পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

COVID-19 পরিস্থিতিতে দেশে খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে - Coronavirus

যখন এক দেশ, একটি রেশন কার্ড প্রকল্প চালু করার চেষ্টা চলছে, ঠিক তখনই অতর্কিতে হানা দিয়েছে কোরোনা ভাইরাস ৷ আর তার জেরে বিপন্ন হয়ে উঠেছে দরিদ্র ও গৃহহীনদের জীবন ৷

Need to ensure food security in India amid COVID-19 pandemic
কোরোনায় প্রয়োজন খাদ্য সুরক্ষা

By

Published : Apr 24, 2020, 7:12 AM IST

স্বাধীন ভারতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা ক্ষুধা ও অসুস্থতা, দারিদ্রের এই যমজ সন্তানকে অবলুপ্ত করার লক্ষ্য নিয়েছিলেন ৷ স্বাধীনতার পর সাত দশক পেরিয়ে গেলেও গ্লোবাল হেলথ ইনডেক্সের বিচারে ভারতের স্থান 117টি দেশের মধ্যে 102 নম্বরে ৷ COVID-19 প্যানডেমিক দিনমজুর ও অভিবাসী শ্রমিকদের অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ৷ সংক্রমণ রুখতে দেশব্যাপী লকডাউন, জনসংখ্যার এই অংশের জন্য মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করছে ৷ যেহেতু নির্মাণ, উৎপাদন এবং কৃষি কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাই এই শ্রমিকরা কোরোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগেই অনাহারে মারা যেতে পারে ৷ প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে 81 কোটি অভাবী মানুষের কাছে খাদ্যশস্য সরবরাহ করার কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র । উপভোক্তাদের ছয় মাসের খাদ্যশস্য একসঙ্গে সংগ্রহ করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে ৷ সংকটজনক পরিস্থিতিতে সরকার তাদের প্রত্যেককে অতিরিক্ত দুই কিলো খাদ্যশস্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত । যদিও এই প্রকল্প প্রশংসনীয় ৷ তবে যাঁরা জীবিকার সন্ধানে ভিনরাজ্যে গিয়েছেন, সেই সমস্ত রেশন কার্ডধারীদের কী হবে? যখন এক দেশ, একটি রেশন কার্ড প্রকল্প চালু করার চেষ্টা চলছে, ঠিক তখনই অতর্কিতে হানা দিয়েছে কোরোনা ভাইরাস ৷ আর তার জেরে বিপন্ন হয়ে উঠেছে দরিদ্র ও গৃহহীনদের জীবন ৷ অন্যদিকে লাখ লাখ দরিদ্র পরিবার রয়েছে, যাঁদের রেশন কার্ড নেই । দরিদ্র মানুষ যে রাজ্যেরই বাসিন্দা হোন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির উচিত সকলের জন্য খাদ্যশস্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা ৷

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং কর্নাটকে আটকে পড়া অভিবাসী শ্রমিকদের 96 শতাংশ রেশন পাননি ৷ অন্যদিকে তাঁদের মধ্যে 70 শতাংশ জানেনই না যে, রাজ্য প্রশাসনের তরফে বিনামূল্যে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে । ভারতের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ জনসংখ্যাকে ভরতুকিযুক্ত খাদ্যশস্য সরবরাহ করার লক্ষ্যে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনটি পাশ করেছিল পূর্বতন UPA সরকার । 2011 সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে 121 কোটির মধ্যে প্রায় 80 কোটি জনগণ উপকৃত হয়েছেন ৷ এখন ভারতের জনসংখ্যা 137 কোটি ৷ এর মধ্যে 67 শতাংশের (92 কোটি) গণবণ্টন ব্যবস্থার আওতায় আসা উচিত ৷ শুধুমাত্র 81 কোটি মানুষের কাছে রেশন কার্ড রয়েছে ৷ যার মধ্যে বেশিরভাগই জাল । প্রশাসনিক গাফিলতিতে প্রকৃত উপভোক্তারা গণবণ্টনের সঠিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ কিন্তু এই প্যানডেমিকের সময় গণবণ্টন ব্যবস্থার কার্যকারিতা মূল্যায়নের সঠিক সময় নয় ৷ পাঁচ লাখ রেশন কেন্দ্রে এক বছরের খাদ্যশস্য সরবরাহ করার জন্য গুদামগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সামগ্রী মজুদ রয়েছে । শীঘ্রই রবি শস্যের পণ্য বাজারে চলে আসবে ৷ এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, কেরল, রাজস্থান, কর্নাটক এবং পঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলি দিনমজুর ও অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য নিখরচায় খাবার বিতরণ করছে । আপাতদৃষ্টিতে রাজ্যগুলিকে রেশন বা আধার কার্ড নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ, যাঁদের প্রয়োজন রয়েছে, তাঁদের খাদ্যশস্য সরবরাহ করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র । গুদামগুলিতে প্রচুর পরিমাণে সামগ্রী মজুত থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশ রাজ জনগণের কাছে খাদ্যশস্য পৌঁছে দেয়নি ৷ যার ফলে 1943 সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল ৷ এই মর্মান্তিক অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে COVID-19 এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় আমাদের সকলের জন্য খাবার সুনিশ্চিত করতে হবে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details