন করার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে । এই বাঁধের প্রস্তাবিত উচ্চতা হল 315 মিটার । যা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ হতে চলেছে, যেখানে 5600 MW বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যাবে । ভারত ও নেপালের আধিকারিকরা এই বাঁধ তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে সেই 1956 সাল থেকে কাজ করছে, যখন কেন্দ্রীয় জল কমিশন গঠন করা হয়েছিল । সেই সময় থেকেই এই নদীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও দুই দেশের সেচের কাজে এই নদীকে ব্যবহার করার বিষয়ে গবেষণা চলছে ।