পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

Covid-19-র সময় ত্রাতা MGNREGA ও কৃষি

প্রতিবেদনটি লিখেছেন এস মহেন্দ্র দেব ৷ তিনি মুম্বইয়ের ইন্দিরা গান্ধি ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের (IGIDR) উপাচার্য ৷

MGNREGA
প্রতীকি ছবি

By

Published : Aug 15, 2020, 8:34 PM IST

আজ, ভারতের জন্য একটা অস্বাভাবিক স্বাধীনতা দিবস ৷ কোরোনা ভাইরাস এখনও দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে ৷ একই ভাবে বাকি বিশ্বেও এই প্যানডেমিক জীবন ও জীবনযাত্রার উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে ৷ দুইটি কারণে অর্থনৈতিক আঘাত ভারতে অনেকটাই বেশি ৷ প্রথমত, Covid-19-র পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে থেকেই ভারতের অর্থনীতির গতি কমতে শুরু করেছিল ৷ এটা 2017-18 অর্থবর্ষের Q4-এ ছিল 8.1 শতাংশ ৷ আর 2019-20 অর্থবর্ষের Q4-এ তা নেমে দাঁড়ায় 3.1 শতাংশে ৷ এর সঙ্গে ছিল বেকারত্ব, কম রোজগার, গ্রামীণ যন্ত্রণা এবং বহু বিস্তৃত অসাম্যের সমস্যা ৷ দ্বিতীয়ত, ভারতের বড় অসংগঠিত ক্ষেত্র বিশেষ ভাবে দুর্বল ৷

প্যানডেমিকের জন্য শ্রমিকদের বাজারে একটা নজিরবিহীন সংকট নেমে এসেছিল ৷ লকডাউনের জন্য কার্যত সমস্ত অর্থনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ তবে যাঁরা পিরামিডের একেবারে নিচের স্তরে ছিলেন, বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা, তাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৷ প্যানডেমিকের জন্য অসংগঠিত ক্ষেত্রের একটা বড় অংশের মানুষ কাজ হারিয়েছেন এবং রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন ৷ বেকারত্ব চলতি বছরের মার্চে ছিল 8.4 শতাংশ ৷ সেখান থেকে 2020 সালের এপ্রিল-মে মাসে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে 27 শতাংশ ৷ 122 মিলিয়ন লোক চাকরি খুইয়েছেন ৷ এর মধ্যে ছোটো ব্যবসায়ী ও চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকরা (যাঁরা দৈনিক মজুরি পান) রয়েছেন, যাঁদের 91 মিলিয়ন কর্মহীন হয়েছেন ৷

জুন মাস থেকে আনলকডাউন করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কিছুটা হলেও দেশের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে ৷ কিন্তু ভারতের কিছু অংশ এখনও লকডাউনের আওতার মধ্যে রয়েছে ৷ এই প্যানডেমিক কতদিন স্থায়ী হবে এবং এটা কতটা ছড়িয়ে পড়বে, তা এখনও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না ৷ গ্রামীণ অর্থনীতির কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷ কারণ, মোট জনসংখ্যা ও কর্মী সংখ্যার 70 শতাংশই গ্রামে থাকেন ৷ তাঁদের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া খুবই জরুরি ৷ কারণ, তাহলেই পুরো অর্থনীতির পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা বৃদ্ধি পাবে ৷

Covid-19-র খারাপ প্রভাব শহরে এলাকায় যতটা পড়েছে, গ্রামীণ এলাকায় তা অনেকটাই কম ৷ লকডাউনের পর গ্রামীণ অর্থনীতি ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলেও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে ৷ এখন ভারতীয় অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রের কাজ ৷ FY 21-এ কৃষিজ GDP 2.5 থেকে 3 শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে ৷ সেখানে সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে GDP 5 থেকে 8 শতাংশ কমে যেত পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ এই বছর স্বাভাবিক বর্ষা হওয়ায় ভারতে খরিফ ও রবিশস্যের ফলন দারুণ হবে ৷ যদিও দারুণ ফলন কৃষিক্ষেত্রে দাম কমিয়ে দিতে পারে ৷ কৃষকরা যাতে আরও বেশি দাম পান, তার জন্য সরবরাহের ব্যবস্থা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে ৷

গ্রামীণ এলাকার একমাত্র অংশ হল কৃষিক্ষেত্র ৷ কৃষিজ নয়, এমন ক্ষেত্রগুলি বছরের পর বছর ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ গ্রামীণ এলাকায় FMCG, ট্র্যাক্টর, দুই চাকার গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ যদি গ্রামীণ এলাকার এই ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি লকডাউনের পরই আচমকা গতি পেয়েছে ৷ কম টাকা, কম গ্রামীণ মজুরি ও রোজগারের জেরে এই চাহিদা বেশি দিন স্থায়ী নাও হতে পারে ৷

40 থেকে 50 মিলিয়ন পরিযায়ী শ্রমিক উলটো পথে ঘরের ফেরার মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় ফিরে এসেছেন ৷ এই পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্যান্য গ্রামীণ কর্মীদের অবশ্যই কাজ দিতে হবে ৷ সরকারি কাজকে কর্মীদের সুরক্ষা-জাল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে ৷ ভারতে সেই চতুর্দশ শতক BC-তে যখন কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্র লিখেছিলেন, তখন থেকেই মানুষকে সুরাহা দেওয়ার কাজের উপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ মহাত্মা গান্ধি জাতীয় কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ যোজনা (MGNREGA)-এর মাধ্যমে Covid 19-এর সময়কালে এই কর্মীদের জন্য রক্ষাকবচ হয়ে উঠতে পারে ৷ NREGA-এর দ্বিতীয় একটি সুবিধা রয়েছে ৷ এর মধ্যে রয়েছে কৃষিজ সম্পদ তৈরি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, মহিলাদের আরও অংশগ্রহণ, প্রান্তিক অংশকে সাহায্য করা, পরিযায়ী হওয়া থেকে এলাকার মানুষকে ঠেকানো, পঞ্চায়েতকে অন্তর্ভুক্ত করা ইত্যাদি৷ ইন্দিরা গান্ধি ইনস্টিটিউট অফ ডেভলপমেন্ট রিসার্চের (IGIDR) তরফে একটি সমীক্ষা করা হয়৷ তাতে দেখা গিয়েছে যে মহারাষ্ট্রে যতটা কাজ হয়েছে, তার 87 শতাংশ ক্ষেত্রে সম্পদ তৈরি হয়েছে৷ আর NREGA-এর মাধ্যমে মোট কাজের 75 শতাংশ ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কৃষি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে ৷ যাঁদের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়, তাঁদের মধ্যে 90 শতাংশই জানিয়েছেন যে এই প্রকল্পে কার্যকরী কাজ হয়েছে ৷

গত কয়েকমাসে লকডাউন ও কাজ চলে যাওয়ার কারণে MGNREGA প্রকল্পে কাজ করার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ এপ্রিল থেকে অগাস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় 170 টি কর্মদিবস সৃষ্টি করা গিয়েছে ৷ এর সঙ্গে 2019-20 আর্থিক বছরের তুলনা করলে দেখা যাবে যে সব মিলিয়ে 265টি কর্মদিবস তৈরি করা গিয়েছিল ৷ অন্যভাবেও এটাকে ব্যাখ্যা করা যায় ৷ আর তা হল, চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে চলতি বছরের এই কয়েক মাসেই গত বছরের মোট কর্মদিবসের মধ্যে 64 শতাংশ তৈরি করা হয়ে গিয়েছে ৷ তেলাঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে 2019-20 আর্থিক বছরে 365 দিনের কর্মদিবস তৈরি করা হয়েছিল ৷ সেই তুলনায় ওই দুই রাজ্যে এবার যথাক্রমে 106 শতাংশ ও 96 শতাংশ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে ৷ NGREA-এর এই অগ্রগতি প্রমাণ করছে যে কাজের সুযোগের অভাবেই গ্রামের বাসিন্দারা এই কাজ আরও অনেক বেশি করার চেষ্টা করছে৷ এখনও পর্যন্ত এই যোজনার অধীনে 4.8 লাখ পরিবার তাঁদের 100 দিনের কাজ শেষ করে ফেলেছে ৷ FY21-এ MGNREGA প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে মোট ১ লাখ কোটি টাকা ৷ এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়ে গিয়েছে 48 হাজার কোটি টাকা ৷

কিন্তু MGNREGA প্রকল্প নিয়ে কিছু সমস্যাও রয়েছে ৷ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে রিপোর্ট দেওয়ার সময় গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রকের একজন আধিকারিক বলেন যে চলতি আর্থিক বছরে আমাদের কাছে NREGA প্রকল্পে খুব কম টাকাই পড়ে রয়েছে ৷ এই নিয়ে আজিম প্রেমজি ফাউন্ডেশনের তরফে একটি সমীক্ষা করা হয় ৷ তাতে দেখা গিয়েছে যে দেশের বড় অংশের গ্রাম পঞ্চায়েতে NREGA প্রকল্পের পুরো টাকা ইতিমধ্যেই খরচ করা হয়ে গিয়েছে ৷ পঞ্চায়েতগুলি 2020 সালের অগাস্টের মধ্যেই সমস্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করে দেবে ৷ ওই ফাউন্ডেশনের সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে MGNREGA প্রকল্পের চাহিদা FY21-এর শেষ পর্যন্ত অনেক থাকবে ৷ তবে খরিফ শস্যের মরসুমে তা কিছুটা হলেও কমতে পারে৷ তাদের তরফে এই প্রকল্পের বরাদ্দ ১ লাখ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে 2 লাখ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ৷ একই সঙ্গে এও প্রস্তাব করা হয়েছে যে যাতে কর্মদিবসের সংখ্যা পরিবার পিছু বৃদ্ধি করে 200 দিন করা হয় ৷

শ্রমিকদের জীবিকা ও আয়ের সহায়তার বিষয়টিকে মাথায় রেখে একটি সমীক্ষা করেন RBI-এর প্রাক্তন গভর্নর ও বর্তমানে লেখক সি রঙ্গরাজন ৷ তিনি সেখানে MGNREGA প্রকল্পে কর্মদিবসের সংখ্যা বৃদ্ধি করে 150 দিন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ এই সমীক্ষার পর শহরাঞ্চলেও সুনিশ্চিত কর্মসংস্থান প্রকল্প চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ৷ তার নকশা MGNREGA থেকে কিছুটা বদল করতে হবে ৷ শহরাঞ্চলে দক্ষ এবং কমদক্ষ, এমন উভয় শ্রেণির শ্রমিককেই কর্মসংস্থান দেওয়া যেতে পারে ৷ কারণ, এই ধরনের শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে । গ্রামীণ ও শহর উভয় অঞ্চলে 150 দিনের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে 2.48 লাখ কোটি টাকা ৷ যা মোট GDP-এর 1.22 শতাংশ ৷ গ্রামীণ ও শহর উভয় ক্ষেত্রেই কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পে অর্থ খরচ করার জন্য সরকারকে তার দায়িত্ব নিতে হবে ৷

গ্রাম পঞ্চায়েতের দ্বারা এখনই জরুরি ভিত্তিতে কিছু প্রকল্প নেওয়া উচিত ৷ রাজ্য সরকারগুলি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রতিটি গ্রামে সরকারি কাজ চালু হয় ৷ কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয় হওয়া উচিত । রাজ্য সরকারগুলিকে সরবরাহ-চালিত যোজনার মতো এই প্রকল্পের প্রয়োগের কাজ শুরু করতে হবে ৷ এটা আইন দ্বারা সমর্থিত চাহিদা অনুযায়ী সুনিশ্চিতকরণ হিসেবে চালিয়ে যেতে হবে ৷

পুরো দেশ দেখেছে যে কীভাবে পরিযায়ী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে গ্রামে ফিরেছে ৷ এই পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকেই MGNREGA প্রকল্পে কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ এর সঙ্গে রয়েছে অটো শ্রমিক, গাড়ি চালক, রং মিস্ত্রি, ছুতোরের মতো দক্ষ শ্রমিক ৷ তাদের জন্য আধা দক্ষ এবং দক্ষ কাজ সরবরাহ করতে হতে পারে । দেশ এটাও দেখেছে যে এই প্যানডেমিকের মধ্যে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক MGNREGA প্রকল্পে কাজ শুরু করেছে ৷ এই চূড়ান্ত সংকটের সময়ে কর্মহীন পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্য শ্রমিকদের জন্য MGNREGA প্রকল্প যে আশার আলো দেখিয়েছে, তা এই প্রকল্পের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে ৷

MGNREGA-কে জোরদার করা ছাড়াও কৃষি ও গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার । প্রথমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করতে হবে । MSP বৃদ্ধি করা হয়ত জরুরি ৷ কিন্তু মূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরবরাহ সংক্রান্ত ব্যবস্থাগুলি ফের সক্রিয় করে তোলা প্রয়োজন । আত্মনির্ভর প্রকল্পের অধীনে মধ্য মেয়াদে কৃষি বিপণনের সংস্কারে সহায়তা করার ঘোষণা করা হয়েছে । তবে সরকারকে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়-সহ এই সংস্কারগুলি নিয়ে আরও স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে ।

দ্বিতীয়ত, কৃষির রপ্তানিকে আরও বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে ৷ প্রচারের আলোয়া নিয়ে আসতে হবে ৷ রপ্তানি এবং ভবিষ্যতের বাজারের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী ধারাবাহিক নীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন । আত্মনির্ভর মানে আমাদের আত্মবিশ্বাসী হতে হবে । ভারত খুব সীমিত পরিমাণে ফল এবং শাকসবজি প্রক্রিয়াজাত করে । এই দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকে বড় আকারে করতে হবে ৷

তৃতীয়ত, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ১ লাখ কোটি টাকার কৃষি পরিকাঠামো তহবিলের সূচনা করেছেন ৷ তবে, কেন্দ্র চার বছরে পুরো পরিমাণ অর্থ খরচ করার লক্ষ্য নিয়েছে । চলতি অর্থ বছরের জন্য মাত্র 10,000 টাকা অনুমোদিত হয়েছে । কর্মসংস্থান ও মজুরি বৃদ্ধির জন্য গ্রামীণ পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ জরুরি । আমাদের কৃষিকাজের বাইরে গিয়ে গুদাম ফসল রাখার ব্যবস্থা করা, রসদ সরবরাহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং খুচরা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে হবে । কৃষি পরিকাঠামো তহবিল মূল্য সরবরাহকে তুলে ধরতে দরকারি হবে । এতে কৃষকদের আরও ভালো আয় হবে । একইভাবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ মজুরি বৃদ্ধির জন্য গ্রামে নির্মাণ কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । 2004-05 এবং 2011-12 আর্থিক বছরে গ্রামে নির্মাণ কাজ গ্রামীণ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ।

চতুর্থত, MSME-গুলির প্রায় 51 শতাংশ গ্রামীণ অঞ্চলে অবস্থিত । Covid-19 বড় আঘাত নিয়ে এসেছে MSME-গুলির জন্য ৷ যদিও তারা আগে থেকেই NBFC সংক্রান্ত অনেক সমস্যার মধ্যেই পড়েছিল ৷ গ্রামীণ এলাকায় MSME-গুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে । চিন সংক্রান্ত যে ফাঁকা জায়গাটি তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করার সুযোগও রয়েছে ৷ গতিশীল MSME ছাড়া ভারত আত্মনির্ভর হতে পারবে না ৷

শেষ পর্যন্ত, কৃষিক্ষেত্র ও কৃষির সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ক্ষেত্রের সংযুক্তিকরণ, গ্রাম ও শহরের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । একইভাবে শহরে আর্থিক উদ্দীপনা তৈরি করা, কর্পোরেট সেক্টর এবং ব্যাঙ্কগুলির দ্বিগুণ ব্যালান্স শিট সমস্যার সমাধান করতে পারলে গ্রাম ও শহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে গ্রামীণ অঞ্চলে উন্নতিতে সাহায্য করা যাবে ৷

উপসংহারে বলা যেতে পারে যে, যেহেতু কর্মসংস্থানের উপর Covid-19-র খারাপ প্রভাব 2020-21 আর্থিক বছরের শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হবে, তাই অনেক সমস্যার সমাধানের সেরা উপায় হতে চলেছে MGNREGA ৷ সরকারের আরও তহবিলের বরাদ্দ করতে হবে ৷ তৃণমূল স্তরে প্রকল্পের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে ৷ আর কার্যকর ভাবে তার প্রয়োগ করতে হবে ৷ পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্য শ্রমিকদের জন্য MGNREGA প্রকল্প কার্যত সহায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ একই ভাবে, উৎপাদন ও পরিষেবা সংক্রান্ত দিকগুলি অবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে ৷ কৃষিক্ষেত্র দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করবে বলেই মনে হচ্ছে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details